সুব্রত সরকার
আফ্রিকার জঙ্গলে ‘গেম ড্রাইভ’ দারুণ রোমাঞ্চকর এক বনভ্রমণ। এ জঙ্গলে পায়ে হেঁটে বেড়ানো যায় না। জঙ্গল সাফারির জন্য চমৎকার সব গাড়ি থাকে। এই সাফারিকে বলে ‘গেম ড্রাইভ।’ চন্দন এখানে আসার আগে বারবার গাড়ির কথা জেনে নিয়েছিল, ‘গেম ড্রাইভে গাড়ি কিন্তু ল্যান্ড ক্রুজার দিতে হবে।’ শর্ত ছিল এটাই। ট্রাভেল এজেন্ট ‘কারিবু আফ্রিকা’ সেই শর্ত রেখে ওদের ল্যান্ড ক্রুজারই দিয়েছে।
Advertisement
অনলাইনে নিজেরাই সব বুক করে চলে এসেছে। দু’বন্ধু সঙ্গে দু’জনের বউ। চারজনের টিম। ওদের ছেলেমেয়েরা সব বড় হয়ে গেছে। বিয়ে হয়ে গেছে। ওরা এখন ওদের মত ঘুরে বেড়ায়। তাই ষাট পেরোনো বুড়ো-বুড়ির দল নিজেরা দল বানিয়ে বছরে কয়েকবার কাছে-দূরে ঘুরে বেড়িয়ে সিনিয়র সিটিজেন লাইফ দিব্যি কাটাচ্ছে।
Advertisement
আফ্রিকা ভ্রমণে কেনিয়া-তানজানিয়া একসঙ্গে করছে। শুরু করেছিল তানজানিয়া দিয়ে। সেরেংগেটি ঘুরে মুগ্ধ ওরা। সেরেংগেটির সাভানায় সিংহকে যেভাবে কাছ থেকে দেখেছে, তা শুধু গল্প করেই বাকি জীবন কাটিয়ে দেওয়া যায়। ওরা কেউই এখনো দাদু-দিদা হয়নি। নাহলে নাতি নাতনিদের এই গল্প বেশ রসিয়ে রসিয়ে শোনাতে পারত। বাড়িতে এসব গল্প শোনানোর মত লোকজন আর কোথায়!
আফ্রিকা ভ্রমণ শেষের পথে। সেরেংগেটি, গোরোংগোরো, মাসাইমারা, লেক নাকুরু, লেক নাইভাসা ঘোরা হয়ে গেছে। আজ শেষ হচ্ছে অ্যাম্বোসেলির গেম ড্রাইভ করে।
অ্যাম্বোসেলির হাতি দেখার একটা আলাদা মজা আছে। চন্দনরা আজ অনেক হাতি দেখল। ওর বন্ধুর স্ত্রী রত্না বলল, ‘চন্দনদা আমার মনে হয় অ্যাম্বোসেলিতে আমরা একশো হাতি দেখে ফেলেছি।’
মালিনী, চন্দনের বউ বলল, ‘এবার শুধু মাউন্ট কিলিমাঞ্জোরোর যদি একটু দেখা পেতাম রে!’
চন্দনের বন্ধু গৌতম বলল, ‘আকাশ দেখে মনে হচ্ছে এই দুঃখটুকু নিয়ে বাড়ি ফিরে যেতে হবে। কিলি এবার দেখা হবে না!’
‘এবার হবে না মানে কি! আবার আসব নাকি আমরা!’ রত্না গৌতমকে বেশ চেপে ধরে বলল।
গৌতম উদাসী ঢঙে মেঘলা আকাশের দিকে চেয়ে বলল, ‘আগামী কয়েকবছর যদি তুমি একটু শাড়ি, গয়না কেনা আর পার্লারে যাওয়া কম করো তো আবার আসাই যায় আফ্রিকায়!’
‘মানে!’ রত্না মালিনীর দিকে চেয়ে কড়া হয়ে বলল, ‘তুই বল, আমি কি এমন শাড়ি গয়না কিনি যে ও একথা বলল! পার্লারে একটু না গেলে হয় বল!..’ ওদের এসব কথার খুনসুটির মধ্যেই ল্যান্ড ক্রুজারের ওয়াকি টকিতে সোয়াহিলি ভাষায় কী একটা খবর এলো, তা শুনে ড্রাইভার মাসা হঠাৎই দুরন্ত বেগে গাড়ি ছোটাতে শুরু করেছে, চন্দন দাঁড়িয়ে ক্যামেরা অন করে ছবি তুলছিল। সামনের জলাশয়ে তখন হিপোরা মাথা তুলে দেখা দিয়েছে ক্ষণিকের জন্য। সেই দুর্লভ ছবিটা তোলার জন্য চন্দন জান প্রাণ লড়িয়ে দিচ্ছে। মাথায় ছিল ওর প্রিয় একটা টুপি। নেপালের থামেল থেকে কিনেছিল। সেই সখের টুপিটা হঠাৎ গাড়ি জোরে ছোটানোর দমকা হাওয়ায় উড়ে গিয়ে পড়ল অনেকটা দূরে রাস্তার ওপর। রাস্তার ঠিক পাশেই তখন দুটো কেপ বাফেলো দাঁড়িয়ে ঘাস চিবুচ্ছে। তার থেকে একটু দূরে গোটা কয়েক থমসন গ্যাজেল। আর গ্যাজেলকে শিকার করার জন্য দুটো ধূর্ত হায়না ঘুরঘুর করছে আশপাশে। টুপিটা ধুলোয় পড়ে রয়েছে। চন্দনের ‘আমার টুপি উড়ে গেল’ আর্ত চিৎকারে মাসা দুরন্ত বেগের গাড়িটাকে ব্রেক কষে থামিয়ে দিয়ে জানতে চাইল, ‘এনি প্রবলেম?’
মালিনী ব্যাকুল হয়ে বলল, ‘দাদার টুপিটা উড়ে চলে গেছে। মাসা কী হবে?’
মাসা গাড়ি থামিয়ে দেখল টুপিটা রাস্তায় পড়ে রয়েছে, কিন্তু তাকে নেমে আনতে যাওয়াটা বেশ ঝুঁকির। কেপ বাফেলো, হায়না ওরা আক্রমণ করে আসতে পারে! মাসা তবু হেসে বলল, ‘ওকে। হাকুনা মাটাটা!’
‘ওদের এই সব ব্যাপারে হাকুনা মাটাটা!’ মালিনী কিঞ্চিৎ বিরক্তি প্রকাশ করল।
রত্না বলল, ‘ও বলছে যখন কোনও নিন্তা নেই। সমস্যা নেই। একটু ধৈর্য ধর।’
চন্দন মন খারাপ মন নিয়ে তাকিয়ে আছে পেছনে ফেলে আসা রাস্তাটার দিকে। প্রিয় টুপিটা পড়ে আছে ধুলোয়। মাসা গাড়ি থামিয়ে দূর থেকে দেখছে। মালিনী বলল, ‘মাসা, তুমি কিন্তু নামবে না এখন।’
চন্দন নিষেধের সুরে বলল, ‘মাসা, ডোন্ট গো নাও। কেপ বাফেলো ইজ দেয়ার। প্লিজ ওয়েট।’
গৌতম বলল, ‘তুই ক্যামেরাটা অন করেই রাখ। এটা কিন্তু দারুণ একটা সিচুয়েশন। কী হয় দেখা যাক।’
জঙ্গলের চারধারে গেম ড্রাইভের গাড়িগুলো ছুটে বেড়াচ্ছে। অ্যাম্বোসেলির জঙ্গলে আকাশিয়া গাছ তেমন একটা নেই। সবুজ ঘাসের বুগিয়াল, ছোট ছোট উপত্যকা নেই। মাসাইমারা, সেরেংগেটিতে আছে এসব। অ্যাম্বোসেলি ন্যাশনাল পার্ক একটু যেন ধূ-ধূ প্রান্তর। খুব ধুলোভরা চারপাশ। সাভানায় ঢেকে থাকা এই হলুদ বনে বন্যপ্রাণীরা মহানন্দেই থাকে। খায়। ঘুমোয়। গান গায়। হ্যাঁ সত্যিই ওদের গান শোনায় জঙ্গলের হাজার হাজার পাখিরা। ছোট্ট সুপার্ব স্টারলিংগুলো তো দারুণ মজার। লাফিয়ে লাফিয়ে উড়ে বেড়ায় চারপাশে। কত পাখি শিস দেয়। পেলিক্যানগুলো হঠাৎ হঠাৎ ডানা ঝাপটিয়ে এমন চেঁচিয়ে ওঠে, জঙ্গলের এই আবহে সেগুলোও গান হয়ে ভেসে যায় চারপাশে। তাই সব মিলিয়ে আফ্রিকার এই ন্যাশনাল পার্কগুলো পশুপাখিদের সুখের ঘর সংসার। আর দর্শকদের মজার বেড়ানো- সার্থক বটে নামটা— ‘গেম ড্রাইভ।’ এই খেলা খেলা সারাবেলা বেড়ানোর কোনও তুলনাই হয় না।
খানিকটা সময় চলে গেল। টুপি টুপির জায়গাতেই পড়ে রয়েছে। একটা কেপ বাফেলো রাস্তা পেরিয়ে টুপিটার পাশ দিয়ে ওপারে চলে গেল। অন্যটা আপনমনেই ঘাস খাচ্ছে। আফ্রিকার বিখ্যাত ‘বিগ ফাইভের’ মধ্যে কেপ বাফেলো পড়ে। ওরা ভয়ংকর। আক্রমণ করতে পারে যখন তখন। তাই ওদেরকে সব সময় সমীহ করে চলতে হয়।
রত্না বলল, ‘মাসা, তুমি মুখে একটা আওয়াজ করো না, কেপ বাফেলোটা যদি ভয় পেয়ে চলে যায়!’
গৌতম রত্নার কথা শুনে খুব হাসল। মালিনী বলল, ‘হায়নাদুটোও তো রয়েছে কেমন ওত পেতে!’
চন্দন ক্যামেরায় মগ্ন। জলমগ্ন হিপোদের ছবি তুলেই যাচ্ছে, অথচ ওরই টুপি উড়ে পড়ে আছে ধুলোয়। টুপি উদ্ধারের চিন্তায় সবাই ব্যাকুল, চন্দন নিজে সে সব ভুলে ছবি তোলায় ডুবে গেছে।
মাসা ফোনে সোয়াহিলি ভাষায় কথা বলল কারও সঙ্গে। মনে হল এই টুপি নিয়েই কথা হলো। ওর কথা বলা থামতেই চন্দন বলল, ‘ওই দেখ একটা মস্ত দাঁতাল হাতি এদিকেই আসছে। মাসা মুভ। গাড়ি স্টার্ট করো।’
মাসা বিশাল হাতিটাকে দেখল। সত্যিই দুলকি চালে বিরাট দুই গজদন্ত নিয়ে এদিকেই আসছে। গাড়ির দিকে হয়তো আসবে না নিজের থেকে। হাতিকে বিরক্ত না করলে হাতি নাকি সচরাচর নিজের থেকে আক্রমণ করে না। তবু মাসা গাড়িটাকে স্টার্ট দিয়ে রাখল। পা এক্সিলেটরে, হাত স্টিয়ারিং-এ। কিন্তু গাড়ি গড়াচ্ছে না। হাতিটা চন্দনকে ছবি উপহার দেওয়ার জন্যই যেন একটু একটু করে এগিয়ে এসে একদম গাড়ির পাশ দিয়ে চলে গেল। চন্দন মনের সুখে ছবি তুলে নিল অনেকগুলো। এসব ছবি কোটি টাকার আনন্দের সমান! হাতিটা ওদের দিকে তাকিয়েও দেখল না! উফ্ কী ভয়ংকর উদাসীনতা!
সেই ধূর্ত হায়নাদুটো ঠিক সময়মত একটা থমসন গ্যাজেলকে ধরে ফেলেছে। হরিণের মত দেখতে প্রাণীটা বেশ নরমসরম প্রকৃতির। দলবেঁধে থাকতে ভালোবাসে। নিরীহ দেখতে। ওদের দলেরই একটাকে হায়নাদুটো একদম চিৎ করে ফেলে ওর প্রাণটুকু নিয়ে শান্ত হলো। গ্যাজেলটা ছটফট করতে করতে মৃত্যুবরণ করল। বাকি গ্যাজেলগুলো ভয়ে দিক বিদিকে দৌড়ে পালিয়েছে। শিকার ধরে হায়নাদুটো মহা খুশি। এবার ভোজনপর্ব। তাই শিকার নিয়ে নিরাপদ দূরত্বে, ঝোপের নির্জনে চলে গেল। কেপ বাফেলোটা এখনো একমনে ঘাস চিবুচ্ছে। ওর চোখের সামনেই একটা হান্টিং হয়ে গেল অথচ ও কিছুই দেখল না!
এবার একটা ল্যান্ড ক্রুজারকে এদিকে আসতে দেখা গেল। চন্দন গৌতম দাঁড়িয়ে আছে। রত্না মালিনী নিজেদের মত গল্প করছে। ল্যান্ড ক্রুজারটাকে আসতে দেখে মনে হলো, মাসার ফোন পেয়েই গাড়িটা আসছে এপথে।
চন্দনের প্রিয় টুপিটা ধুলোয় মাখামাখি হয়ে গেছে হাতিটা যখন থপাস থপাস করে ধুলো উড়িয়ে চলে গেল। ল্যান্ড ক্রুজারটা এসে থামল টুপিটার ঠিক কাছে। কিন্তু টুপিটা নিতে হলে তো নামতে হবে গাড়ি থেকে। কেপ বাফেলোটা কয়েকহাত দূরে। কেমন রাগী চোখে এবার দেখছে। ব্যাটা পেট ভরে ঘাস খেয়ে এখন আবার শিকারী চোখে তাকিয়ে আছে। এই ল্যান্ড ক্রুজারে চারজনই শ্বেতাঙ্গ বিদেশি-বিদেশিনি। সবার হাতে বড় বড় ক্যামেরা। ওরা ইংরেজিতে কথা বলছে না। ওদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলা শুনে মনে হলো ওরা ইউরোপের কোনও দেশ থেকে এসেছে। ওরা টুপি রেসকিউটাকে এনজয় করছে। কথা বলছে, হাসছে। কেপ বাফেলোটার ছবি নিচ্ছে।
এই মুহূর্তটা এবার একটু দমবন্ধ। সময়ও চলে যাচ্ছে। টুপি টুপির জায়গায় ধুলো মাখা হয়ে পড়ে রয়েছে। শুধু কেপ বাফেলোটা দূরে সরে গেলেই হয়। কিন্তু ও যাচ্ছে না। অনেকগুলো ক্যামেরা তাক করে আছে। এমন সময় হঠাৎ কোথা থেকে যেন দৌড়ে এলো এক সিংহ। আফ্রিকার সেই বিখ্যাত গ্রেট লায়ন! ওকে তেড়ে আসতে দেখে কেপ বাফেলোটা পালাচ্ছে। সিংহটা ওর পেছনে তাড়া করে দৌড়চ্ছে। সব কটা ক্যামেরা এই দুরন্ত শিকারের দৃশ্যটা বন্দী করতে মগ্ন। রত্না মালিনী চোখের সামনে এমন ভয়ংকর শিকার দেখার উত্তেজনায় দাঁড়িয়ে পড়েছে। কেপ বাফেলো দৌড়ে বহুদূর চলে গেল। সিংহও আশা ছাড়েনি। দৌড়চ্ছে। ক্যামেরার লেন্সে চমৎকার একটা শিকারের ছবি ধরা পড়ে গেল।
এর মধ্যে চন্দনের টুপিটা কখন যে পেছনের ল্যান্ড ক্রুজারের ড্রাইভার তুলে ফেরত দিয়ে গেছে মাসাকে ওরা বুঝতেই পারেনি। ধুলো মাখা প্রিয় টুপিটা হাতে পেয়ে চন্দন খুব খুশি। মাসাকে অনেকবার থ্যাঙ্ক ইউ বলল।
মাসার বন্ধু ড্রাইভারকে ওরা অনেক ধন্যবাদ জানাল। আর নিজের ভুলের জন্য চন্দন সরিও বলল।
মাসা আবার গেম ড্রাইভে ডুবে গিয়ে অল্প হেসে বলল, ‘হাকুনা মাটাটা।’
চন্দন হেসে বলল, ‘আসান্তে। আসান্তে সানা।’
গত কয়েকদিনে মাসার মুখে ‘হাকুনা মাটাটা’ ওরা অনেক বার শুনেছে। মাসার কাছে কোনও সমস্যাই সমস্যা নয়। কোনও অসুবিধাই অসুবিধা নয়। ‘হাকুনা মাটাটা’ মানে ‘নো প্রবলেম! ডোন্ট ওরি!’ মাসা হাসিমুখে সব সমস্যা সামলে নেয়, সামলে দেয়। আর সকালে দেখা হলেই হাসি মুখে বলবে ‘জাম্বো। জাম্বো। কারিবু।’
মানে হলো— ‘হ্যালো, স্বাগত।’ ওদের দেশে সব সময়ই তোমাকে ওয়েলকাম!
নিজের দেশ ছেড়ে এতদূরের আফ্রিকা মহাদেশে এমন অচেনা অজানা একজন কৃষ্ণাঙ্গ যুবক সারাদিন হাসিমুখে বারবার যখন বলে, ‘জাম্বো জাম্বো। কারিবু! হাকুনা মাটাটা!’ তখন বুকের মধ্যে কোথায় যেন একটা গভীর আনন্দ নদীর জলের মত ছলাৎছল করে!
চন্দনও নতুন শেখা সোয়াহিলি শব্দটা তাই মাসাকে বারবার বলে, ‘আসান্তে। আসান্তে সানা।’ ধন্যবাদ। অনেক ধন্যবাদ।
গেম ড্রাইভ আবার শুরু হয়েছে। মাসা চেষ্টা করে যাচ্ছে আরও অনেক বন্যপ্রাণকে দেখানোর। প্রাণ ভরিয়ে, তৃষা হরিয়ে এদেখার নামই হলো গেম ড্রাইভ!
প্রিয় টুপিটা হাতে পেয়ে ধুলোগুলো না ঝেড়েই চন্দন হাসিমুখে মাথায় পড়ে নিয়েছে । রত্না বলল, ‘চন্দনদা, আপনার টুপিটা বিখ্যাত হয়ে গেল!’ গৌতম বলল, ‘টুপি ফেরত পাওয়াটা কিন্তু একটা বলার মত রোমাঞ্চকর গল্প!’ সবার শেষে মালিনী ধুলো মাখা টুপিটার দিকে চেয়ে হেসে বলল, ‘একটু আফ্রিকার ধুলো লেগে থাক তোমার প্রিয় টুপিতে। ঝেড়ে ফেলে দিও না।’
Advertisement



