• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

হাসিনার ফাঁসির সাজা ঘোষণার পর উত্তাল বাংলাদেশ, থানায় বোমাবাজি, জখম পুলিশ

ঢাকা এবং বরিশালে কমপক্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর

শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের ঘোষণার পর থেকেই উত্তাল বাংলাদেশ। দফায় দফায় উত্তেজনা ছড়াচ্ছে সেখানে। বিভিন্ন জায়গায় গাড়িতে অগ্নিসংযোগ, বোমাবাজির অভিযোগ সামনে আসছে। থানাতেও বোমাবাজি করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঢাকা এবং বরিশালে কমপক্ষে দুই জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর।

বাংলাদেশের সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, সোমবার সন্ধ্যায় ঢাকার পল্লবী থানা এলাকায় বিএনপির যুব শাখা যুবদলের এক কর্মী খুন হয়েছেন বলে অভিযোগ। হেলমেটে মুখ ঢেকে তিনজন অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতী গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায় বলে অভিযোগ। পালানোর সময়ে  এক অটোচালককেও গুলি করে আততায়ীরা।

Advertisement

হাসিনার ফাঁসি সাজা ঘোষণার পরেই আনন্দে মেতে ওঠে অনেকেই। মিষ্টি বিলিকে কেন্দ্র করে বরিশালে সংঘর্ষ বাঁধে। সেই সংঘর্ষের জেরে মৃত্যু হয় বিনপির ছাত্র শাখা ছাত্রদলের এক কর্মী। স্থানীয় সূত্রের খবর, ছাত্রদলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে সংঘর্ষের জেরেই ঘটনাটি ঘটেছে।

Advertisement

সোমবার বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় কমপক্ষে আটটি গাড়িতে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর। দু’টি স্কুলভবনেও আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। ভারতীয় সময় রাত আড়াইটে নাগাদ নেত্রকোনায় দু’টি স্কুলে দুষ্কৃতীরা আগুন ধরিয়ে দেয় বলে খবর। একটি স্কুলে আগুন ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়। অন্যটিতে তিনটি শ্রেণিকক্ষ এবং শিক্ষকদের বসার ঘর পুড়ে গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

সোমবার সকাল থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষিপ্তভাবে অশান্তির খবর প্রকাশ্যে আসতে থাকে।  বিভিন্ন জায়গায় বাসে অগ্নিসংযোগ করা হয়। চট্টগ্রামে একটি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ সামনে এসেছে। সোমবার ঢাকাতেই অন্তত ছ’টি বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর।

সূত্রের খবর, সোমবার বিকেলে ঢাকার উত্তরায় একটি মিনিবাসে আগুন ধরিয়ে দেয় উত্তেজিত জনতা। বাসটি আওয়ামী লীগের প্রাক্তন সাংসদ হাবিব হাসানের ভাই নাদিম হাসানের ছিল বলে মনে করা হচ্ছে। এর পরে উত্তেজিত জনতা হাবিব এবং তাঁর ভাইয়ের বাড়িতেও চড়াও হতে উদ্যত হয়। তবে পুলিশ তাদের সেখান থেকে হটিয়ে দিয়েছে।

ভারতীয় সময় অনুসারে সোমবার রাত সাড়ে ৯টায় গোপালগঞ্জের এক থানায় ককটেল, এক ধরনের বোমা হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। ওই বিস্ফোরণে জখম হন থানার তিন পুলিশকর্মী। হাসিনার সাজার রায় সোমবার সরাসরি সম্প্রচারিত হয় বাংলাদেশে। ঢাকার বিভিন্ন প্রান্তে বসানো হয় জায়ান্ট স্ক্রিনও। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরেও বসে একটি জায়ান্ট স্ক্রিন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল পড়ুয়া ধানমন্ডি ৩২-এ যায়। বুলডোজার নিয়ে হাজির হয় পড়ুয়ারা। শেখ মুজিবুর রহমানের স্মৃতিবিজড়িত বাড়ির বাকি অংশও গুঁড়িয়ে দিতে উদ্যত হয়। পুলিশ তা ঠেকায়।

বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। নামানো হয় সেনা। পুলিশ এবং সেনাকর্মীদের লক্ষ্য করে ইট ছোঁড়ে বিক্ষুব্ধরা। পুলিশও পাল্টা লাঠিচার্জ করে। সাজা ঘোষণার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে ধানমন্ডি ৩২-এর সামনে ফাটানো হয় সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদানে গ্যাসের শেল। তাতেও পরিস্থিতি পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হয়নি। বিকেলের দিকে নামানো হয় আধাসেনা।

রাতেও নিরাপত্তাকর্মীদের সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়ান বিক্ষোভকারীরা। পরে রাতে ঢাকা পুলিশের ধানমন্ডি এলাকার অতিরিক্ত উপকমিশনার জিসানুল হক বাংলাদেশের এক প্রথম সারির সংবাদ মাধ্যমকে জানান, বিক্ষোভকারীদের ওই চত্বর থেকে সম্পূর্ণ ভাবে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। যান চলাচলও শুরু হয়েছে বলে জানান তিনি।

 

Advertisement