মোবাইলে একটি জনপ্রিয় গেম খেলছিল তেরো বছর বয়সি এক কিশোর গেম খেলতে খেলতে আচমকা সেই কিশোর প্রাণ হারায়। এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে লখনউয়ের ইন্দিরানগর থানা এলাকায়। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত কিশোরের নাম বিবেক। সে মোবাইল গেমে অত্যধিক আসক্ত ছিল। সে, তার পরিবারের সঙ্গে শিবাজীপুরমে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকছিল গত এক বছর ধরে।
২ বছর আগে তার বাবা মারা যান। সে তার মা প্রেম কুমারি দেবী এবং তিন বোন, পিঙ্কি, চাঁদনী আর অঞ্জুর সঙ্গে থাকত। বিবেক মায়াবতী কলোনির একটি দোকানে কাজ করত এবং বুধবার তার সাপ্তাহিক ছুটি ছিল। জানা গিয়েছে সেদিন সকাল থেকে সে মোবাইল গেম খেলছিল। বাড়িতে তার পরিবারের অন্য সদস্যরাও ছিলেন। বিবেকের বোন কিছুক্ষণ পর এসে দেখে যে তার দাদা বিছানায় ঘুমোচ্ছে আর তার মোবাইল ফোনটি পাশে পড়ে রয়েছে। বিবেক ঘুমোচ্ছে ভেবে তার বোন আর তাকে ডাকেনি।
Advertisement
এরপর অনেকক্ষণ বিবেকের কোনো সাড়া না পাওয়ায় বাড়ির লোকেদের সন্দেহ হয়। বিবেককে তাঁরা হাসপাতালে নিয়ে যান এবং সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ঠিক কী কারণে বিবেকের মৃত্যু হয় তা এখনও স্পষ্ট নয়।অনেক বিশেষজ্ঞদের মতে যেহেতু বিবেক মোবাইল গেমে আসক্ত ছিল তার ‘সাডেন গেমার ডেথ’ হয়ে থাকতে পারে। জানা গিয়েছে এর আগেও অনেক গেমারদের এভাবে গেম খেলতে খেলতে আচমকা মৃত্যু হয়েছে।
Advertisement
আমেরিকার ন্যাশনাল হেল্থ ইনস্টিটিউট (এনআইএইচ)-এর ন্যাশনাল লাইব্রেরি মেডিসিন (এনএলএম)-এর পোর্টালে একটি গবেষণাপত্র আপলোড করা হয়। সেখানে দাবি করা হয়েছে যে, বিশ্বে এমন বেশ কিছু মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে যেগুলির সঙ্গে মোবাইল গেমের যোগাযোগ রয়েছে। এই মৃত্যুর ঘটনাগুলির সঙ্গে সংযোগ রয়েছে ‘ইন্টারনেট গেমিং ডিসঅর্ডার’-এর। গবেষণায় বলা হয়েছে, মোবাইল গেম খেলতে খেলতে পৃথিবীতে মোট ২৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
গবেষণায় আরও বলা হয়েছে, ২০০২ সাল থেকে ২০২১ সালের মধ্যে এই মৃত্যুর ঘটনাগুলি ঘটেছে। জানা গিয়েছে, মোবাইল গেম খেলতে খেলতে যাঁদের মৃত্যু হয়েছে তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই পুরুষ এবং তাঁদের বয়স ১১ থেকে ৪০-এর মধ্যে। দাবি করা হয়েছে, এর মধ্যে অর্ধেকের বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়ার মত জায়গায়।ওই গবেষণায় দাবি করা হয়েছে, মৃতদের মধ্যে পাঁচ জন প্রাণ হারিয়েছেন পালমোনারি এম্বলিজ়মের কারণে, দু’জনের মৃত্যু হয়েছে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের ফলে। কার্ডিয়াক অ্যারিথমিয়ার কারণেও প্রাণ হারিয়েছেন কিছু গেমার।
Advertisement



