পহেলগাম কাণ্ডের পর ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনা যুদ্ধ পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে। এই অবস্থায় দেশের অভ্যন্তরে ও সীমান্ত এলাকায় যেকোনও পরিস্থিতির মোকাবিলায় আগাম সতর্কতা হিসেবে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিতে শুরু করেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এবার দেশের সব রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সরকারকে অসামরিক প্রতিরক্ষা বিধি অনুযায়ী জরুরি বা আপৎকালীন ক্ষমতা জারির নির্দেশ দিয়েছে অমিত শাহের দপ্তর। শুক্রবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত দোভাল ও আইবি প্রধানের সঙ্গে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের একটি জরুরি বৈঠক হয়। এরপরই রাজ্যগুলিকে এই নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে।
পাশাপাশি, কেন্দ্র সরকার সেনাপ্রধানকে টেরিটোরিয়াল আর্মি মোতায়েনের পূর্ণ ক্ষমতা দিয়েছে। প্রশাসনিক ধারনা অনুযায়ী, প্রতিরক্ষা মন্ত্রক সেনাপ্রধানকে ক্ষমতা বৃদ্ধি করে টেরিটোরিয়াল আর্মি প্রয়োগের ক্ষমতা দিয়ে দেওয়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ভারতীয় বাহিনীর ধারে ও ভারে শক্তিবৃদ্ধি ঘটবে। প্রচলিত সেনাবাহিনীর পাশাপাশি টেরিটোরিয়াল আর্মিতে নথিভুক্ত অর্থাৎ সংরক্ষিত সেনা কিংবা সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অফিসারদের ফ্রন্টলাইনে ডাকার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে দেশের সেনাপ্রধানকে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের নির্দেশিকায় শুক্রবার সব রাজ্যের স্বরাষ্ট্র সচিব ও প্রশাসনকে সিভিল ডিফেন্স বিধি অনুযায়ী আপৎকালীন ক্ষমতা জারির কথা বলা হয়েছে। এমনটাই সূত্রের খবর। সিভিল ডিফেন্স রুলস ১৯৬৮-র ১১ নম্বর বিধি অনুসারে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারগুলিকে আগাম সতর্কতামূলক বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। যদি শত্রু শিবির থেকে হামলা ধেয়ে আসে, তাহলে রাজ্যগুলিকে বিশেষ ক্ষমতা প্রয়োগ করে তা প্রতিহত করতে হবে। জাতীয় সুরক্ষা বিপন্ন হলে রাজ্য সরাসরি জরুরি পদক্ষেপ করতে পারবে এবং স্থানীয় প্রশাসনকে রোজকার কাজের থেকেও অতি দ্রুততার সঙ্গে কাজ করতে হবে।
এই বিশেষ আপৎকালীন ক্ষমতাগুলির মধ্যে রয়েছে, নাগরিকদের জীবন-সম্পত্তি রক্ষায় নিজ দায়িত্বে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ, অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা যেমন বিদ্যুৎ, জল সরবরাহ ও পরিবহণ ব্যবস্থা সচলম ও স্বাভাবিক রাখা। স্থানীয় প্রশাসন যেমন পুরসভাগুলি ও পঞ্চায়েতগুলিকে তাদের নিজস্ব তহবিল থেকে এইসব জরুরিকালীন পরিষেবা জারি রাখতে হয়। এইসব স্থানীয় প্রশাসনকে অন্যান্য সময়ের চেয়ে অনেক বেশি দ্রুততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে হয়।
এই বিধি অনুযায়ী, রাজ্য সরকারগুলিকে অতিরিক্ত ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছে। যেমন, কোনও শত্রু পক্ষের আক্রমণ হলে রাজ্য সরকারগুলি নিজের দায়িত্বে বাসিন্দাদের জীবন ও সম্পত্তি সুরক্ষায় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারে। পাশাপাশি লক্ষ্য রাখতে হয়, নাগরিকের জীবনধারণে অনুকূল ও অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার ঘাটতি যাতে না হয় সেই বিষয়টিও।