• facebook
  • twitter
Monday, 12 May, 2025

শেখ হাসিনার বাসভবন সুধা সদনে ঘন্টার পর ঘন্টা জ্বলছে আগুন

খবর পেয়েও নিরাপত্তার অভাবে গেল না দমকল

ফাইল চিত্র

 রোষানল থেকে বাদ গেল না বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাড়িও। ধানমন্ডির ৫ নম্বর রোডে অবস্থিত হাসিনার বাসভবন সুধা সদন। বঙ্গবন্ধুর বাড়িতে তাণ্ডব চালানোর পাশাপাশি বুধবার রাতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় সুধা সদনেও। বুধবার ১১টা নাগাদ ধানমন্ডি ৫ নম্বর রোডের সুধা সদনে অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে। বৃহস্পতিবার সকালেও সেই আগুন জ্বলতে দেখা যায়। বাড়িটি আগুনে পুড়ছে খবর পাওয়ার পরও নিরাপত্তার অভাবে সেখানে পৌঁছয়নি দমকল বিভাগ।

বাংলাদেশের প্রথম সারির এক সংবাদপত্রের তরফে বৃহস্পতিবার সকালে দমকল বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল। সেখানে দমকলের এক কর্মকর্তা ওই সংবাদমাধ্যমHasকে জানান, ‘সুধা সদনে আগুন লাগার খবর আমরা পেয়েছি বুধবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ। কিন্তু আমাদের নিরাপত্তা ছিল না। ওখানে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ছিল না। তাই আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি।’
 
ধানমন্ডি সোসাইটির নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, বুধবার রাত সাড়ে দশটার পর ১০ থেকে ১২ জন এসং সুধা সদনে আগুন ধরিয়ে দেয়। বাড়িতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে বিদ্যুত ও গ্যাসের লোকেরা এসে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। পরে আশেপাশের বাসিন্দারা গিয়ে নিচতলার আগুন কিছুটা নিয়ন্ত্রণ করেন। রাত ১২ টার পরও এই বাড়ির দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ তলার বিভিন্ন ঘরে আগুনের শিখা দেখা যায়। 
বৃহস্পতিবার সকাল থেকেও সুধা সদনের বাইরে ছিল উৎসুক জনতার ভিড়। দোতলায়  আগুন ধিকিধিকি জ্বলছে বলে দাবি প্রত্যক্ষদর্শীদের। বুধবার রাতে ওই বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হলে স্থানীয় বাসিন্দারা জল দিয়ে নীচের তলার আগুন নেভান। কিন্তু পুরো বাড়ির আগুন নেভানো সম্ভব হয়নি। পুড়ে গিয়েছে সুধা সদনের অধিকাংশ দরজা, জানলা। পুড়ে ছাই হয়েছে বইপত্র ছাড়াও লেপ, তোশক, কম্বল। পুড়ে গিয়েছে ফ্রিজ, সোফা-সহ অন্য আসবাবপত্রও।

বাংলাদেশবাসীর উদ্দেশে ভার্চুয়াল মাধ্যমে বুধবার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভাষণ দেবেন বলে আগে থেকে ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ ও ছাত্র লীগ। তা নিয়ে হাসিনা-বিরোধীদের ক্ষোভ পুঞ্জীভূত হচ্ছিল। রাতে ভাষণ শুরুর আগেই সেই রোষ গিয়ে পড়ে ৩২ নম্বর ধানমন্ডির বাড়িতে। সমাজমাধ্যমে ডাক দেওয়া হয়, ‘মার্চ টু ধানমন্ডি ৩২’ কর্মসূচির। এর পর মুজিবের বাড়িতে তাণ্ডব, ভাঙচুর চালায় জনতা। অগ্নিসংযোগ করা হয়।এরপরেই বিরোধীদের আক্রমণের লক্ষ্য হয়ে ওঠে সুধা সদন।  বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত আগুন জ্বললেও হামলার আশঙ্কায় তা নেভাতে যাননি দমকলকর্মীরা। 

বুধবার রাত থেকেই হাসিনা-বিরোধী রোষ ছড়িয়ে পড়কে শুরু করে। খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় ভেঙে দেওয়া হয় হাসিনার কাকার বাড়ি ‘শেখ বাড়ি’। বুধবার রাতে ২টি বুলডোজার দিয়ে বাড়িটি গুঁড়িয়ে দেওয়া শুরু হয়। কুষ্টিয়ায় বুলডোজার চলে প্রাক্তন আওয়ামী লীগ সাংসদ মাহবুব উল আলম হানিফের বাড়িতে। মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আক্রমণকারীদের দাবি, আওয়ামী লীগকে ‘নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করতে হবে।

রাজধানী ঢাকা থেকে কিছুটা দূরে সাভারের জাহাঙ্গিরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বুধবার রাতে বঙ্গবন্ধু মুজিবুর রহমান এবং হাসিনার ম্যুরাল ভেঙে দেন একদল বিক্ষোভকারী। সেখানকার আল বেরুনী হলের দেয়ালে আঁকা বঙ্গবন্ধুর গ্রাফিতিও রং দিয়ে মুছে দেওয়া হয়।