এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়ে সন্ত্রাসবাদ নিয়ে পাকিস্তানকে স্পষ্ট বার্তা দিলেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বুধবার সকালে এসসিও মঞ্চ থেকে তিনি আন্তর্জাতিক সীমান্তে জঙ্গি কার্যকলাপ নিয়ে কড়া বার্তা দেন। এদিন তিনি জানিয়ে দেন, ভারত-পাকিস্তান আন্তর্জাতিক সীমান্তে জঙ্গি কার্যকলাপ চললে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক ভালো হওয়া সম্ভব নয়।
বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বুধবার সাংহাই কো-অপারেশন অর্গানাইজেশন শীর্ষ সম্মেলনে পাকিস্তানকে কটাক্ষ করেন। তিনি এদিন বলেন যে দুই দেশের মধ্যে আন্তঃসীমান্ত জঙ্গি কার্যকলাপ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, ‘সন্ত্রাসবাদ, বিচ্ছিন্নতাবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে লড়াই বর্তমান সময়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ।’ তিনি উল্লেখ করেছেন যে, বিশ্বায়ন এবং ভারসাম্য বর্তমান সময়ের বাস্তবতা এবং এসসিও দেশগুলিকে এটিকে এগিয়ে নিতে হবে।
Advertisement
সন্ত্রাসবাদী হামলা, বিভাজনবাদ, এবং চরমপন্থী কাজকর্মের জন্য পাকিস্তানের সঙ্গে বাণিজ্য, শক্তি, ও যোগাযোগের মতো ক্ষেত্রগুলিতে ভারতের সম্পর্ক উন্নত হবে না বলে স্পষ্ট জানান জয়শঙ্কর। তিনি বলেন, দুই দেশের আঞ্চলিক অখণ্ডতা এবং সার্বভৌমত্বকে স্বীকৃতি দিতে হবে। জয়শঙ্কর তাঁর বক্তৃতায় বলেন, পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকলে তবেই সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। তিনি মনে করেন, বিশ্বাস হল একে অপরের প্রতি সহযোগিতার চাবিকাঠি। তিনি বলেন, ‘এটা স্বতঃসিদ্ধ যে উন্নয়ন এবং অগ্রগতির জন্য শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রয়োজন।’
Advertisement
জয়শঙ্কর বলেন, ‘নির্ভেজাল অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে ওঠা উচিত, কোনও এক পক্ষের সুবিধের উপর নির্ভর করে নয়।’ এসসিও বৈঠকে চিনকেও কটাক্ষ করেন তিনি। তিনি বলেন ,’ আমরা যদি পছন্দমতো ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্র বাছাই করে নিই , তবে সামগ্রিক উন্নতি সম্ভব নয়।’
এসসিও শীর্ষ সম্মেলনের জন্য পাকিস্তানের রাজধানীতে রয়েছেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। দীর্ঘ ৯ বছর পর ভারতের বিদেশমন্ত্রী হিসেবে মঙ্গলবার ইসলামাবাদে পা রেখেছেন এস জয়শঙ্কর। সাংঘাই কোঅপারেশন অর্গানাইজেশনের সম্মেলনে যোগ দিতে মঙ্গলবার তিনি ইসলামাবাদে পৌঁছন। মঙ্গলবার রাতেই এসসিও সম্মেলনের জন্য আসা অতিথিদের জন্য পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ নিজের বাসভবনে নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন। সেখানেই পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ হয় ভারতের বিদেশমন্ত্রীর। সেখানে পাক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে করমর্দন ও শুভেচ্ছা বিনিময় করেন তিনি । বুধবার সকালে ইসলামাবাদে ভারতীয় কূটনীতিকদের প্রাতঃভ্রমণ করেন জয়শঙ্কর। ভারতীয় হাইকমিশনের প্রাঙ্গনে একটি চারাগাছও রোপণ করেন তিনি।
জয়শঙ্কর বুধবার জিন্নাহ কনভেনশন সেন্টারে অনুষ্ঠিত এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে ভারতের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। এসসিও সম্মেলনে জয়শঙ্করের পাকিস্তানের সঙ্গে কোনও দ্বিপাক্ষিক আলোচনার পরিকল্পনা নেই বলে প্রাথমিক সূত্রে খবর। কারণ পাকিস্তান থেকে উদ্ভূত আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদের কারণে দুই প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এখন শীতল বলা চলে ।
পাকিস্তান সফরে শেষ বিদেশমন্ত্রী ছিলেন সুষমা স্বরাজ। শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানকারী এসসিও সদস্য দেশগুলোর অন্যান্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন চিনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী রোমান গোলভচেঙ্কো, কাজাখস্তানের প্রধানমন্ত্রী ওলজাস বেকতেনভ, রাশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিশুস্টিন, তাজিকের প্রধানমন্ত্রী কোহির রসুলজোদা, উজবেকের প্রধানমন্ত্রী আবদুল্লাহ আরিপভ, কিরগিজস্তানের মন্ত্রিসভার চেয়ারম্যান জাপারভ আকিলবেক এবং ইরানের প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মহাম্মদ রেজা আরেফ।
Advertisement



