• facebook
  • twitter
Saturday, 14 December, 2024

লেবাননের পেজার বিস্ফোরণ কাণ্ডে নাম জড়াল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীর

যদিও, বুলগেরিয়ার জাতীয় সুরক্ষা সংস্থা এসএএনএস এই নিয়ে তদন্ত চালিয়ে জানিয়েছে, হোসে বা নর্টা গ্লোবালের পেজার বিস্ফোরণ কাণ্ডে কোনও সরাসরি যোগ নেই।

সম্প্রতি লেবাননে ঘটে যাওয়া পেজার-বিস্ফোরণ কাণ্ডে এবার নাম জড়াল ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যবসায়ীর! সূত্রের খবর, পেজারের সরবরাহ শৃঙ্খলে অন্তর্ঘাত ঘটানোর পিছনে হাত রয়েছে নর্টা গ্লোবাল নামক বুলগেরিয়ার এক সংস্থার, যার একমাত্র কর্ণধার ওই মালয়ালী ব্যবসায়ী রিনসন হোসে।

গত ১৭ সেপ্টেম্বর লেবাননের রাজধানী বেইরুট-সহ বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক পেজার বিস্ফোরণে কেঁপে ওঠে সারা দেশ। হেজবোল্লা সদস্যদের যোগাযোগের জন্য ব্যবহৃত এইসব পেজারের বিস্ফোরণে হত আন্দাজ ২০ জন এবং আহত প্রায় ৩ হাজার।

এই দুর্ঘটনার জন্য বিভিন্ন সংস্থাকে দায়ী করা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে, অনেক সংস্থার নাম এর পিছনে জড়িয়ে আছে। একটি বিশেষ সূত্র মারফৎ জানা গিয়েছে, বিএসি কনসাল্টিং নামক একটি হাঙ্গারির সংস্থা এই পেজারগুলোকে তৈরি করে। পেজারগুলোতে ট্রেডমার্ক রয়েছে গোল্ড অ্যাপোলো বলে তাইওয়ানের একটি ফার্মের। তবে, পেজারগুলো নর্টা গ্লোবালের মাধ্যমেই জোগাড় করা হয়ে বলেই খবর। অদ্ভুত সমাপতন, এই ঘটনার পর থেকে হোসেও বেপাত্তা। হাঙ্গেরির একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ‘বিএসি কনসাল্টিং-এর সঙ্গে কাগজে-কলমে গোল্ড অ্যাপোলোর কন্ট্রাক্ট হলেও আসল ডিল হয়েছিল নর্টা গ্লোবালের সঙ্গেই।’

যদিও, বুলগেরিয়ার জাতীয় সুরক্ষা সংস্থা এসএএনএস এই নিয়ে তদন্ত চালিয়ে জানিয়েছে, হোসে বা নর্টা গ্লোবালের পেজার বিস্ফোরণ কাণ্ডে কোনও সরাসরি যোগ নেই। তাদের বক্তব্য, ‘তদন্তের মাধ্যমে যাচাই করার পর তর্কাতীতভাবে এটাই প্রমাণিত হয়েছে, যে ১৭ সেপ্টেম্বরে বিস্ফোরিত হওয়া কোনও যোগাযোগব্যবস্থার সরঞ্জাম বুলগেরিয়াতে তৈরি হয়নি, আমদানি হয়নি বা এখান থেকে রপ্তানিও হয়নি।’

হোসে বর্তমানে নরওয়ের নাগরিক। পন্ডিচেরি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ এবং অসলো মেট্রোপলিটান বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সমাজোন্নয়ন এবং স্বাস্থ্যনীতিতে স্নাতকোত্তর করেছেন তিনি। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে নরওয়েতে সস্ত্রীক রয়েছেন হোসে।

হোসের পরিবারের সদস্যরা থাকেন কেরালার ওয়ানাড়ে। তাঁরা হোসের বিরুদ্ধে আসা অভিযোগ বিশ্বাস করতে অসম্মত। হোসের তুতো ভাই আজু জন জানান, ‘ও (হোসে) আমাকে কখনও জানায়নি যে বুলগেরিয়াতে ওর একটা কোম্পানি আছে বা ওর ওখানে কোনো ব্যবসা রয়েছে। আমরা এই ব্যাপারটা নিয়ে খুবই উদ্বিগ্ন, কারণ একটা সন্ত্রাসবাদী দলের উপর আক্রমণের ঘটনার সঙ্গে ওর নাম জড়িয়েছে।’

হোসের ‘লিঙ্কডইন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, গৎ দু’ বছর ধরে তিনি ডিএ মিডিয়া নামক একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত। এর পাশাপাশি ‘নর্টালিঙ্ক’ বলে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার কর্ণধারও তিনি। বিস্ফোরণে নাম জড়ানো নর্টা গ্লোবাল আসলে এই নর্টালিঙ্কেরই একটি ভুয়ো সংস্থা, এমনটাই সন্দেহ প্রকাশ করছেন গোয়েন্দারা।