• facebook
  • twitter
Friday, 4 October, 2024

‘আমি প্রতিযোগিতায় নামিনি৷ তারকা হতে চাইনি৷’

মুম্বই: ভারতীয় হিন্দি সিনেমার গান৷ সাগরতীরে পায়ে-পায়ে ছুটছেন নায়িকা৷ ‘তানহা তানহা ইনহা পে জিনা…৷’ নব্বইয়ের দশকে এই জনপ্রিয় গানে বুঁদ হননি, এমন বলিউড দর্শক পাওয়া কঠিন হবে৷ তখন ‘রঙ্গিলা’ নায়িকার প্রেমে হাবুডুবু খেত একটা প্রজন্ম৷ নব্বইয়ের সেই জনপ্রিয় নায়িকা ঊর্মিলা মাতন্ডকারের বলিউডে হাতেখড়ি মাত্র ৬ বছর বয়সে ৷ ১৯৭৭ সালে ‘করম’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে বড়

মুম্বই: ভারতীয় হিন্দি সিনেমার গান৷ সাগরতীরে পায়ে-পায়ে ছুটছেন নায়িকা৷ ‘তানহা তানহা ইনহা পে জিনা…৷’ নব্বইয়ের দশকে এই জনপ্রিয় গানে বুঁদ হননি, এমন বলিউড দর্শক পাওয়া কঠিন হবে৷ তখন ‘রঙ্গিলা’ নায়িকার প্রেমে হাবুডুবু খেত একটা প্রজন্ম৷ নব্বইয়ের সেই জনপ্রিয় নায়িকা ঊর্মিলা মাতন্ডকারের বলিউডে হাতেখড়ি মাত্র ৬ বছর বয়সে ৷ ১৯৭৭ সালে ‘করম’ ছবিতে শিশুশিল্পী হিসেবে বড় পর্দায় পা রাখেন ঊর্মিলা৷ তারপর শিশুশিল্পী হিসেবে ‘কলিযুগ’, ‘মাসুম’সহ একাধিক ছবিতে কাজ করেন তিনি৷
লাস্যময়ী ঊর্মিলাকে জহুরির চোখে চিনেছিলেন রামগোপাল বর্মা৷ আমির খান ও জ্যাকি শ্রফের সঙ্গে ‘রঙ্গিলা’ সিনেমা তাঁকে আর পেছনে ফিরে তাকাতে দেয়নি৷ ‘জুদাই’, ‘সত্য’, ‘কউন’, ‘পিঞ্জর’, ‘পেয়ার তুনে কেয়া কিয়া’—একের পর এক হিট ছবিতে লাস্যের পাশাপাশি অভিনয়েও নজর কেড়েছিলেন তৎকালীন বলিউডের অন্যতম ব্যস্ত এই অভিনেত্রী৷ কাজ করেছেন একাধিক মারাঠি, তেলেগু ও তামিল ছবিতে৷ ২০০৩ সালে চন্দ্রপ্রকাশ দ্বিবেদির ‘পিঞ্জর’ ছবিতে মনোজ বাজপেয়ির বিপরীতে অসাধারণ অভিনয় দক্ষতার ছাপ রাখেন ঊর্মিলা৷
‘রঙ্গিলা’ ছবিতে ঊর্মিলা প্রসঙ্গে বলতে গিয়ে পরিচালক রামগোপাল ভার্মা লিখেছেন, ‘আমার “রঙ্গিলা” বানানোর প্রাথমিক উদ্দেশ্যই ছিল ক্যামেরায় ঊর্মিলার সৌন্দর্যকে চিরকালের জন্য ধরে রাখা৷’
সেই ব্যস্ত ও লাস্যময়ী অভিনেত্রী ধীরে ধীরে যেন হারিয়ে গেলেন বলিউড থেকে৷ বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই হয়তো হুট করে তাঁকে চিনবেন না, তাঁর প্রজন্মের অনেক দর্শক হয়তো ভুলে গিয়েছেন নামটাও৷ শুধু পর্দায় নয়, বলিউডপাড়ার যেকোনো অনুষ্ঠানে তারকাদের ভিড়ে তাঁকে চোখে পড়ে না সচরাচর৷
মাঝেমধ্যে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের কল্যাণে ঊর্মিলার খবর পাওয়া যায়৷ জন্মদিন বা বিশেষ কোনো দিনে খবরের শিরোনাম হন৷ তবে যতটা বিনোদনজগতের তারকা, তার চেয়ে বেশি হয় রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হিসেবে৷ হারানো জনপ্রিয়তা বা পরিচিতি, ফেলে আসা দিন নিয়ে তবু খেদ নেই এই অভিনেত্রীর৷ কারণ, তারকা নয়, একজন ভালো অভিনেত্রী হতে চেয়েছিলেন ঊর্মিলা৷
এক সাক্ষাৎকারে এই অভিনেত্রী বলেন, ‘আমি প্রতিযোগিতায় নামিনি৷ তারকা হতে চাইনি৷ যেটুকু কাজ করেছি, তাতেই পূর্ণতার স্বাদ পাই৷ পেশাদার জীবন নিয়ে আমি খুশি আছি৷’ জানা গেছে, আর দশজন তারকার মতো তিনি নিজের ব্যবস্থাপক ও জনসংযোগ কর্মকর্তাও রাখেননি৷
তাঁর মতে, ‘ফেলে আসার ক্যারিয়ার নিয়ে আমার কোনো কষ্ট নেই, কোনো দিন হয়ও না৷ কেনইবা হবে? আমি যখন ভালো কাজ খুঁজছি, অন্যরা তখন পত্রিকার প্রচ্ছদ হতে ব্যস্ত৷ আমি অনেক রকম কাজ করতে পারায় ইচ্ছেমতো প্রস্তাব নাকচ করেছি৷’
ঊর্মিলার দাবি, সব সময় নিজের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেছেন তিনি৷ নিজেকে বারবার ভেঙেছেন এবং গড়েছেন৷ তিনি বলেন, ‘যখন আমার সময়ের সহশিল্পীরা আমার “রঙ্গিলা” লুক নকল করতে ব্যস্ত, আমি তখন এগিয়ে গিয়েছি “জুদাই” নিয়ে৷ বিভিন্ন চরিত্রের মধ্যে আমি কেবল নিজের সেরাটুকু ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি৷’
২০১৬ সালের ৩ মার্চ কাশ্মীরের ব্যবসায়ী পরিবারের ছেলে মোহসিন আখতার মিরকে বিয়ে করেন৷ পারিবারিকভাবেই তাঁদের বিয়ে হয়৷ বিয়ের পর থেকে তাঁরা স্থায়ীভাবে মুম্বইয়ে আছেন৷ মোহসিন তাঁর থেকে ৯ বছরের ছোট৷ ২০১৪ সালের পর বলিউড থেকে অদৃশ্যই হয়ে যান লাস্যময়ী অভিনেত্রী৷ পরে যোগ দেন রাজনীতিতে৷ এ পদক্ষেপ সম্পর্কে তিনি জানান, সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার ছিল, তাই এসেছেন৷
২০১৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে উত্তর মুম্বাই থেকে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন ঊর্মিলা৷