ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজ করতে গিয়ে ২০১৯ সালে বিপত্তি শুরু হয় বউবাজারে। অসংখ্য মানুষকে রাতারাতি ঘরছাড়া হতে হয়। ঘটনার পাঁচ বছর কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত কোনও সুরাহা হয়নি। ফলে কলকাতা পুরসভার ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে প্রতিনিয়ত ওই এলাকার বাসিন্দাদের প্রশ্নের মুখে পড়েন। এ মাসের পুরসভার অধিবেশনে বউবাজার মেট্রো বিপর্যয়ে ‘কেএমআরসিএল’-এর ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তৃণমূল কাউন্সিলর বিশ্বরূপ দে বলেন, ভেঙে পড়া বাড়িগুলোর পুনর্নির্মাণের যে সিদ্ধান্ত মুখমন্ত্রী নিয়েছিলেন, তার আগে প্রয়োজন নকশা মঞ্জুরের। একই সঙ্গে যে বাড়িগুলো অপেক্ষাকৃত কম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলিকে মেরামতির মাধ্যমে বসবাসযোগ্য করে তুলে পুরসভা ফিট সার্টিফিকেট দিতে পারবে কিনা, সে বিষয়ে কলকাতা পুরসভা বিবেচনা করে দেখুক। কলকাতা পুরসভা যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশেষজ্ঞদের দিয়ে যে উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করেছিল, তার রিপোর্ট জমা পড়েছে কিনা তাও জানতে চান তৃণমূল কাউন্সিলর।
ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রো প্রজেক্ট সম্পূর্ণ হওয়ার পরে অন্তত দশ বছর বিপর্যস্ত অঞ্চলের বাড়িগুলির রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব যাতে ‘কেএমআরসিএল’ নেয় সে বিষয়েও পুরসভাকে উদ্যোগ নেওয়ার প্রস্তাব রাখেন তিনি। এদিন তৃণমূল কাউন্সিলরের প্রশ্নের উত্তর দিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ইতিমধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্ট জমা পড়েছে।
Advertisement
অন্যদিকে প্রায় ২৩ টি বাড়ির নকশা মঞ্জুরের কাজ প্রায় শেষ করে ফেলেছে পুরসভা। আগামী ২৭ তারিখ মেয়র পারিষদদের বৈঠকে এই ২৩ টি বাড়িকে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবে পুরসভা। কিন্তু যে বাড়িগুলি মেরামতি করে বসবাসযোগ্য করা সম্ভব, সেই বাড়িগুলিকে ‘ফিড সার্টিফিকেট’ দেওয়ার অধিকার পুরসভার হাতে নেই। কারণ বাড়িগুলো নির্মাণ বা মেরামতির কোনও কাজই পুরসভা করেনি। মেয়র বলেন, ‘কেএমআরসিএল’ কে ১০ বছরের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য নির্দেশ দিতে পারেনা কলকাতা পুরসভা। পুরসভা আবেদন করতে পারে এবং সেই আবেদন ইতিমধ্যেই করা হয়েছে।
Advertisement
এই বিষয় নিয়ে বিরোধী কাউন্সিলররা অবশ্য শাসকদলকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। বিজেপি কাউন্সিলর মিনা দেবী পুরোহিত বলেন, ‘কেন্দ্র শুধুমাত্র টাকা দিতে পারে। কিন্তু কাজ করতে হবে কলকাতা পুরসভা এবং রাজ্য সরকারকে। তাঁরা সেই কাজ করছে না, শুধু মুখে বড় বড় কথা বলছে’। মিনা দেবীর সংযোজন, ‘মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষকে আরও বেশি সজাগ এবং উদ্যোগী হতে হবে। শুধু মুখে কথা বললে হবে না’। বাম কাউন্সিলর মধুছন্দা দেব বলেন, ‘এই বিষয়ে শুধু কথা বললে হবে না। এ ওকে, সে তাকে এরকম করলে চলবে না। এতো মানুষ সমস্যার মধ্যে রয়েছেন। সবাইকে এক জায়গায় বসে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে। কি জানি আদৌ এরা নিজের বাড়িতে ফিরতে পারবে কিনা’।
Advertisement



