শিখ ভাবাবেগকে সম্মান দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ইমরান খানকে : মোদি

পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে কর্তারপুর করিডরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। (Photo: IANS)

ভারতবর্ষ তথা দক্ষিণ এশিয়ার ইতিহাসে আজকের দিনটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে লেখা হয়ে গেল। একই দিনে কয়েক ঘন্টার তরফে ভারতের বুকে ঘটে যাওয়া দুটি ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী থাকল তামাম বিশ্ব– অযোধ্যা মামলার রায় দান, কর্তারপুর করিডর উদ্বোধন।

স্বাধীনতার পর থেকে ভারত-পাক সম্পর্ক তামাম বিশ্বের নজর কেড়ে নিয়েছে, ভারত-পাক সীমান্তে প্রতিনিয়ত কি ঘটছে তা জানতে উৎসুক সকলেই আজও সেই টান টান উত্তেজনা বহাল রেখেই ভারত পাক সীমান্তে কর্তারপুর করিডরের উদ্বোধন হয়ে গেল।

পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে কর্তারপুর করিডরের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। তিনি বলেন, শিখ সম্প্রদায়ের ধর্মীয় ভাবাবেগ ও অনুভূতিকে সম্মান দেওয়ার জন্য পাক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে ধন্যবাদ জানাই।


জম্মু ও কাশ্মীরের ওপর থেকে বিশেষ সাংবিধানিক মর্যাদা প্রত্যাহার করে নেওয়ার পর থেকে ভারত-পাক সম্পর্কে তিক্ততা আরও তেঁতাে হয়েছে, পাকিস্তানের তরফে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, রেল যােগাযােগ এমনকি মেল পরিষেবাও বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এমত অবস্থায় ভারত-পাক সীমান্তে কর্তারপুর করিডর উদ্বোধন যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ– ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা ভিসা ছাড়া কর্তারপুর করিডর দিয়ে দরবার সাহিবে যেতে পারবেন, তবে পাসপাের্ট সঙ্গে রাখতে হবে। পাসপাের্ট না থাকলে অনুমতি দেওয়া হবে না।

প্রধানমন্ত্রী মােদি ইন্টিগ্রেটেড চেক পােস্টের উদ্বোধন করার পর ভারত থেকে তীর্থযাত্রীদের প্রথম ব্যাচ পাকিস্তানের দরবার সাহিবের উদ্দেশ্যে রওনা দিলেন। প্রধানমন্ত্রী মােদি টুইট করে লেখেন, কর্তারপুর করিডর খুলে দেওয়া হল- গুরু নানক দেবের আশীর্বাদে এটা সম্ভব হয়েছে, দেশের ওপর তাঁর আশীর্বাদ বহাল থাকুক। এখন থেকে ওই করিডর দিয়ে হাজার হাজার তীর্থযাত্রী পাকিস্তানের দরবার সাহিবে যেতে পারবেন। ভারতীয়দের অনুভুতিকে সম্মান দেওয়ার জন্য প্রতিবেশি দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ।

শিখার মসিয়াহানে বিএসএফ ক্যাম্পে জমায়েতে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, শিখ সম্প্রদায়ের কাছে আজ এক ঐতিহাসিক দিন। কর্তারপুর করিডর তৈরি করার পর দরবার সাহিবে খুব সহজে পৌছনাে সম্ভব হবে। পাঞ্জাব প্রশাসন, শিরােমণি গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি সহ সমস্ত পক্ষকে এই অল্প সময়ের মধ্যে করিডর নির্মাণে সহায়তা করার জন্য ধন্যবাদ।

তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকেও ধন্যবাদ। কর্তারপুর করিডর ইস্যু নিয়ে ভারতের অনুভূতিকে তিনি সম্মান জানিয়েছেন। শুধু তাই নয়, শিখ ধর্মাবলম্বীদের ভাবাবেগের গভীরতাকে বুঝে সেই লক্ষ্যে এগিয়ে কর্তারপুর করিডরের স্বপ্নকে সফল করেছে। উদ্বোধনের আগে তিনি সুলতানপুর লােধিতে বাবা সাহিব গুরুদ্বারে গিয়ে পূজো করেন।

কর্তারপুর করিডর পাঞ্জাবের দেরা বাবা সাহিবকে ভারত-পাক সীমান্ত থেকে চার কিলােমিটার দুরে পাক-পাঞ্জাবের নরােয়াল জেলায় প্রবার সাহিবকে জুড়ে দেবে। শিখ তীর্থযাত্রীদের প্রথম গ্রুপে পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী অমরিন্দর সিং, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমােহন সিং, অভিনেতা সানি দেওল, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হরদীপ পুরি, নভজ্যোত সিং সিধু, হরসিমরত কউর বাদল রয়েছে। পাকিস্তানের দিকে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানও করিডরের উদ্বোধন করেন।