কাশ্মীরের পহেলগামে নিরীহ পর্যটকদের হত্যার ঘটনায় মূল অভিযুক্ত লস্কর-ই-তৈবার জঙ্গি আসিফ শেখ ও আদিল হুসেন ঠোকারের বাড়ি বৃহস্পতিবার রাতেই গুঁড়িয়ে দিয়েছিল সেনা। এবার সোপিয়ান, কুলগাম এবং পুলওয়ামায় ৫ জঙ্গির বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল নিরাপত্তা বাহিনী। এর মধ্যে লস্কর-ই-তৈবার এক কমান্ডারের বাড়িও রয়েছে। অবশ্য হামলায় সঙ্গে সরাসরি জড়িত কারও নাগাল পাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে কুলগামের কাইমো এলাকার ঠোকরপোরা থেকে দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জঙ্গিদের কাজে তাঁরা সহযোগিতা করেছিলেন বলে অভিযোগ।
লস্কর-ই-তৈবার কমান্ডার শহিদ আহমেদ কুট্টির বাড়ি ছিল সোপিয়ানের চটিপোরা গ্রামে। শুক্রবার রাতে সেখানে পৌঁছয় নিরাপত্তা বাহিনী। ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় তাঁর বাড়ি। গত ৩-৪ বছর ধরে জঙ্গি কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত ছিলেন কুট্টি। কুলগামের মাতালাম এলাকার বাসিন্দা জাহিদ আহমেদের বাড়িও ভেঙে দেয় বাহিনী। জাহিদও গত কয়েক বছর ধরে জঙ্গি কাজকর্মের সঙ্গে জড়িত বলে অভিযোগ।
Advertisement
পুলওয়ামার মুরানে বাড়ি ছিল আহসান উল হক নামে এক জঙ্গির। ২০১৮ সালে পাকিস্তান থেকে জঙ্গি প্রশিক্ষণ নিয়ে আসেন তিনি। সম্প্রতি কাশ্মীরে ঘাঁটি গেড়েছিলেন আহসান। সেই খবর পাওয়ার পর তাঁর বাড়ি গুঁড়িয়ে দিল সেনা। ২০২৩ সালে লস্কর-ই-তৈবায় যোগ দেন এহসান আমেদ শেখ। তাঁর দোতলা বাড়িও গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। পুলওয়ামার কাচিপোড়ায় হারিস আহমেদের বাড়িও শুক্রবার রাতে বিস্ফোরক দিয়ে গুঁড়িয়ে দেয় বাহিনী।
Advertisement
এর আগে পহেলগামে হামলাকারী দুই জঙ্গি আদিল হুসেন ঠোকর এবং আসিফ শেখের বাড়ি শুক্রবার ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে আদিলের বাড়িটি আইইডি বিস্ফোরণ ঘটিয়ে উড়িয়ে দেওয়া হয়। আর শুক্রবার আসিফের বাড়িটি ভেঙে ফেলা হয় বুলডোজার দিয়ে।
বৃহস্পতিবারই বিহার থেকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, ‘ভারত অবশ্যই প্রত্যেক সন্ত্রাসবাদীকে খুঁজে বার করবে। তাঁদের চিহ্নিত করবে এবং শাস্তি দেবে। শাস্তি দেবে তাদের মদতদাতাদেরও।’ মোদীর এই হুঁশিয়ারির পরেই গত দু’দিনে কমপক্ষে ৭ জন জঙ্গির বাড়ি মাটিতে মিশিয়ে দেওয়া হল।
প্রসঙ্গত, মঙ্গলবার পহেলগামে পর্যটকদের উপর জঙ্গি হামলার ঘটনায় মোট ২৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। নিহতদের মধ্যে ২৫ জন ভারতীয় এবং এক জন নেপালি নাগরিক রয়েছেন। সেই ঘটনায় পাক জঙ্গিদের পাশাপাশি আসিফ এবং আদিলের নাম উঠে এসেছে। অভিযোগ, পর্যটকদের ধর্ম পরিচয়ের ভিত্তিতে বেছে বেছে গুলি করা হয়েছে। নির্দিষ্ট একটি ধর্মের মানুষ ছাড়া কাউকে রেয়াত করা হয়নি। এই ঘটনার পর থেকেই দেশজুড়ে উত্তেজনা তৈরি হয়েছে। তিন বাহিনীকেই সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিদেশ মন্ত্রক।
Advertisement



