৬ বছরে চাকরি বিক্রি করে ৭২ কোটি প্রসন্নর, আদালতে দাবি ইডি-র

Written by SNS June 7, 2024 7:06 pm

নিজস্ব প্রতিনিধি, ৭ জুন– শুক্রবার কলকাতার সিটি সেশন কোর্টে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি চলে। এদিন আদালতে কেন্দ্রীয় আর্থিক তদন্তকারী সংস্থা ইডি জানায়, ‘৬ বছরে ৭২ কোটি টাকা জমা পড়েছে নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে ধৃত ব্যবসায়ী প্রসন্ন রায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। এবং সেই টাকা এসেছে চাকরি বিক্রি করে’। যদিও প্রসন্নের আইনজীবীর দাবি, ‘তাঁর মক্কেলের অ্যাকাউন্টে যে অর্থরাশি জমা পড়েছে, তা ব্যবসার টাকা’। এর সঙ্গে নিয়োগের কোনও সম্পর্ক নেই বলেও দাবি করেছেন তিনি। এদিন এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি চলে কলকাতা সিটি সেশন কোর্টে, ইডি এজলাসে। সেই শুনানি চলাকালীন প্রসন্নের বিরুদ্ধে আদালতে এই রিপোর্ট জমা দেয় ইডি। ইডির আইনজীবীর দাবি,’নিয়োগ দুর্নীতির তদন্তে নেমে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা জানতে পেরেছে, ৬ বছরে ৭২ কোটি টাকা জমা পড়েছে প্রসন্ন রায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। যা চাকরি বিক্রির টাকা বলে মনে করছেন তদন্তকারীরা। আদালতে এই সংক্রান্ত একটি রিপোর্টও জমা দিয়েছে ইডি। এদিন দাখিল রিপোর্টে ইডি জানিয়েছে, একজন চাকরিপ্রার্থীর কাছ থেকে প্রায় দেড় লক্ষ টাকা নেওয়া হয়েছিল। এরপরেই ইডির কাছে জানতে চান,’কতজনের কাছ থেকে চাকরির টাকা নেওয়া হয়েছিল?’ ইডির রি দাবি শুনে প্রসন্নের আইনজীবী জানান,’প্রসন্নের অ্যাকাউন্টে যে টাকা জমা পড়েছে তা তাঁর ব্যবসার টাকা। এর সঙ্গে নিয়োগ দুর্নীতির সম্পর্ক নেই’। ‘৭২ কোটি জমা দিলে তাতে অপরাধ কিসের?’ এই প্রশ্নও তোলেন তিনি। পাশাপাশি, ওই আইনজীবীর আবেদন,’প্রসন্নের অ্যাকাউন্টে জমা পড়া টাকা যদি চাকরি বিক্রির হয়, তাহলে কতজনের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে জানাক ইডি’।

উল্লেখ্য, এর আগে ইডি দাবি করেছিল, চাকরি বিক্রি করে একাই ১০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন প্রসন্ন। অভিযোগ, শিক্ষা দফতরের আধিকারিক এবং অযোগ্য প্রার্থীদের মধ্যে তিনি সেতু বন্ধনও করতেন। প্রসন্ন এবং তাঁর পরিচিতদের ৯০টি সংস্থা রয়েছে বলেও আদালতে দাবি করেছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এসএসসি নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রসন্নের বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি উপদেষ্টা কমিটির প্রাক্তন প্রধান শান্তিপ্রসাদ সিংহের ঘনিষ্ঠ। এক জন ‘মিডলম্যান’। রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ ছিল বলে সিবিআই সূত্রে জানা গিয়েছিল। নিয়োগ দুর্নীতি সংক্রান্ত দু’টি মামলার তদন্তে নেমে প্রসন্নের নাম পেয়েছিল সিবিআই। প্রসন্নকে এরপরে গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। তবে গ্রেফতার করা হলেও তখন প্রসন্নের বিরুদ্ধে বিচার শুরু হয়নি। চার্জশিট দেওয়ার পর নির্দিষ্ট সময় পার হয়ে গেলেও তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে কোনও পদক্ষেপ না করায় বিষয়টি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন প্রসন্ন। বেশ কিছু শর্ত দিয়ে সিবিআই-এর মামলায় তাঁকে জামিন দেয় সুপ্রিম কোর্ট। এরপর তাঁকে ইডি পুনরায় গ্রেফতার করে থাকে ।