• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

মীরজাফর মহল

ওরা মহলের কাছাকাছি চলে আসে। জাফরকাকু ওদের সাবধান করে। এক এক করে ওরা ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে যেতেই দেখছে আলো জ্বলছে।

অঙ্কিত চিত্র

রাজকুমার শেখ

আম গাছটার নিচে রুবেল বসে ছিল। এখন সবে দুপুর বেলা। চারিপাশে খাঁ খাঁ করছে। বৈশাখের কড়া রোদে সব যেন পুড়ে ছারখার হয়ে যাবে। কদিন ধরেই মীরজাফরের প্রাচীন বাড়িটা থেকে নাকি কীসের শব্দ শোনা যাচ্ছে।

Advertisement

ওকে এসে বলে, নাটনা। রুবেল ওর কথা বিশ্বাস করেনি। নাটনা অনেক সময় বানিয়ে অনেক কথা বলে। রুবেল কিন্তু তা নয়। ও প্রমাণ ছাড়া কথা বলে না। এই কারণে ওদের দলের হেড। জাফর কাকু এই কারণে খুব ভালোবাসেন। কত জায়গায় ওরা গেছে। কত সব ভয়ংকর ওদের অভিযান। কিন্তু রুবেল এবার বেশ দ্বিধায় পড়েছে। এই পুরনো বাড়ির ভেতর থেকে তো তেমন কোনো শব্দ ও শুনতে পায়নি। বাড়ির চারপাশে জঙ্গল। আমবাগান। গভীর নির্জন। এখানে তেমন কেউ আসে না। বেলা বয়ে যায়। রুবেল ওঠে পড়ে। বাড়ির দিকে পা বাড়ায়।

Advertisement


তখন বেশ রাত হয়ে গেছে। ওদের দলবল সবাই এসেছে। জাফরকাকুও সঙ্গে আছেন। ওরা আম গাছের আড়ালে এসে দাঁড়ায়। দূরে একটা রাতচরা পাখি ডুক ডুক করে ডাকছে। বাতাস উঠেছে। এই গরমে বাতাসটা গায়ে লাগতেই একটা আরাম বোধ করে ওরা। এমন সময় মীরজাফরের মহল থেকে কেমন একটা শব্দ ভেসে এলো। জাফরকাকু বলেন, রুবেল, শুনেছিস শব্দটা?
হুম। ওটা কীসের শব্দ কাকু?

আমার তো মনে হল কোনো মেয়ের। গুমরে কাঁদছে। কিন্তু এই জঙ্গলে মেয়ে এলো কীকরে? চল এগোনো যাক।
আজ কৃষ্ণপক্ষ। বেশ অন্ধকার। জোনাকিদের ভিড়। জাফরকাকু গোপন অস্ত্রটা বাগিয়ে ধরে এগোতে থাকে। পিছনে রুবেল ও নাটনা। নাটনা ঠিকই বলেছে। কিন্তু রুবেল ওর কথা উড়িয়ে দিয়েছিল।

ওরা মহলের কাছাকাছি চলে আসে। জাফরকাকু ওদের সাবধান করে। এক এক করে ওরা ভেতরে প্রবেশ করে। ভেতরে যেতেই দেখছে আলো জ্বলছে। যা বাইরে থেকে চোখে পড়বে না। দু’জন লোক বসে। হাতে অস্ত্র। আর দেখছে একটি মেয়ে। যাকে ওরা বেঁধে রেখেছে। হঠাৎ জাফরকাকু ওদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। বেশ ধস্তাধস্তি হয়। জাফরকাকুর হাত কেটে রক্ত পড়ছে। রুবেল আর নাটনা দু’জনকে ওরা বেঁধে ফেলে। কিন্তু ওদের আরও লোক আছে নিশ্চয়ই। মেয়েটিকে মুক্ত করে। দু’জনকে মহল থেকে বের করে আনে। মহল থেকে একটু দূরে সরে আসে। মেয়েটি ওদের দেখে কেঁদে ফেলে। জাফর কাকু বলেন, ভয় নেই মা। তুমি কি করে এখানে এলে?

ওরা কালু ডাকাতের দলবল। আমার বাবার কাছে টাকা চায়। বাবা টাকা দিতে অশ্বীকার করে। তাই আমাকে কিডন্যাপ করে নিয়ে আসে।
জাফরকাকু রুবেলকে বলেন, পুলিশকে খবর দিতে। ইতিমধ্যে ভোর হয়ে আসছে। যখন পুলিশ এলো তখন সবে মাত্র সকাল সাতটা। পুলিশ মেয়েটিকে আর দু’জন ডাকাতের লোককে নিয়ে চলে যায় থানাতে।

নাটনা এখন যেন একটা হিরো হিরো ভাব। চোখে মুখে যেন ব্যোমকেশের ছায়া।

Advertisement