ফের ভারতের কাছে বন্ধুত্বের আর্জি নওয়াজের  

Written by Sunita Das April 19, 2024 6:02 pm

ইসলমাবাদ, ১৯ এপ্রিল– পাকিস্তান সরকারের বিপরীতে গিয়ে ভারতের কাছে বন্ধুত্বের আর্জি পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের৷ পাকিস্তানের তিনবারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ বলেছেন, ভারত ও পাকিস্তান নিজেদের মধ্যে ঝগড়া না করে এগিয়ে আসুক সু-সম্পর্কের দিকে৷ আলোচনা শুরু হোক দু-পক্ষের৷ তাতে দুই দেশই লাভবান হবে৷
একদিকে ইসলামাবাদ যখন তার নাগরিককে খুনের দায়ে ভারতকে দুষছে ঠিক তখনই সেই সরকারের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর মুখে এই বার্তায় স্বভাবতই চমকে দেওয়ার মতো৷  নওয়াজ এই কথা কোনও জনসভা, আলোচনাচক্র বা সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেননি৷ তাঁর মেয়ে পাকিস্তানের সর্ববৃহৎ প্রদেশ পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী মরিয়ম নওয়াজ তাঁর বাবার এই বক্তব্য সে দেশ সফররত শিখ তীর্থযাত্রীদের জমায়েতে বলেছেন৷ গত মাসে পাকিস্তানের নতুন সরকার ক্ষমতায় এসেছে৷ গোড়ায় ঠিক ছিল পাকিস্তান মুসলিম লিগ (নওয়াজ)-এর সভাপতি নওয়াজ শরিফ ফের প্রধানমন্ত্রী হবেন৷ বস্তুত দীর্ঘদিন বিদেশে রাজনৈতিক আশ্রয়ে থাকা নওয়াজ গত বছর অক্টোবরে স্বদেশে ফিরে নয়া পাকিস্তান গড়ার সংকল্প ঘোষণা করেন৷ তার আগের মাসেই দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয় জি-২০ সম্মেলন৷ যেখানে পাকিস্তানের আমন্ত্রণ ছিল না৷ তা নিয়ে ভারত তথা হিন্দুস্থান এবং পাকিস্তান ভেঙে তৈরি বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করে নওয়াজ বলেন, আমিও পাকিস্তানকে বাকি দুই দেশের সমকক্ষ করে তুলতে চাই৷
তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল, পাকিস্তানের রাজনীতিতে শাহবাজের ভাবমূর্তি অনেকটাই ভরতের মতো৷ আগের দফায় প্রধানমন্ত্রী থাকাকালেও বিদেশবাসী দাদার সঙ্গে পরামর্শ না করে সিদ্ধান্ত নিতেন না৷ সেই নওয়াজ এখন দেশে থাকায় সরকারের পুরো নিয়ন্ত্রণ তাঁরই হাতে৷ ফলে নওয়াজের বক্তব্য হিসাবে মেয়ে মরিয়ম যে কথা বলেছেন, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রক বেসরকারিভাবে সেই অভিমতকে স্বাগত জানানোর পাশাপাশি যথেষ্ট গুরুত্ব দিচ্ছে৷ কূটনৈতিক মহল মনে করছে, এটাই পাকিস্তানের বর্তমান সরকারের প্রতিক্রিয়া৷ লক্ষণীয় মরিয়ম তাঁর কাকা প্রধানমন্ত্রী শাহবাজের অভিমত সম্পর্কে নীরব ছিলেন৷ গত মাসে তিনি পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করেছেন৷ তাঁর মন্ত্রিসভায় এই প্রথম একজন শিখ জায়গা পেয়েছেন৷ তিনিও পাকিস্তানের প্রথম নারী মুখ্যমন্ত্রী৷
প্রসঙ্গত নওয়াজ ক্ষমতায় থাকাকালে কারগিল যুদ্ধ হলেও পরে জানা যায়, সেই সংঘাতের আসল নায়ক ছিলেন সেনা প্রধান জেনারেল পারভেজ মোশারফ৷ পরে নওয়াজকে হটিয়ে ক্ষমতা দখল করেন ওই সেনা কর্তা৷ কারগিল যুদ্ধের পিছনে নওয়াজের ভূমিকা জানা থাকায় নয়াদিল্লিও তাঁকে আর পাঁচজন পাক প্রশাসকের সঙ্গে এক করে দেখে না৷ নরেন্দ্র মোদী ২০১৪-তে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে শপথ নেওয়ার দিন নওয়াজকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন৷ আমন্ত্রণ রক্ষা করেছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী৷ আবার আফগানিস্তান থেকে দেশে ফেরার পথে একপ্রকার বিনা নোটিসে নরেন্দ্র মোদির বিমান ইসলামাবাদের থেমেছিল৷