সূর্যোদয়ের দেশে রবি’র হাতে রুপাের ঝিলিক

ভারতীয় সময়ানুযায়ী সূর্যোদয়ের সময়ে টোকিও অলিম্পিকের আসরে সূর্যোদয় হল রবি’র হাত ধরে। প্রথম অলিম্পিকের আসরে নেমেই পদক জয়।

Written by SNS Tokyo | August 6, 2021 3:20 pm

কুস্তিগীর রবি কুমার দাহিয়া(Photo:SNS)

ভারতীয় সময়ানুযায়ী সূর্যোদয়ের সময়ে টোকিও অলিম্পিকের আসরে সূর্যোদয় হল রবি’র হাত ধরে। প্রথম অলিম্পিকের আসরে নেমেই পদক জয়। মীরাবাঈ চানুর পর কুক্তি থেকে দেশকে রুপার পদক জয় করে এনে দিলেন কুস্তিগীর রবি কুমার দাহিয়া।

বৃহস্পতিবার ফাইনালে খেলতে নেমেছিলেন কুস্তিগীর রবি কুমার দাহিয়া। ফাইনালে উঠে রুপাে জয় নিশ্চিত করে ফেলেছিলেন। কিন্তু লক্ষ্যটা ছিল দেশের হয়ে প্রথম সােনার পদক জয়। আশা জাগিয়েও রণে ভঙ্গ। স্বপ্নপুরণটা আর হল না। বিশ্বের অন্যতম সেরা প্রতিপক্ষে বিরুদ্ধে।

রাশিয়ার জাভুর উগুয়েভের কাছে শেষপর্যন্ত হার মানতে হল রবিকুমার দাহিয়াকে। দরকার ছিল একটি মাত্র জয়ের কিন্তু সেটা হল না পারলেন না, অভিজ্ঞতার সামনে কিছুটা মাথানত করে ফেলতে হল তাকে। যাইহােক, তার এই লড়াইকে সকলেই কুর্নিশ জানিয়েছেন।

শুরুতে জাভুর বিরুদ্ধে এগিয়ে গেলেও পাল্টা লড়াইয়ে ফিরে এসেছিলেন তিনি। প্রথম রাউন্ডের শেষে ২-৪ পয়েন্টে এগিয়ে ছিলেন জাভুর। কিন্তু দ্বিতীয়ার্ধে কৌশলের সামান্য বদলে রবির থেকে ম্যাচ ক্রমশ কেড়ে নিতে থাকেন রাশিয়ার কুস্তিগীর। একসময়ে রবি ২-৭ পয়েন্টের ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছিলেন। সেখান থেকে লড়াই করে খেলায় ফিরে আসেন রবি ৪-৭ পয়েন্ট।

তবে আগের ম্যাচের মতাে শেষ মুহুর্তে কোনও চমক দেখাতে পারলেন না রবিকুমার। তাই এবারের মতাে রুপার পদক নিয়েই থেমে যেতে হল তাকে। কুস্তিতে এই নিয়ে ভারতের মােট সাতটি পদক হল। কিন্তু সােনার খরা তেরাে বছর পরও কাটল না।

শেষবার অলিম্পিকে ব্যক্তিগত পদক এসেছিল শুটিংয়ে। ২০০৮ সালে অলিম্পিকে যা জিতেছিলেন অভিনব বিন্দ্রা। তার পর রবি আশা জাগিয়েও সেটা শেষপর্যন্ত কার্যকর ভূমিকায় পরিণত করতে পারলেন না।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি টুইট বারে রবিকে জানিয়েছেন। তিনি লেখেন, ‘অসাধারণ কুস্তির ফাইনালটা খেললে। দারুণ কামব্যাক করেছিল। কিন্তু তুমি লড়াই করেছিলে এতেই আমরা তােমায় নিয়ে গর্বিত। রুপাের পদক জয়ের জন্য তােমাকে শুভেচ্ছা। তােমার প্রথম অলিম্পিকেই তুমি সফল্য। ভবিষ্যতে আরও সামনের দিকে এগিয়ে চল।

খুব অভাবের সংসারের মধ্যে দিয়ে উঠে আসা ছেলে রবি। বাবা একজন কৃষক। তাও নিজের জমি নেই। পরের জমিতে কাজ করে সংসার চালান। তবুও আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়েও ছেলের স্বপ্ন তিনি পূরণ করেন। নাহরি গ্রামে রবি থাকেন। এখন রবিই তার গ্রামের হিরাে হয়ে উঠেছেন। তার জয়ের পর গ্রামবাসী উচ্ছাস প্রকাশ করছেন।

তবে তার গ্রামের অবস্থা বেহাল। দীর্ঘদিন ধরে একটি হাসপাতাল এবং অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সংযােগের দাবি করেছেন গ্রামের মানুষরা। কিন্তু সরকারের সেদিকে নজর ছিল না। রবির পদক জয়ের মধ্যে দিয়ে কি তার গ্রামের পরিস্থিতি ভালাে হবে এবং গ্রামবাসীদের দুঃখের দিন মিটবে সেটাই দেখার অপেক্ষায় রয়েছে সকলে।

এদিকে টোকিও অলিম্পিকে যেসব প্রতিযােগী হরিয়ানার হয়ে পদক জিতেছেন তাদের পুরস্কৃত করবে সে রাজ্যের সরকার। রবিকে হরিয়ানা সরকার ৪ কোটি টাকা দিচ্ছে, সঙ্গে সরকারি চাকরি এবং অনেক কম টাকায় জমি।