বাংলাদেশে ট্রেনে আগুন, মৃত ৪, ভোট বন্ধ করতে মরিয়া বিরোধীরা

Written by Subhash Pal January 6, 2024 12:13 pm

ঢাকা, ৬ জানুয়ারি:  গতকাল রাতে বাংলাদেশের গোপীবাগে বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে ভয়াবহ আগুন। দুষ্কৃতীদের আগুনে ট্রেনের পাঁচটি বগি ঝলসে গিয়েছে। মৃত্যু হয়েছে চারজন যাত্রীর। এছাড়া আগুনে দগ্ধ হয়েছেন ৮ জন। তাঁদের সকলেরই অবস্থা আশঙ্কাজনক। তাঁদের সবারই শ্বাসনালী পুড়ে গিয়েছে। একজনের শরীরের ৯ শতাংশ পুড়েছে। তাঁদের প্রত্যেকে মানসিক ট্রমার মধ্যে রয়েছেন।

জানা গিয়েছে, গতকাল, শুক্রবার রাত ৯টা ৫ মিনিটে এই ঘটনা ঘটে। যদিও দোষীদের এখনও সনাক্ত করা যায়নি বলে ঢাকা ট্রিবিউন সূত্রের খবর। ঘটনার সময় খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে দমকলের ৭টি ইঞ্জিন। এমনটাই জানিয়েছেন সেখানকার দমকল পরিষেবা ও সিভিল ডিফেন্সের কর্তব্যরত অফিসার রাকিবুল হাসান। বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচনের দুই দিন আগে এই অগ্নিকান্ড নিয়ে সমগ্র বাংলাদেশে রাজনৈতিক জল্পনা ও আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে।

এই ঘটনা প্রসঙ্গে ঢাকা মেট্রোপলিটান পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মহিদ উদ্দিন অভিযোগ করেন, “বেনাপোল এক্সপ্রেস ট্রেনে আগুন আসলে একটি পরিকল্পিত নাশকতা। যদিও আমরা এখনও জানতে পারিনি, কে বা কারা এই অগ্নিসংযোগ ঘটিয়েছে। তবে নিশ্চিতভাবে বুঝতে পেরেছি, এটি নাশকতা ছাড়া আর কিছু নয়।” ওই পুলিশ কর্তা বলেন, “সাধারণ মানুষ, শিশু ও মহিলাদের ওপর এই ধরণের আক্রমণ চূড়ান্ত অমানবিক।”

তিনি আরও বলেন, যারা এই ধরণের ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা নিশ্চয় ট্রেনের যাত্রী সেজেই এসেছিল, এবং ঘটনার পর যাত্রীদের মধ্যেই গা ঢাকা দিয়েছে। হরতালের আগেই নাশকতার এমন চেষ্টার বিষয়ে তিনি বলেন, এর মাধ্যমে সাধারণ মানুষের মাঝে ভয় ছড়ানো হচ্ছে। সাধারণ মানুষের স্বাভাবিক জীবন বিঘ্নিত করতেই এই ঘটনা। একটি জীবন্ত মানুষকে পুড়িয়ে মারা পরিকল্পিত নাশকতা।

ঢাকা রেল পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর আশরাফ হোসেন বলেন, এদিন রাত ৯টা বেজে ৭ মিনিটে আমাদের জরুরি নাম্বার থেকে ট্রেনে আগুন লাগার খবর পায়। ঘটনার সময় পুলিশ আশঙ্কা করেছিল, জ্বলন্ত ট্রেনের মধ্যে যাত্রীরা আটকে থাকতে পারেন।

আগামী ৭ জানুয়ারি বাংলাদেশের সাধারণ নির্বাচন। তার আগে দেশজুড়ে চূড়ান্ত প্রতিরোধ গড়ে তুলতে চাইছে বিএনপি সহ অন্যান্য বিরোধী দলগুলি। বিএনপি এই সময়ে দেশজুড়ে হরতাল ডেকেছে। তার মধ্যেই ঘটে চলেছে একের পর এক বিক্ষিপ্ত হিংসার ঘটনা। ইতিমধ্যে খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলায় ভোটকেন্দ্র ভেবে একটি বিদ্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় বিদ্যালয়টির একটি কক্ষের দরজা পুড়ে গিয়েছে। অন্যদিকে রূপসা উপজেলার একটি ভোটকেন্দ্রে আগুন দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। গতকাল শুক্রবার রাতে কে বা কারা বিদ্যালয় দুটিতে আগুন দিয়েছে। এই ঘটনার প্রেক্ষিতে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিতর্ক বেড়েই চলেছে।

উল্লেখ্য, ২০১৪ সালের দশম জাতীয় নির্বাচনে সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতেই ভোটের প্রয়োজন হয়নি। এরপর ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত একাদশ সংসদ নির্বাচনের দিনে ভোট ‘রাতে হয়ে যাওয়ার’ মতো গুরুতর অভিযোগ তুলেছে বিএনপি সহ বিরোধী দলগুলি। এবার ৭ জানুয়ারির দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা করেছে বিএনপি সহ বেশ কিছু দল। সেজন্য ৪৮ ঘন্টার হরতাল ঘোষণা করেছে খালেদার দল। যার ফলে ভোগান্তি বেড়েছে সাধারণ মানুষের।

যদিও এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মূল প্রতিপক্ষ নির্দল প্রার্থীরা। যাঁদের বেশির ভাগ আবার আওয়ামী লীগের বিক্ষুব্ধ নেতা। সেজন্য এবারের নির্বাচন বন্ধ করতে মরিয়া বিরোধীরা।