বনানী সিনহা
আজ সুনন্দার নিজেকে বড় একা মনে হয়। বিয়ের ছ’মাসের মাথাতেই তার স্বামী অরিত্র মারা গেছে। বাবার প্রিয় বন্ধু মৃন্ময়কাকুর ছেলে অরিত্রর সঙ্গে বিয়ে হয়। অরিত্র একটা সরকারি অফিসে ইঞ্জিনিয়ার। একটা সাইট ইন্সপেকশন করতে গিয়ে রোড অ্যাক্সিডেন্টে মারা যায়। অরিত্র চার বছর বয়সে নিজের মাকে হারিয়েছিল। আত্মীয়স্বজনের জোরাজুরিতে মৃন্ময়বাবু দ্বিতীয়বার বিয়ে করেন। স্ত্রী পাপিয়া অরিত্রকে মায়ের স্নেহ কোনওদিন দেয়নি। স্বামীকেও স্ত্রীর সুখ দেয়নি। পাপিয়ার পেটে এক কন্যাসন্তান হয়, নাম জিনিয়া। জিনিয়াকে নিয়েই পাপিয়ার দিন কাটত। অরিত্রর মা ছবিদেবীর বিয়ের সময়ে তাঁর বাপের বাড়ি থেকে মালতী নামে এক বিধবা মহিলাকে সঙ্গে পাঠিয়েছিল। এই মালতীই বলতে গেলে অরিত্রকে মানুষ করেছে।
Advertisement
জিনিয়াকে একটু অল্প বয়সেই বিয়ে দিয়ে দেন পাপিয়া। মেয়ে অস্ট্রেলিয়ায় থাকে। ছ’মাস উনি মেয়ের কাছে থাকেন। ছেলের অকালমৃত্যু সহ্য করতে পারেননি মৃন্ময়বাবু। যে জন্য কিছু দিনের মধ্যেই উনি শয্যা নেন, তারপর মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ায়, পাপিয়া পেরেন্টস মাইগ্রেশন নিয়ে পাকাপাকিভাবে মেয়ের কাছে থাকতে শুরু করেন। অরিত্রর মৃত্যুর পরে সুনন্দা ওর অফিসে একটা চাকরি পায়। কিছুদিন পর মালতী বলে,‘আমি এই শূন্য ঘর আর দেখতে পারছি না, বৌদিমণি। আমাকে আমার দেশে পাঠিয়ে দাও। বাকি জীবন আমি মায়ের সংসারে কাটাব।’
Advertisement
সুনন্দা অফিসে চাকরি করে বটে, তবে কারও সঙ্গে তেমন বন্ধুত্ব নেই। সুন্দরী বলে অনেকেই লোলুপ দৃষ্টিতে ওর দিকে তাকায়। এরই মধ্যে অনেকে প্রেমের প্রস্তাব দিয়েছে। অনেকে বিয়ের প্রস্তাবও দিয়েছে। সুনন্দা সব সময়ে একরকম ভয় ও আতঙ্কে থাকত। অফিস ছুটি হলেই সোজা বাড়িতে আসত। নিজেদের গাড়ির ড্রাইভার অফিসে দিয়ে-নিয়ে আসত। উত্তর কলকাতায় সুনন্দার বাপের বাড়ি। বাবা দীর্ঘ রোগভোগের পর মারা গেলেন। সুনন্দার মা একা হয়ে গেছেন। সুনন্দা নিজেও তো বড় একা। মাকে দেখতে মাঝে মাঝে যেত। বাবার মৃত্যুর পর একেবারেই মায়ের কাছে চলে গেল। মাকে দু’বেলা দেখার দু’জন আয়া আছে। বাথরুমে পড়ে মা পা ভেঙেছেন। সুনন্দা কয়েক বছর পরে ভলান্টারি রিটায়ারমেন্ট নিয়ে নিল।
সুনন্দার বাবা এই বাড়িটা সুনন্দার নামে লিখে দিয়ে গেছেন। গ্রামের পুরনো যে বাড়ি, ফসলজমি, টাকাপয়সা… সবই মা-মেয়ের নামে লিখে দিয়ে গেছেন। সুনন্দার শ্বশুরমশাই ওঁর বাড়িটা সুনন্দাকে দিয়ে গেছেন আর শাশুড়িকে নগদ টাকা দিয়েছেন। এখন শ্বশুরবাড়িটা দারোয়ানই দেখাশোনা করে। সুনন্দার মা একদিন হার্ট অ্যাটাকে মারা যান। এখন মায়ের শূন্য বাড়ি আগলে সুনন্দা বসে আছে। সুনন্দার বিয়ের ছ’মাসের মধ্যে স্বামী মারা গেছে। একটা সন্তানও হয়নি। এখন মনটা পাখির মতো এখানে-ওখানে উড়ে বেড়ায়।
আজকাল সুনন্দা বাড়িতে একটা কোচিং ক্লাস খুলেছে। তাতে অন্তত কিছু ছেলেমেয়ের কলকলানি শোনা যাবে। ছাত্রছাত্রীরা ‘ম্যাডাম’ বলতে অজ্ঞান। সব ছাত্রছাত্রীকেই সে বলেছে, ‘তোরা আমায় মা বলে ডাকবি।’ সকলেরই প্রিয় মা সুনন্দা সেন। এখন মাঝে মাঝে পুরনো দিনের কথা মনে পড়ে। আবার ভাবে, ফেসবুকে যদি দু’চারজন বন্ধুবান্ধব করা যায়, তবে সময় কেটে যাবে।
ফেসবুকে নতুন নতুন প্রোফাইল। কয়েকজন পুরনো বন্ধুবান্ধব খুঁজে পেয়েছে। তারা ওর স্কুলের বন্ধু ছিল। আনন্দে সুনন্দার মনটা ভরে গেল। কোনও কোনও প্রোফাইল ওপেন টু অল। একটা প্রোফাইলে চোখ আটকে গেল। একটা নাম দেখল, ‘সবুজ প্রান্তর’। শুনলেই ভাল লাগে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠাল। ইয়াহু মেল নজরে আসে। ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট অ্যাকসেপ্টেড। ইনবক্সে জানাল, ‘আমি মেসেঞ্জারে যুক্ত।’ একটু পরেই সুনন্দা দেখল ‘সবুজ প্রান্তর’-এর পৃষ্ঠাটা। দেখল, একটা নদী চলে গেছে। তার পাশে ধানখেত। আল ধরে মেয়েরা কলসি কাঁখে জল নিয়ে যাচ্ছে। দূরে কিছু ঘরবাড়ি। আকাশটা যেন দিগন্তরেখায় মিশে গেছে। ছবিটা দেখেই সুনন্দার বুকের মধ্যে ধড়াস করে উঠেছে! ভাল করে ছবিটা দেখল। ছবির নীচে ছোট করে লেখা, ‘সুনন্দা সেন’।
আরে, এটা তো আমাদের গ্রামের ছবি! আমারই আঁকা ছবি! স্কুল লাইব্রেরি থেকে হারিয়ে গিয়েছিল। সুনন্দার বুকের মধ্যে কাঁপতে শুরু করেছে। অতীতের সব কথা মনে পড়তে লাগল। অতীত কখন ফিরে আসে? যখন বর্তমান মুখ ফিরিয়ে নেয়। যখন ভবিষ্যৎ কারও জন্য কোনও সম্ভাবনা নিয়ে অপেক্ষা করে না।
প্রতিবার স্কুলের পঞ্চম থেকে একাদশ শ্রেণি অবধি অঙ্কন প্রতিযোগিতা হয়। সব গ্রুপের জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয়— এই তিনটি পুরস্কার দেওয়া হয়। গ্রামের প্রায় অধিকাংশ লোকই প্রতিযোগিতা দেখতে আসত। গ্রামের লোক এবং বিচারকদের ভোটের উপরেই ছবির ফলাফল নির্ভর করে। সে বার সুনন্দার ছবিটি ওর গ্রুপে প্রথম স্থান অধিকার করে। প্রতিবার এগজিবিশন শেষে পুরস্কৃত ছবি ক’টি লাইব্রেরির দেওয়ালে টাঙানো হয়। সে বার টাঙাতে গিয়ে হেডমাস্টার দেখেন, সুনন্দার পুরস্কৃত ছবিটি নেই! সকলেরই মাথায় হাত! মোবাইল, কম্পিউটার বাজারে তখনও আসেনি। সুনন্দার ড্রইং খাতায় রাফ একটা কপি করা ছিল। পরে সেটাকে আবার নতুন করে এঁকে দেয় সুনন্দা, আর সেটাই লাইব্রেরিতে টাঙানো হয়। কে যে ছবিটা চুরি করেছিল! চোরকে খুঁজে পাওয়া গেল না।
সুনন্দাদের গ্রামের স্কুলটির পঠনপাঠন খুবই ভালো ছিল। স্কুলের রেজাল্ট খুব ভালো হতো। স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগও ছিল। যে জন্য বাইরে স্কুলের অনেক ছেলেপুলে ওদের স্কুলে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হত। সুনন্দা লেখাপড়ায় প্রচণ্ড ভালো। খুব ভালো গান গায়। তার ছবি আঁকার হাতেখড়ি মায়ের কাছে। সুনন্দার মা খুব ভালো ছবি আঁকত। সেই বয়সেই সুনন্দার কাছে কত প্রেমের প্রস্তাব আসত! কত উড়ো চিঠি এসেছে! বিশেষ করে যে সব ছেলে বাইরের স্কুল থেকে আসত, তারা সুনন্দার সঙ্গে ভাব জমাতে চেষ্টা করত। সুনন্দা এদের এড়িয়েই চলত। কারণ এ সব ওর পছন্দ ছিল না। বাবা কলকাতায় ব্যাঙ্কে চাকরি করত, যে জন্য ফিরতে একটু রাত হত, মা-ই ওর বেশি বন্ধু ছিল।
এখন এ সব কথা ভাবলে সুনন্দার হাসি পায়। চিঠিগুলোর বয়ান এ রকম ছিল, ‘সুনন্দা, তোমার চোখ দুটো ভীষণ গভীর, ঘন পাতায় ছাওয়া! তোমার চোখে চোখ পড়লে যে কেউ তলিয়ে যাবে। পাহাড়ের মাথায় পুরনো কাঠের পুলের মতো ভয়াবহ!’ আবার কোনও চিঠি, ‘তোমার গোলাপি ঠোঁট যেন পাতলা করে আপেল কেটে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে! গমের মতো তোমার গায়ের রং! শ্রাবণের কালো মেঘের মতো তোমার চুল! কিন্তু তোমার মেজাজ এত তীব্র!’ আরও কত চিঠি… সব মনে পড়ছে না। সবই লেটার বক্সে পড়ত। পোস্ট অফিস থেকে নয়। কারণ, কোনও স্ট্যাম্প থাকত না। এ নিয়ে সুনন্দার মা-বাবা কখনও ঝামেলা করতে যায়নি। এমনও হতে পারে, এদের মধ্যে কেউ সুনন্দাকে সত্যিই ভালবাসত! তবে এই বয়সের প্রেম সাধারণত জলের বুদবুদের মতো হয়। ওই অজানা ছবিচোরকে নিয়ে সুনন্দার মনে বরাবরই একটা কৌতূহল ছিল। তবে সে অনেক বছর আগের কথা। বর্তমানে ‘সবুজ প্রান্তর’ প্রোফাইল থেকে আর কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া গেল না।
অরিত্রদের কাজের মাসি মালতী মাঝে মাঝে সুনন্দাকে ফোন করে। সুনন্দা নিজে থেকেই মাঝে মাঝে মালতীকে কিছু টাকাপয়সা পাঠায়। আবার পুরনো দিনে সুনন্দা ফিরে যায়। হায়ার সেকেন্ডারিতে জেলায় মেয়েদের মধ্যে প্রথম স্থান অধিকার করেছিল সুনন্দা। পরে ইংরেজিতে অনার্স নিয়ে প্রেসিডেন্সিতে ভর্তি হয়। এমএ পাশও করেছিল। বিটি করেছিল। তার আগেই অবশ্য ওর বাবা উত্তর কলকাতার বাড়িটা কমপ্লিট করে ফেলেন। কলেজে ভর্তি হয়ে সে কলকাতার বাড়িতে চলে আসে। সুনন্দা পাশ করার পর বন্ধুর ছেলের সঙ্গে বিয়ে দিয়ে দেন সুনন্দার বাবা। সমস্ত স্মৃতির কাছেই বর্তমান চিরকৃতজ্ঞ হয়ে থাকে।
এই ক’দিন সমানে বৃষ্টি হয়ে চলেছে। ছাত্রছাত্রীরা দু’চারজন পড়তে এসেছে। সুনন্দার শোওয়ার ঘরের পাশে একটা কদমফুলের গাছ আছে। বর্ষাকালে প্রচুর ফুল ফোটে। সুনন্দা ছাদে দাঁড়িয়ে হঠাৎই দু’চার কলি গেয়ে ওঠে, ‘আজি ঝরঝর মুখর বাদরদিনে/ জানি নে, জানি নে, কিছুতে কেন যে মন লাগে না’। আসলে আজকাল গান গাইবার মতো মানসিকতা নেই। পরের দিন বৃষ্টি কমেছে। ছাত্রছাত্রীরা পড়ে বাড়ি চলে গেছে। আজ সুনন্দার জন্মদিন। স্নান সেরে ঠাকুরকে পুজো দিয়েছে। পরের দিন ছাত্রছাত্রীদের খেতে বলেছে। তার কিছু কিছু আয়োজন শুরু করে দিয়েছে। কেন খেতে বলেছে, তা আর জানায়নি। মনে মনে ভাবে, আমাকে উইশ করার মতো আর কেউ নেই।
এখন দুপুরবেলা। হঠাৎ কলিং বেল বেজে উঠেছে। কে যেন একটা ফুলের বোকে পাঠিয়েছে। বোকের মাঝে একটা চিঠি, ‘সুনন্দা, শুভ জন্মদিন!’ ফুলওয়ালা ছেলেটাকে সুনন্দা চেনে। মোড়ের মাথায় ওদের ফুলের দোকান। সুনন্দা ভেবে পায় না, কে পাঠাল! ও লাল গোলাপ ভালবাসে, তাই একতোড়া লাল গোলাপ।
সুনন্দার বাড়ির পাশে একটা কালীমন্দির আছে। প্রত্যেক শনি ও মঙ্গলবার ও পুজো দিতে যায়। সে দিন বিকেলে একটা জবাফুলের মালা কিনছে, কে যেন পিছন থেকে সুনন্দার হাতে প্লাস্টিকে মোড়া একটা কাগজের প্যাকেট ধরিয়ে দেয়। প্রচণ্ড ভিড়। তবু সেই ভিড়ের মধ্যে চোখ ফিরিয়ে দেখে, একটা চেনা চেনা মুখ। ভীষণভাবে সুনন্দা চেনার চেষ্টা করছে। ছেলেটি বলে, ‘সুনন্দা, তোমার ‘সবুজ প্রান্তর’ ছবির চোরকে চিনতে পারলে না?’ গলার স্বরটা চেনা চেনা। আরে ইন্দ্র না? আমাদের তারিণীবালা বিদ্যালয়ের ছাত্র! সুনন্দা কাগজের মোড়ক খুলে দেখে, স্কুলের প্রতিযোগিতায় হারিয়ে যাওয়া ছবিটি। ‘তোমার কাছে এ ছবি কেন?’ তুমি কি ছবিটা চুরি করেছিলে?’
‘হ্যাঁ, আমিই স্কুলের দারোয়ানকে পয়সা দিয়ে এই ছবিটা ম্যানেজ করেছিলাম। আসলে সবাই তোমার পিছনে ফেউ ফেউ করে ঘুরে বেড়াত। তুমি তো কাউকেই পাত্তা দিতে না। তাই তোমার স্মৃতিকে ধরে রাখতেই এটা করেছি। জানো, এ পাড়ায় আমার পিসির বাড়ি। পিসির ছেলে ছোটন তোমায় চেনে। পিসেমশাইও তো তোমাদের বাড়ি যেত। তোমার বাবার বন্ধু যতীন ব্যানার্জি। তোমার নাম আর তারিণীবালা স্কুলের কথা বলতেই বুঝতে পেরেছি, তুমি! আর তুমি মন্দিরে যে আসো, সেটা ছোটন সিআইডিগিরি করে আবিষ্কার করেছে।’
সুনন্দা বলে, ‘বুঝেছি, ফুলও তুমিই পাঠিয়েছ। তাই তো? কারণ, তুমি আমার জন্মতারিখ জানতে।’
‘হ্যাঁ। তুমি রাগ করোনি তো, সুনন্দা?’
‘না, ইন্দ্র। এত দিন পর তোমায় দেখে খুবই ভালো লাগল। কিন্তু তুমি সুদূর পুনে থেকে এখানে কেন?’
‘তুমি তো জানো, ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তাম। আমি কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার। পুনেতে একটা ফার্মে চাকরি পাই৷ স্ত্রী ক্যান্সারে মারা গেছে। ছেলে অস্ট্রেলিয়ায়, ওখানে বিয়ে করে গ্রিন কার্ড পেয়ে গেছে। আমার পুনেতে থাকতে আর ভাল লাগছে না। কলকাতায় একটা কেমিক্যাল ফ্যাক্টরি করব শুনে, ছেলে-বউমা অনেক টাকা পাঠায়। আমারও নিজস্ব কিছু ছিল। ওরা মাঝেমাঝেই টাকা পাঠায়। পিসেমশাইয়ের বাড়ির পাশে একটা ফ্যাক্টরি অনেক দিন বন্ধ। সস্তায় সেটা কিনে নিয়েছি। দমদমে বাবার বানানো একটা বাড়িতে থাকছি। একা মানুষ, বন্ধু বানানোর ইচ্ছে হল। জানো সুনন্দা, তোমার প্রোফাইল দেখেই চিনতে পেরেছি। তুমি আমাদের সকলের প্রিয় পুরনো দিনের সুনন্দা! লোভ সামলাতে পারলাম না, তাই এত দিন পর সামনে এসে নতুন করে ধরা দিলাম। তুমি কিন্তু সুনন্দা, আগের মতোই সুন্দরী আছ।’
সুনন্দা বলে, ‘আজকাল আমার বড় একা লাগে। বারে বারে অতীতের স্মৃতি মনে আসে। তোমার সঙ্গে দেখা হয়ে ভীষণ ভাল লাগছে।’
ইন্দ্র বলে, ‘ছবি চুরির শাস্তি দেবে না তো, সুনন্দা?’
‘নিশ্চয়ই দেব। কিন্তু দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বকবক করবে, না আমার বাড়ি যাবে? আমার বাড়ি থেকে খেয়ে যাবে। বাড়িতে ফোন করে দাও, কেউ যেন অপেক্ষা না করে।’
ইন্দ্র বলে, ‘সুনন্দা, আমার জন্য অপেক্ষা করার মতো কেউ নেই আমার বাসায়। তবে আমার জন্য এখন থেকে কেউ অপেক্ষা করলে, বাউণ্ডুলেপনাটা বন্ধ করব।’
সুনন্দা বলে, ‘আচ্ছা, তাই হবে। এ বার আমার বাড়িতে আমার সঙ্গে চলে এসো তো।’
বাড়ি অবধি হাঁটাপথটুকু দু’জনের কাছেই রঙিন ফুল ছড়ানো এক রাস্তা মনে হয়। এই পথটুকু যেন শেষ না হয়… দু’জনেই ভাবতে থাকে।
Advertisement



