রাজ্যে লকডাউনের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত

কেন্দ্রের সিদ্ধান্তেই সায় দিল রাজ্য। সোমবার নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠকের পর রাজ্যে লকডাউনের মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

Written by SNS New Delhi | June 9, 2020 12:04 pm

লকডাউন (Representational Image: IANS)

কেন্দ্রের সিদ্ধান্তেই সায় দিল রাজ্য। সোমবার নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠকের পর রাজ্যে লকডাউন’এর মেয়াদ ৩০ জুন পর্যন্ত বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একই সঙ্গে আনন্দ বা শোকের অনুষ্ঠানে এবং ধর্মস্থানে একসঙ্গে ২৫ জন পর্যন্ত জমায়েতের ছাড়পত্র দেওয়া হল। সেইসঙ্গে কলকাতা ও শহরতলির রাস্তায় বাইসাইকেল চলার ছাড়পত্র মিলল। তবে রাত ন’টা থেকে ভোর পাঁচটা পর্যন্ত অবাধে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকল।

গত শনিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিল ৩০ জুন পর্যন্ত দেশেজুড়ে লকডাউন জারি থাকবে। তবে দোকানপাট, অফিস পুরোপুরি বন্ধ না রেখে ধাপে ধাপে খুলবে। যার নাম দেওয়া হয়েছিল আনলক ফেজ ওয়ান। সেই সময় অবশ্য এই রাজ্যে ১৫ জুন পর্যন্ত লকডাউন জারি থাকার কথা বলেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর মধ্যে অবশ্য গণপরিবহন চালু, ব্যবসা বাণিজ্যের পরিধি বৃদ্ধি, অফিস চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল রাজ্য সরকার।

কিন্তু পয়লা জুন আনলক ফেজ ওয়ান শুরু হওয়ার পর থেকে রাজ্যে করোনায় আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছিল। কিন্তু এই শিথিলতার ফলে জনজীবন যেমন ক্রমশ স্বাভাস্কি হয়েছে- তমনই পাল্লা দিয়ে বেড়েছে সত্ৰমণও। সোমবার সেকথা স্বীকার করে নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, গণপরিবহণ চালু হয়েছে। পরবর্তী দিনে আরও বেশি করে সংক্রমণের আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে। তাই প্রত্যেক সচেতন হন। নিয়মাবলী মেনে চলুন।

তবে লকডাউনের মেয়াদ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এদিন আরও কিছু ছাড়ের কথা জানানো হয় নবান্ন থেকে। যেমন কোনও ধর্মীয় সভায় একসঙ্গে ২৫ জন পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে পারবেন। অন্যদিকে বিয়ে বাড়ি কিংবা শ্রাদ্ধানুষ্ঠানে ২৫ জনকে উপস্থিত থাকার অনুমতি দেওয়া হল। তবে কোনও বড় জমায়েত করা চলবে না। আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা, মেট্রো রেল, থিয়েটার হল, সিনেমা হল, বিনোদন পার্ক, জিমনাশিয়াম, সুইমিং পুল, বার, অডিটোরিয়াম বন্ধ রাখতে হবে।

তবে কনটেইনমেন্ট জোনের মধ্যে লকডাউন কঠোরভাবে মানতে হবে বলে জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে আন্তঃরাজ্য যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনও বিধিনিষেধ আর থাকছে না। মালপত্র কিংবা মানুষের যাতায়াতের জন্য আরও কোনও অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন হবে না।

এছাড়া আগামী ৩০ জুন পর্যন্ত শহর এবং শহরতলির রাস্তায় বাই সাইকেল চালানোর অনুমতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তিনি এদিন স্মরণ করিয়ে দেন সাবধানে প্যাডেল করবেন। অফিসযাত্রীরাও সাইকেলে করে অফিস আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে একটু দেরি হলেও মহাভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে না মন্তব্য করেন মমতা। অর্থাৎ কর্মস্থলে হাজিরার ক্ষেত্রে আরও কিছুটা শিথিলতা জারি করল রাজ্য সরকার।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন জানান, আগামী ১০ জুন পর্যন্ত ভিন রাজ্য থেকে আরও অনেক ট্রেন আসবে। সব মিলিয়ে ১১ লক্ষেরও বেশি লোক ঢুকে যাবে এই সময়ের মধ্যে। ফলে সতর্কতা জারি রাখতেই হবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পরিযায়ী শ্রমিক ইস্যু নিয়ে বিরোধীদের কটাক্ষ করে মমতা বলেন, দু-তিন মাস ঘরে বসে থাকার পরে কোনও কোনও রাজনৈতিক পরিযায়ীদের নিয়ে অযথা মন্তব্য করছেন।

মমতার মতে, এই রাজ্যে বাস করা ভিন রাজ্যের শ্রমিকরা অনেক নিশ্চিন্তে রয়েছে। তাই ট্রেন পাঠানো হলেও বাংলা থেকে ফিরতে চাননি এই রাজ্যে থাকা ভিন রাজ্যের পরিযায়ী শ্রমিকরা।