ভোটের কাজে যেতে না চেয়ে হাইকোর্টের আইনজীবীর নোটিশ

Written by SNS April 9, 2024 12:19 pm

প্রশিক্ষণে অনুপস্থিতদের বিরুদ্ধে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত

খায়রুল আনাম:  যে কোন ভোট সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা ও সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে ভোটকর্মীদের ভূমিকা সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ৷ সরকারি স্থায়ী কর্মীদের দ্বারাই এই বৃহৎ কর্মকাণ্ড সম্পন্ন করা হয়৷ এজন্য জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হাতে বিশেষ ক্ষমতাও রয়েছে৷ আর যে সব সরকারি কর্মীরা ভোটের কাজে অংশগ্রহণ করেন, তাঁদের নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণও দেওয়া হয়৷ উপযুক্ত কারণ ব্যতিত এবং তা জাতীয় নির্বাচন কমিশন দ্বারা অনুমোদিত না হলে, কোনও ভোট কর্মী ভোটের প্রশিক্ষণ এবং নির্বাচন কমিশন নির্দিষ্ট দায়িত্ব থেকে কোনওভাবেই অব্যাহতি পেতে পারেন না৷ এক শ্রেণির সরকারি কর্মী রয়েছেন, যাঁরা ভোট কর্মী হিসেবে দায়িত্ব পালনকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং জাতীয় স্তরে তাঁদের দায়িত্ব পালনকে চাকরি জীবনের অন্যতম অভিজ্ঞতা বলেও মনে করেন৷ আবার এক শ্রেণির সরকারি কর্মী রয়েছেন, যাঁরা নানাভাবে ভোটের দায়িত্ব পালন থেকে যে কোনওভাবে সরে থাকার পন্থা অবলম্বন করতে দ্বিধাবোধ করেন না৷ এবার লোকসভা ভোটে বীরভূম জেলায় এমন সরকারি কর্মীদের সংখ্যাবৃদ্ধিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে নির্বাচন দফতর৷ জেলা নির্বাচন দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, বুথের সংখ্যার ভিত্তিতে জরুরি প্রয়োজনের দিকে নজর দিয়ে বুথের সংখ্যার চেয়ে কিছু বেশি কর্মী নেওয়া হয়ে থাকে৷ কিন্ত্ত এবার জেলায় এক শ্রেণির সরকারি কর্মীর মধ্যে ভোটের কাজে না যাওয়ার যে প্রবণতা জেলায় দেখা দিয়েছে তা একেবারেই কাঙ্খিত নয়৷

জেলায় ভোট কর্মী নিয়ে যে পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে যে, এবার লোকসভা ভোট সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে জেলায় যে ২৩৯টি মহিলা পরিচালিত বুথ করা হয়েছে, সেগুলির জন্য ১ হাজার ১৪৮ জন মহিলা কর্মীর প্রয়োজন৷ জেলায় পুরুষ ভোট কর্মীর প্রয়োজন ১৩ হাজার ৫৯২ জন৷ কিন্ত্ত প্রথম পর্যায়ে ৬ ও ৭ এপ্রিল ভোট কর্মীদের যে প্রশিক্ষণ হয় তাতে ৯৫৯ জনের কাছাকাছি অনুপস্থিত ছিলেন৷ দ্বিতীয় আরও একটি প্রশিক্ষণে অনুপস্থিত ছিলেন প্রায় ৮০০ জন৷ এঁদের মধ্যে ২০০ জন তাঁদের মেডিক্যাল সার্টিফিকেট দিয়ে প্রশিক্ষণে উপস্থিত না থাকতে পারার কারণ উল্লেখ করছেন৷ অন্যরা অনুপস্থিত থাকার বিষয়ে জেলা নির্বাচন দফতরকে কিছুই জানায় নি৷ এঁদের সকলের এই ‘ডোন্ট কেয়ার’ মনোভাবের জন্য বিরক্ত নির্বাচন দফতর এঁদের সকলের কাছেই শো-কজ নোটিশ পাঠিয়ে দিয়েছে৷ এঁদের অনুপস্থিতির জন্য জেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ে শুনানি হবে৷ সেখানে প্রশিক্ষণে অনুপস্থিতির উপযুক্ত কারণ দেখাতে পারলে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়া হতে পারে৷ অন্যথায় নির্বাচন কমিশনের বিধি অনুযায়ী তাঁদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং ওই সরকারি কর্মীর সার্ভিস বুকে তা নথিভুক্ত করা হবে৷ এদিকে সরকারি গ্রন্থাগার দফতরের এক কর্মী জেলা নির্বাচন দফতরের পোলিং সেকশনে কলকাতা হাইকোর্টের আইনজীবীর মাধ্যমে একটি নোটিশ পাঠিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন যে, তিনি যে পদমর্যাদার কর্মী তাতে তিনি ভোটের কাজে যাবেন না৷ এছাড়াও আগেও তিনি কোনও দিনই ভোটের কাজে যাননি৷ শারীরিক অসুস্থতা, মানসিকভাবে অসুস্থ, গর্ভবর্তী ও ক্যানসার আক্রান্ত কয়েকজন সরকারি কর্মী সরাসরি সশরীরে মেডিক্যাল সার্টিফিকেট নিয়ে জেলাশাসক তথা জেলা নির্বাচন আধিকারিকের দফতরে হাজির হয়ে ভোটের কাজ থেকে তাঁদের অব্যাহতি দেওয়ার জন্য জেলাশাসকের কাছে আবেদন জানিয়েছেন৷ এঁদের সকলকেই এবারের লোকসভা ভোটের কাজ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হচ্ছে বলে জানা যাচ্ছে৷
ছবি : ভোট কর্মীদের প্রশিক্ষণ৷