জামিনের আবেদন নাকচ করলেন বিচারক
খায়রুল আনাম: হাড় হিম করা বীরভূমের রামপুরহাটের বগটুই গণহত্যার ঘটনা নাড়িয়ে দিয়েছিল বিশ্ব-বিবেককে। ২০২২ সালের ২১ মার্চ-এর সন্ধ্যায় রামপুরহাটের বগটুই মোড়ে বোমা মেরে ও গুলি করে খুন করা হয় রামপুরহাটের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের তৎকালীন উপ-প্রধান বগটুই গ্রামের শেখ ভাদুকে। আর শেখ ভাদু খুনের বদলা নিতে, শেখ ভাদুর অনুগামীরা ওই রাতে বগটুই গ্রামে ব্যাপক বোমাবাজি করে আতঙ্কের সৃষ্টি করে। তারই মধ্যে তাঁরা রামপুরহাটের একটি পেট্রোল পাম্প থেকে ক্যান ভর্তি করে পেট্রোল টোটোয় চাপিয়ে বগটুই গ্রামে নিয়ে যায়। সেখানে আতঙ্কে একটি ঘরে আশ্রয় নেওয়া শিশু, পুরুষ, মহিলা মিলিয়ে দশজনকে ঘরের দরজা বাইরে থেকে শিকল দিয়ে বন্ধ করে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। আর সেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হয় দশজনের। পরবর্তীতে যাঁদের দেহ শনাক্ত পর্যন্ত করা যায়নি। নারকীয় এই গণহত্যা নিয়ে দেশ-ছাড়িয়ে বিদেশেও শোরগোল পড়ে যায়।
Advertisement
ঘটনার পরে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এখানে এসে প্রত্যেক মৃতের পরিবারের একজনকে সরকারি চাকরি ও আর্থিক সহায়তা দেন। তিনি ঘটনার তদন্তের জন্য সিট গঠন করার কথা ঘোষণা করেন। কিন্তু পরবর্তীতে কলকাতা হাইকোর্ট এই গণহত্যার তদন্তভার তুলে দেয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের হাতে। সিবিআই এখানে একটি অস্থায়ী শিবির করে সেই তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে। এই ঘটনার তদন্তে নেমে সিবিআই অভিযুক্ত ৩৩ জনের মধ্যে ২৩ জনকে গ্রেফতার করে। এদের মধ্যে রয়েছেন রামপুরহাট-১ ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি আনারুল হোসেন। বগটুই গণহত্যার মূল অভিযুক্ত শেখ লালনকে সিবিআই ঘটনার দীর্ঘদিন পরে গ্রেফতার করে এবং সিবিআই হেফাজতে ওই বছরই ১২ ডিসেম্বর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয় শেখ লালনের। আর সেই ঘটনার জেরে জন-অসন্তোষে সিবিআইকে তাদের শিবির ছেড়ে চলে যেতে হয়।
Advertisement
বগটুই গণহত্যা মামলায় শুক্রবার ১২ জুলাই রামপুরহাট ফাস্ট ট্রাক আদালতে জেল হেফাজতে থাকা ৬ জনের জামিনের আবেদন জানানো হলে বিচারক সন্দীপ কুমার কুণ্ডু তা খারিজ করে দেন। এদিন জানানো হয় যে, ধৃতদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৭, ১৪৮, ১৪৯, ২০২, ৩০৭, ৪৩৫, ৪৩৬, ৪৫০ ও ২০১ ধারায় চার্জ গঠন করা হয়েছে এবং আগামী ১২-১৩ আগস্ট এই মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে।
Advertisement



