‘মামলার বেড়াজালে বাঁধছে পুলিশ’, পুলিশের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে ভাঙড়ের আরাবুল

মোল্লা জসিমউদ্দিন: রাজনৈতিক স্পর্শকাতর এলাকা হিসাবে বিগত বাম জমানায় যেমন ছিল ভাঙড়, ঠিক তেমনি তৃণমূল আমলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা তুঙ্গে এই ভাঙড়কে ঘিরেই৷ যদিও অশান্তি দমনে কলকাতা পুলিশের অধীনে নথিভুক্ত হয়েছে ভাঙড়৷ গত ৮ ফেব্রুয়ারিতে ভাঙ্গড়ের প্রাক্তন বিধায়ক সেই সঙ্গে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা আরাবুল ইসলাম যখন গ্রেপ্তার হয়েছিলেন৷ তখন বিরোধীরা এটি (গ্রেপ্তারি)-কে ‘আইওয়াস’ বলে দাবি করছিল৷ বিরোধীদের দাবি ছিল যে, ভোটের আগে গ্রেপ্তার করে ওয়ারেন্টগুলি খারিজ করে ভোটের প্রাক্কালে রাজনৈতিক ময়দানে আরাবুলকে নামাতে এই নাটক করছে শাসক দল৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি পরিবর্তিত হয়েছে৷ জেল হেফাজতে থাকাকালীন আরাবুল ইসলামের মেয়ের বাড়িতে বড় ধরনের চুরির ঘটনাও ঘটেছে৷ ঠিক এইরকম পরিস্থিতিতে পুলিশের বিরুদ্ধে অতিসক্রিয়তার অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম৷ আরাবুলের আইনজীবী বলেন, ‘তাঁর (আরাবুল) নামে মোট কতগুলো কেস আছে? সেই তথ্য জানতে চাওয়া হয় কলকাতা পুলিশের কাছে কিন্ত্ত তাদের তরফে কোনও সুদুত্তর পাওয়া যায়নি৷’ তাই আরাবুল ইসলাম কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বলে জানা গিয়েছে৷ গত ৮ ফেব্রুয়ারি তোলাবাজি ও খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হন আরাবুল ইসলাম৷

পঞ্চায়েত নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন অর্থাৎ ২০২৩ সালে ১৫ জুন খুন হয়েছিলেন মইনুদ্দিন মোল্লা নামে এক আইএসএফ কর্মী৷ খুনের অভিযোগে প্রথমেই নাম ছিল আরাবুলের বিরুদ্ধে৷ সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তাঁকে বাডি় থেকে গ্রেফতার করে কলকাতা পুলিশ৷ যদিও এর আগেও তাঁর বিরুদ্ধে তোলাবাজির অভিযোগ সহ একাধিক অভিযোগ রয়েছে৷ কিন্ত্ত এইবার অভিযোগ, নিত্য নতুন মামলায় পুলিশ আরাবুলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে৷ নতুন নতুন কেস দিয়ে তাঁকে কোণঠাসা করা হচ্ছে৷ ভোটের মুখে তাঁর এই অভিযোগে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে৷

এবার কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধেই অতি সক্রিয়তার অভিযোগ তুলে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ আরাবুল ইসলাম৷ আরাবুলের দাবি, ‘নির্বাচনের আগে পুলিশ অতি স্বক্রিয়৷’ কারণ হিসাবে তাঁর আইনজীবী আদালতে উল্লেখ করেছেন, গ্রেফতার করার পর আরও দুটো মামলায় যুক্ত করা হয় আরাবুলকে৷ তখন কলকাতা পুলিশের কাছে জানতে চাওয়া হয় মোট কটা কেস রয়েছে ভাঙডে়র তৃণমূল নেতার নামে? উত্তর না মেলায় আদালতের দ্বারস্থ আরাবুল ইসলাম৷ অভিযোগ, পুলিশ অতিসক্রিয় হয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে আরাবুলকে৷ এই মর্মেই মামলা দায়ের করার আবেদন জানানো হয়েছে৷ মামলা দায়ের করার অনুমতি দিয়েছেন কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল বেঞ্চের বিচারপতি জয় সেনগুপ্ত৷


আগামী ৪ এপ্রিল, বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে৷ চলতি বছর ৮ ফেব্রুয়ারি আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করে পুলিশ৷ অতর্কিতে হানা দিয়ে বাডি় থেকে তাঁকে তুলে নিয়ে আসে পুলিশ৷ গ্রেফতারির আগে আরাবুলের বিরুদ্ধে আবার ভাঙডে় লক্ষ লক্ষ টাকার তোলাবাজিরও অভিযোগ ওঠে৷
পুলিশ সেই ধারাও যুক্ত করে৷ এবার অভিযোগ, নিত্য নতুন মামলায় পুলিশ আরাবুলকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে৷ এবার সেই অভিযোগ তুলেই হাইকোর্টের দ্বারস্থ আরাবুল ইসলাম৷ আগামী বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি রয়েছে বলে জানা গেছে৷