কেজরিওয়াল জেলে থাকলে, নাড্ডা জেলে যাবেন না কেন? সরব অভিষেক

নিজস্ব প্রতিনিধি– নির্বাচনী বন্ড নিয়ে কেন্দ্রকে কড়া ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দোপাধ্যায়৷ আবগারি দুর্নীতি মামলায় দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল যদি জেলে থাকেন, তাহলে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডা কেন জেলে থাকবেন না, প্রশ্ন তুললেন অভিষেক৷ বৃহস্পতিবার কালনার সাংগঠনিক বৈঠক সেরে বেরিয়ে এমনই মন্তব্য করেন অভিষেক৷ সেখানেই সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে তিনি বলেন, “যে আবগারি দুর্নীতির কথা বলা হচ্ছে, তাতে তথাকথিত ১০০ কোটি টাকার দুর্নীতির কথা বলা হয়েছে৷ যদি অভিযোগ সত্যি বলে ধরেও নেওয়া হয়, তাহলে ওই ১০০ কোটির মধ্যে ৫৫ কোটি টাকা বিজেপিতে গিয়েছে নির্বাচনী বন্ডের মাধ্যমে! তাহলে অরবিন্দ কেজরিওয়াল জেলে থাকলে, জেপি নাড্ডা জেলে যাবেন না কেন?” পাশাপাশি কটাক্ষের সুর চড়িয়ে অভিষেক বলেন, “ইডির দাবি অনুযায়ী কেজরিওয়াল জেলে বসে আম খাচ্ছেন৷ বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি তো বাড়িতে বসে আম খাচ্ছেন৷”

নরেন্দ্র মোদি সরকারের নির্বাচনী বন্ডকে ‘অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ কিন্ত্ত সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জানান, নির্বাচনী বন্ড ছিল বলেই কোন দলকে, কে চাঁদা দিয়েছে, তা বোঝা সম্ভব হয়েছে৷ এই প্রসঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে অভিষেক বলেন, “কে কত টাকা দিচ্ছেন তা বোঝার জন্য ইলেক্ট্রোরাল বন্ডের প্রয়োজনীয়তা ছিলনা৷ চেকে দিলেও বোঝা যেত বা আরটিজিএস করে, এনআইএফটি কোডের মাধ্যমেও টাকা দেওয়া যেত৷ এতো উপায় থাকা সত্ত্বেও ইলেক্ট্রোরাল বন্ড কেন?” ইডির দাবি, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ধৃত সুজয় কৃষ্ণ ভদ্রের ভয়েস ক্লিপিং মিলেছে৷ সেই বিষয়টিই এবার আদালতে পেশ করবে ইডি৷ এই প্রসঙ্গেও সরব হন অভিষেক৷ তিনি বলেন, “যাঁর সাথে কথা হয়েছে তাঁকে গ্রেফতার করেছে কি ইডি? ইডি ক্ষমা চেয়েছে সুপ্রিম কোর্টে৷” পাশাপাশি এদিন অধীররঞ্জন চৌধুরী এবং অগ্নিমিত্রা পলের কার্যকলাপকে কটাক্ষ করে অভিষেক বলেন, “এসবই হতাশার বহিঃপ্রকাশ৷ তাঁরা জানেন বাংলায় কে জিততে চলেছে৷ কেবল তাঁদের জন্য শুভকামনা রইলো৷’

আজ থেকে শুরু হচ্ছে প্রথম দফার নির্বাচন৷ একেবারে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিও বৃহস্পতিবার সেড়ে ফেলেছেন তৃণমূল যুবরাজ৷ সাংগঠনিক বৈঠকের সফলতা নিয়েও এদিন মুখ খোলেন অভিষেক৷ তাঁর ভাষায়, ‘আগামী নির্বাচনের ফল যখন ঘোষণা হবে, বর্ধমান পূর্বে আমাদের ব্যবধান গত নির্বাচনের থেকে আরও বাড়বে এবং সাতটি বিধানসভাতেই তৃণমূল কংগ্রেস নিরঙ্কুশ মানুষের সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ভালো ফল করবে৷’ এদিন কালনার নির্বাচনী পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রার্থী সহ বিধায়ক, ব্লক সভাপতি এবং পঞ্চায়েত স্তরের নেতৃত্বরাও৷ ভোটযুদ্ধের ময়দানে সকলকে প্রস্তুত থাকার বার্তাই দিয়েছেন অভিষেক৷ কালনার বৈঠকে ঢোকার মুহূর্তে অভিষেককে কেন্দ্র করে ব্যাপক মানুষের ভিড় হয়৷ প্রত্যেককেই হাত নাড়িয়ে প্রতিবার্তা দিয়ে জনসমর্থন আদায় করেন তৃণমূল সেনাপতি৷