• facebook
  • twitter
Thursday, 18 December, 2025

১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত শতদ্রু দত্তর

সকলে চাইছিলেন মেসির কাছে গিয়ে ছবি তুলতে, যাতে স্মৃতি হয়ে থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী যে নিরাপত্তাব্যবস্থা মোতায়েন থাকে, তাকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

লিওনেল মেসির কলকাতা সফর ঘিরে শনিবার যুবভারতীতে হওয়া তুমুল বিশৃঙ্খলার মামলায় মূল আয়োজক শতদ্রু দত্তের জামিনের আবেদন খারিজ করে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দিল বিধাননগর আদালত। স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় শনিবার কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় শতদ্রুকে। রবিবার তাঁকে আদালতে পেশ করে পুলিশ। আইনজীবী দ্যুতিময় ভট্টাচার্যের মাধ্যমে শতদ্রু আদালতে জানিয়েছেন, তিনি কোনও সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করেননি। মাঠে কী হয়েছে, সেই দায় তাঁর নয়। শতদ্রুর আইনজীবী যুবভারতীতে বিশৃঙ্খলার দায় দর্শকদের উপরেই চাপিয়েছেন।

শনিবার লিয়োনেল মেসির কলকাতা সফরের সময় যুবভারতী কার্যত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। অভিযোগ, মেসি মাঠে ঢোকার পর থেকেই তাঁকে ঘিরে ছিলেন ভিআইপিরা। সেই কারণে গ্যালারি থেকে মেসিকে দেখা যায়নি। ১৫–২০ মিনিটের মধ্যেই মাঠ ছেড়ে বেরিয়ে যান মেসি। হাজার হাজার টাকার টিকিট কেটে প্রিয় খেলোয়াড়কে না দেখতে পেয়ে গ্যালারি ও মাঠে ব্যাপক ভাঙচুর শুরু করেন দর্শকরা। গ্যালারি থেকেই মাঠে ছোঁড়া হয় বোতল। অশান্তি ও হিংসার একের পর এক ছবি সামনে আসতে থাকে। একটা সময় পর পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে গেলে লাঠিচার্জ করতে বাধ্য হয় পুলিশ। মেসিকে কলকাতায় আনার মূল উদ্যোক্তা ছিলেন শতদ্রু দত্ত। ঘটনার পরই তাঁকে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। রবিবার শতদ্রুকে বিধাননগর মহকুমা আদালতে পেশ করার সময় বিক্ষোভ দেখায় বিজেপি ও ভুক্তভোগীরা। ওঠে চোর চোর স্লোগান।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অশান্তি সৃষ্টি, ভাঙচুর, হিংসা ছড়ানো, নাশকতামূলক কার্যকলাপ এবং জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার অভিযোগে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৯২, ৩২৪ (৪)(৫), ৩২৬ (৫), ১৩২, ১২১ (২), ৪৫ ও ৪৬ ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে মেনটেন্যান্স অফ পাবলিক অর্ডার (এমপিও) ও প্রিভেনশন অফ ড্যামেজ অফ পাবলিক প্রপার্টি (পিডিপিপি) আইনে কেন তাঁর বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে সেই প্রশ্ন তুলেছেন শতদ্রু। শতদ্রু আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতে জানান, অতীতে যা খ্যাতি তিনি অর্জন করেছিলেন তা এই ঘটনার পর নষ্ট হয়েছে। তাঁর কথায়, ‘কে দোষ করেছে? আমি কোনও সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করিনি। স্টেডিয়ামে কী হয়েছে, তার জন্য আমার বিরুদ্ধে কেন মামলা হবে?’

Advertisement

যদিও শতদ্রুর দাবি অস্বীকার করে সরকারি আইনজীবী অমিতাভ লালা আদালতে সওয়াল করেন, মেসির সামনে কে যাবেন, কে যাবেন না, তার দায়িত্ব আয়োজকেরই। তিনি নিজের লোকদের নিয়ে এমন ঘিরে ছিলেন, যে বাকি লোকেরা মেসিকে দেখতে পাননি। সেই কারণে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়। প্রমাণ সংগ্রহ, বয়ান নেওয়া-সহ মোট ১০টি কারণ দেখিয়ে শতদ্রুকে পুলিশ হেফাজতে চেয়ে আদালতে আবেদন করেন সরকারি আইনজীবী। সেই আবেদন মঞ্জুর করে ১৪ দিনের পুলিশ হেফাজত দেন বিচারক।

মেসি সফরের ব্যর্থতার দায় দর্শকদের উপরে চাপিয়ে শতদ্রুর আইনজীবী বলেন, ‘ব্যর্থতা আসলে মানুষের। সকলে জানেন, মেসি এক জন আন্তর্জাতিক তারকা। এটা ঠিক, অনেক টাকা দিয়ে টিকিট কেটে দর্শকেরা সেখানে গিয়েছিলেন। সকলে চাইছিলেন মেসির কাছে গিয়ে ছবি তুলতে, যাতে স্মৃতি হয়ে থাকে। কিন্তু পরিস্থিতি অনুযায়ী যে নিরাপত্তাব্যবস্থা মোতায়েন থাকে, তাকেও গুরুত্ব দেওয়া উচিত। যাঁরা নিরাপত্তার দায়িত্বে ছিলেন, তাঁরা জানবেন কী ব্যবস্থা ছিল। এখন কাউকে দায়ী বলাটা সম্ভব না। তদন্ত করে যেটা পাওয়া যাবে, জানতে পারবেন। বিষয়টি কোর্টে বিচারাধীন।’

Advertisement