• facebook
  • twitter
Monday, 12 May, 2025

প্রত্যাঘাত হানতে তৈরি ভারত রাশিয়ার ইঙ্গিতে আতঙ্কে পাকিস্তান

ভারতের এই পদক্ষেপে পাকিস্তানের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারতকে। তাদের বক্তব্য, নদীর জল বন্ধ করা হলে তাকে যুদ্ধ হিসেবেই গণ্য করবে পাকিস্তান।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

পহেলগামে জঙ্গি হামলার পর জল, স্থল এবং আকাশেও লাগাতার মহড়া শুরু করেছে ভারত। এই প্রসঙ্গে রাশিয়া স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছে যে, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারত বড় কোনও পদক্ষেপ নিতে চলেছে। এছাড়াও রাশিয়ার নাগরিকদের জন্যও বিশেষ এডভাইসরি জারি করেছে ইসলামাবাদের মস্কো দূতাবাস। আপাতত রাশিয়ার নাগরিকদের পাকিস্তান যেতে নিষেধ করেছে মস্কো। শুধু তাই নয়, ক্রেমলিন দূতাবাসের এক এক্স হ্যান্ডেলে পাকিস্তানে থাকা নাগরিকদের দ্রুত দেশে ফেরার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। তবে এই ধরনের কোনও আদেশনামা অবশ্য জারি করেনি দিল্লিতে অবস্থিত মস্কো দূতাবাস।

গত ২২ এপ্রিল, মঙ্গলবার ভারতের পহেলগামে জঙ্গি হামলার খবর এবং রাতে ২৬ জনের মৃত্যু সংবাদ পেয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন শোকবার্তা পাঠিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু ও প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তাতে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে ভারতের সঙ্গে সবরকম সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তিনি জানিয়েছিলেন, এই লড়াইয়ে ভারতের সঙ্গে তারা আরও শক্তিশালী যোগাযোগ বজায় রেখে চলবেন।

এদিকে এই হামলার পর পাকিস্তানের সঙ্গে ৬৫ বছরের পুরনো সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত রেখেছে ভারত। কিন্তু তারপরই পাকিস্তানকে না জানিয়ে ঝিলম নদির জল ছাড়ার অভিযোগ উঠেছে ভারতের বিরুদ্ধে। এই জল ছাড়ার কারণে পাকিস্তান এবং পাক অধিকৃত কাশ্মীরের বিস্তীর্ণ এলাকা জলপ্লাবিত হওয়ার খবর ছড়িয়েছে। পাকিস্তান অভিযোগ তুলেছে, কোনওরকম ঘোষণা না করেই উরি বাঁধের জল ছেড়েছে ভারত। ফলে তারা প্রস্তুতি নেওয়ার সুযোগ পায়নি। ভারতের এই পদক্ষেপকে জল সন্ত্রাস বলে অভিহিত করেছে পাকিস্তান। উল্লেখ করা যেতে পারে, ৬৫ বছর আগের এই চুক্তি অনুযায়ী, এতদিন পাকিস্তানকে জানিয়ে জল ছাড়তে পারতো ভারত। কিন্তু এখন ভারত সেই চুক্তি স্থগিত রাখায় তার আর কোনও প্রয়োজনীয়তা দেখছে না দিল্লি। এছাড়াও সিন্ধু ও তার পাঁচটি উপনদীর উপর জলবিদ্যুৎ নির্মাণের জন্য যেকোনও কাজ করতে পারে ভারত। এর ফলে পাকিস্তানে জলসঙ্কট দেখা দিতে পারে বলে বিশ্লেষকদের ধারনা।

অন্যদিকে ভারতের এই পদক্ষেপে পাকিস্তানের সরকার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ভারতকে। তাদের বক্তব্য, নদীর জল বন্ধ করা হলে তাকে যুদ্ধ হিসেবেই গণ্য করবে পাকিস্তান। শুধু তাই নয়, পাকিস্তানের মন্ত্রী হানিফ আব্বাসি বলেছেন, তাঁরা ১৩০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভারতের দিকে তাকে করে রেখেছেন। প্রয়োজনে তাঁরা ভারতকে চরম শিক্ষা দেবেন। পাকিস্তানের এই হুমকিকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে নারাজ ভারত। ইতিমধ্যেই যুদ্ধ জাহাজ নিয়ে ধ্বংসকারী মহড়া চালাচ্ছে ভারতের নৌবাহিনী। আরব সমুদ্রে পরমাণু অস্ত্রে সজ্জিত দুটি সাবমেরিন নামিয়েছে ভারত। এরকম খবর পাওয়া গিয়েছে। পাশাপাশি, রাজস্থানের মরুভূমিতেও ট্যাঙ্ক বাহিনীর যুদ্ধের মহড়া চালাচ্ছে ভারতীয় সেনা বাহিনী। সেই সঙ্গে ভারতীয় বিমানবাহিনীও শুরু করেছে মহড়া। রাফায়েল যুদ্ধ বিমান দিয়ে দেশের পশ্চিম সীমান্তকে ঘিরে রাখা হয়েছে।

পাকিস্তানও যথেষ্ট সক্রিয় হয়ে উঠেছে বলে সংবাদ সংস্থা সূত্রের খবর। ভারত প্রত্যাঘাত হানতে পারে, সেই আতঙ্কে তাদের সীমান্তে অতিরিক্ত সেনা জমায়েত শুরু করেছে পাকিস্তান। সেই সঙ্গে এফ-১৬ যুদ্ধ বিমানকে তারা সীমান্ত এলাকায় মোতায়েন করেছে।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিনের মতোই জঙ্গি দমনে সমর্থন জানিয়েছে ভারতকে। ট্রাম্পের বক্তব্যে কিছুটা ধোঁয়াশা থাকলেও ভারতের উপর জঙ্গি হামলাকে যে তিনি কোনোভাবেই সমর্থন করছেন না, তা স্পষ্ট। পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমেরিকা, রাশিয়া ও ভারত আরও কাছাকাছি আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।