টাইম ম্যাগাজিনের ভোলবদল, ‘বিভাজনের নেতা’ থেকে ‘ঐক্যের প্রতিভূ’ হয়ে গেলেন মােদি

ভােটের ফলাফল বেরােনাের ঠিক আগেই নরেন্দ্র মােদিকে ‘বিভাজনের নেতা’ বলে প্রতিবেদন বের করে এক সপ্তাহের মধ্যেই ঢােক গিলতে হল টাইম নামক সাময়িক পত্রিকাটিকে।

Written by SNS New Delhi | May 30, 2019 3:04 pm

টাইম ম্যাগাজিনের প্রচ্ছদ যেখানে মোদিকে 'বিভাজনের নেতা' বলা হয়েছিল (ছবি-ট্যুইটার)

ভােটের ফলাফল বেরােনাের ঠিক আগেই নরেন্দ্র মোদিকে ‘বিভাজনের নেতা’ বলে প্রতিবেদন বের করে এক সপ্তাহের মধ্যেই ঢােক গিলতে হল টাইম নামক সাময়িক পত্রিকাটিকে। বিপুল ভােটে জয় পাওয়ার পরই নরেন্দ্র মোদিকে টাইম সাময়িক পত্রিকাটি এক প্রতিবেদনে ‘ঐক্যবদ্ধ ভারতের প্রতিভূ’ বলে আখ্যা দিয়েছে।

প্রতিবেদনে তাদের আগের অবস্থান পরিবর্তন করে এক জবাবদিহির ভঙ্গিমায় উল্লেখ করা হয়েছে, একজন বিভাজনের নেতা কিভাবে রাতারাতি ঐক্যের নেতায় পরিণত হলেন তার বিস্তারিত। এর আগে কোনও প্রধানমন্ত্রী এমন একক প্রচেষ্টায় শুধু ক্ষমতাই ধরে রাখেননি, তার জয়ের ব্যবধানকেও বিপুলভাবে বাড়িয়েছেন। এটা নাকি সম্ভব হয়েছে, দেশের জাতপাতের রাজনীতির উর্ধ্বে উঠে মোদি শ্রেণিবিভাজনকে প্ররিরােধ করতে সমর্থ হয়েছেন।

প্রতিবেদক মনােজ লারওয়া প্রধানমন্ত্রী মোদির দ্বিতীয়বার প্রধানমন্ত্রীর পদ দখলের নেপথ্যে দেশের প্রান্তিকস্তরের দরিদ্র মানুষদের জন্য কল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণই সম্ভব করেছে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী পদের দাবিদার হিসেবে অতিসাধারণ এক পরিবারের সদস্য বলে তিনি নিজেকে তুলে ধরেছেন। যার কোনও রাজনৈতিক বা বংশ কৌলিণ্যই নেই।

প্রতিবেদনে নােটবন্দিকে সাময়িক কষ্ট এবং তা নাকি ‘দীর্ঘমেয়াদি লাভ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন প্রতিবেদক। তিনি ভারতে ডিজিটাল যুগের অবতারণা করার জন্য মোদিকে কৃতজ্ঞতা জানান। কারণ এতে দরিদ্র মানুষই নাকি বেশি বেশি করে উপকৃত হচ্ছেন। এতে রাজস্বের পরিমাণ যেমন বেড়েছে, তেমনই জন ধন যােজনাও জনপ্রিয় হয়েছে। এমনকী সামাজিক প্রগতিমূলক কর্মসূচি গ্রহণের ফলে দরিদ্র হিন্দু, মুসলিম এবং অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষের দ্রুত দারিদ্র মােচন সম্ভব হচ্ছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করছেন প্রতিবেদক।

উল্লেখ্য এর আগের প্রতিবেদনে প্রতিবেদক আতিশ তাসির মোদি সরকারে কঠোর সমালােচনা করে বলেছিলেন, ‘সংখ্যালঘু মুসলিম, খ্রিস্টান ও অন্যান্য সম্প্রদায়ের মানুষ মোদি সরকারে নির্যাতনের শিকার।’ এর ফলে নাকি ভারত তার বৌদ্ধিক মর্যাদা হারাচ্ছে দ্রুততর লয়ে। টাইম ম্যাগাজিনের ওই প্রতিবেদন বিরােধীদের মোদির বিরুদ্ধে প্রচারে উৎসাহ যুগিয়েছিল।

তবে বিজেপির পক্ষে টাইম ম্যাগাজিনের এই প্রতিবেদনকে কুৎসামূলক ও প্রধানমন্ত্রীর ভাবমূর্তি কালিমালিপ্ত করার জন্যই প্রকাশিত বলে প্রতিবাদও জানানাে হয়েছিল। এজন্য মূলত প্রতিবেদক আতিশ তাসিরকেই দায়ী করা হয়েছিল। আতিশ তাসির- স্বনামধন্য সাংবাদিক তাবলিন সিং এবং প্রয়াত পাকিস্তানি রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী সলমন তাসিরের পুত্র।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি টাইম ম্যাগাজিনে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, টাইম ম্যাগাজিন বিদেশি নীতিতে চলে। প্রতিবেদকও পাকিস্তানের রাজনৈতিক পরিবারের সদস্য। এতেই তার ভারত সম্পর্কে ধ্যানধারণা অনুমান করা যায়।

চলতি সাধারণ নির্বাচনের শেষ ভােটপর্বের আগের দিন অর্থাৎ ১৮ মে মোদি এই মন্তব্য করেন। সংসদীয় দলের নেতা নির্বাচিত হওয়ার পর ৩০ মে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে মোদি সদস্যদের ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ, সবকা বিশ্বাস’ পাঠ করাবেন বলে জানিয়েছেন।