‘অপারেশন সিঁদুর’-এ ভারতীয় যুদ্ধ বিমান ধ্বংসের কথা স্বীকার করে নিলেও এবার ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান এই যুদ্ধে ভারতের সাফল্যের উপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন। চিফ এফ ডিফেন্স স্টাফ বা সিডিএস তুলে ধরেছেন এই যুদ্ধে ভারত পাকিস্তানের কী কী ক্ষয়-ক্ষতি করেছে। সেই সঙ্গে বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টায় ভারতকে হারাবে ভেবেছিল পাকিস্তান, কিন্তু মাত্র ৮ ঘণ্টায় ওদের হাঁটু ভেঙে দিয়েছি। বুধবার পুণের সাবিত্রীবাই ফুলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে এই কথা বলেন চিফ এফ ডিফেন্স স্টাফ।
এদিন ভারতের সেনার ক্ষয়ক্ষতি নিয়ে বিশেষ একটা গুরুত্ব দেননি সিডিএস অনিল চৌহান। তাঁর সাফ কথা, কতটা ক্ষয়ক্ষতি হল সেটা গুরুত্বপূর্ণ নয়, পরিণাম কী হল, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ। ভারতীয় সেনা আদর্শ সেনার মনোভাব নিয়েই চলে। তিনি জানান, ‘৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানকে এমন প্রত্যাঘাত করেছি যে, যুদ্ধের ভাবনা ছেড়ে তাঁরা ফোন তুলে নিয়েছিল। সঙ্গে সঙ্গে নয়াদিল্লিকে জানিয়েছিল, আলোচনা চায়।’
সিডিএস ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান প্রসঙ্গে বেশ কিছু নতুন তথ্য দিয়েছেন। সেই তথ্যে তিনি তুলে ধরেছেন, কীভাবে মাত্র ৮ ঘণ্টার মধ্যে পাকিস্তানের সব পরিকল্পনা বানচাল করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। মাত্র ৮ ঘণ্টায় ‘পাকিস্তান বধ’ প্রসঙ্গে জেনারেল চৌহান বলেছেন, ‘৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ভারতকে হারানোর স্বপ্ন দেখেছিল পাকিস্তান। সেই লক্ষ্যেই পরপর ড্রোন ও মিসাইল হামলা শুরু করে ইসলামাবাদ। ভেবেছিল দু’দিনের মধ্যেই হয়তো আমরা হেরে যাব। কিন্তু পাকিস্তানের এই পরিকল্পনা ৮ ঘণ্টাতেই ভেস্তে দিয়েছি।’
এ বিষয়ে সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এসেছে যে, এই যুদ্ধে চীনের তৈরি করা পাকিস্তানের এয়ার ডিফেন্স ধ্বংস করে দিয়েছে ভারত। মাত্র ২৩ মিনিটেই ভারতের বায়ুসেনা বিভাগ তা ধ্বংস করতে সক্ষম হয়। এ বিষয়ে ভারতীয় সেনা দাবি করেছিল যে, কোথাও পাশ কাটিয়ে, আবার কোথাও অকেজো করে হামলা চালিয়ে পাকিস্তানের চিনা এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমকে ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছিল ভারত। আর এই পদক্ষেপের ফলে ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’ অভিযান চূড়ান্তভাবে সফল হয়েছিল।
প্রসঙ্গত পহেলগামের প্রত্যাঘাত হিসেবে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর জেরে ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। চার দিনের সেই যুদ্ধে পাকিস্তান দাবি করে, তারা ভারতের একাধিক যুদ্ধ বিমান ধ্বংস করেছে। সম্প্রতি সিঙ্গাপুর সফরে গিয়ে ভারতের সেনা সর্বাধিনায়ক অনিল চৌহান ভারতীয় যুদ্ধ বিমান ধ্বংসের কথা স্বীকার করে নিলেও, তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, ‘ক্ষয়ক্ষতি যুদ্ধের অঙ্গ। কিন্তু ‘আমাদের কাছে যুদ্ধবিমান ধ্বংসটা গুরুত্বপূর্ণ নয়। কেন সেটা ধ্বংস হল, সেটাই গুরুত্বপূর্ণ।’
ইতিমধ্যে ৪ দিনের ভারত-পাক সংঘাতে পাকিস্তানের কী কী ক্ষতি হয়েছিল তা সামনে এসেছে। এই সীমিত সময়ের যুদ্ধে পাকিস্তানের ৬টি ফাইটার জেট, ২টি নজরদারি বিমান ধ্বংস করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। এছাড়া একটি সি-১৩০ এয়ারক্রাফট সহ ৩০টির বেশি মিসাইলও ধ্বংস করতে সক্ষম হয়েছে ভারত। সাংবাদিক বৈঠকে ভারতীয় সেনা আগেই দাবি করেছিল, পাকিস্তানের সেনাঘাঁটিকে তাঁরা প্রথমে নিশানা করেনি। কিন্তু পাকিস্তান যে যুদ্ধবিমান ব্যবহার করে ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণের চেষ্টা হয়েছে, তা ধ্বংস করা ছাড়া উপায় ছিল না।