• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

উত্তরপ্রদেশে ফের চিতাবাঘের আক্রমণ, প্রাণ হারালেন এক কৃষক

প্রাথমিক তদন্তে বন দপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, চিতা বাঘটি কাছাকাছি কোনও ঝোঁপের মধ্যে লুকিয়ে ছিল এবং মুন্না লালকে একাকী পেয়ে আক্রমণ করে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

চিতা বাঘের আক্রমণে মর্মান্তিক ঘটনা। উত্তর প্রদেশের লখিমপুর খেরিতে প্রাণ হারালেন ৩৫ বছরের এক কৃষক। আক্রান্তের নাম মুন্না লাল। তিনি এখানকার ধৌরাহরা বনাঞ্চলের অন্তর্গত লোকাই পুরওয়া গ্রামের বাসিন্দা। নিকটবর্তী আখ খেতে গবাদি পশুর খাবার সংগ্রহ করতে গিয়ে এই আক্রমণের শিকার হন।

খবর পেয়ে স্থানীয় লোকজন এবং পরিবারের সদস্যরা ঘটনাস্থলে ভিড় করেন। এই ঘটনায় ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তাঁরা মৃতদেহ ময়নাতদন্তে পাঠাতে অস্বীকার করেছেন, তার আগে চিতা বাঘটিকে খুঁজে বের করার দাবি জানিয়েছেন। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মৃত মুন্না লালের পরিবারে রয়েছেন তাঁর স্ত্রী পূজা দেবী(৩০) এবং পাঁচটি স্কুলে পাঠরত শিশু। মুন্নালাল পরিবারের একমাত্র উপার্জনকারী ব্যক্তি ছিলেন। তিনি কৃষিকাজ করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। তাঁর মৃত্যুতে স্ত্রী এবং ওই পাঁচ শিশু আর্থিকভাবে অসহায় ও চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছে। ঘটনার পর পরিবারে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে।

Advertisement

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মুন্না লাল রবিবার সকাল ৭টা নাগাদ বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু দুপুর গড়িয়ে গেলেও তিনি ঘরে ফেরেননি। তাঁর পরিবারের সদস্যরা চিন্তিত হয়ে তাঁর খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। অনেক খোঁজাখুঁজির পর বাড়ি থেকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে পাশের ডোন্ড্রা পণ্ডিতপুরওয়া গ্রামের একটি মাঠের কাছে মুন্নার দেহ উদ্ধার হয়।

Advertisement

প্রাথমিক তদন্তে বন দপ্তরের আধিকারিকদের অনুমান, চিতা বাঘটি কাছাকাছি কোনও ঝোঁপের মধ্যে লুকিয়ে ছিল এবং মুন্না লালকে একাকী পেয়ে আক্রমণ করে। মৃতের দেহে বেশ কিছু ক্ষতচিহ্ন লক্ষ্য পাওয়া গিয়েছে। চিতাটি ওই কৃষকের দেহ বেশ কিছুদূর টেনে নিয়ে গিয়েছিল বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। কাছাকাছি এলাকায় তাঁর পায়ের একটি অংশও পাওয়া গিয়েছে।

উল্লেখ্য, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। গত একমাসে ধৌরাহরা এবং পার্শ্ববর্তী বনাঞ্চলে চারটি চিতা বাঘের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। বনরক্ষক নৃপেন্দ্র চতুর্বেদী জানিয়েছেন যে, চিতাবাঘের গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য এলাকায় ইতিমধ্যেই ট্র্যাপ ক্যামেরা স্থাপন করা হয়েছে। সোমবার বিকেলের মধ্যে একটি খাঁচা বসানো হবে। ধরা পড়লে প্রাণীটিকে আটক করে শান্ত করার চেষ্টা করা হবে। এজন্য উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে অনুমতি চাওয়া হয়েছে।

ঘটনার পর ধৌরাহরার বিধায়ক বিনোদ শঙ্কর অবস্তি ঘটনাস্থলে পৌঁছলে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বন বিভাগের প্রতিক্রিয়ায় তীব্র অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি কর্মকর্তাদের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ দেন। বিধায়ক বলেন, ‘এটি একটি গুরুতর সমস্যা। প্রাণীটি ক্রমশ আক্রমণাত্মক এবং বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বিলম্ব না করে এটিকে আটক করতে হবে। যতক্ষণ না ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, কোনও কর্মকর্তা এই এলাকা ছেড়ে যাবেন না।’

Advertisement