সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, প্রার্থীদের নামে ফৌজদারি মামলা থাকলে জানাতে হবে ওয়েবসাইটে

রাজনীতিতে দুর্বিত্তায়ন বন্ধ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী অশ্বিনীকুমার উপাধ্যায় ও আরও কয়েকজন।

Written by SNS New Delhi | February 14, 2020 12:19 pm

সুপ্রীম কোর্ট (File Photo: IANS)

অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ একটি নির্দেশিকা আজ জারি করেছে দেশের শীর্ষ আদালত। নির্বাচনে কোনও রাজনৈতিক দলের মনােনীত প্রার্থীর বিরুদ্ধে অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার অভিযােগে মামলা চললে তার বিস্তারিত তথ্য সেই দলের ওয়েবসাইটে আপলােড করাতে হবে। এমনই নির্দেশ দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট ।

উল্লেখ্য, এই দাবি জানিয়ে বেশ কিছু আবেদন বহুদিন ধরেই জমা পড়েছিল সুপ্রিম কোর্ট সহ একাধিক আদালতে। আজকের এই রায়ে রাজনৈতিক মহলে স্বাভাবিকভাবেই মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। যদিও সর্বভারতীয় বা আঞ্চলিক কোনও রাজনৈতিক দল এখনও পর্যন্ত এ ব্যাপাকে কোনও প্রতিক্রিয়া জানায়নি।

তবে বৃহত্তর সমাজের অনেকেই বলছেন, সুপ্রিম কোর্টের এই নির্দেশে বেশ বিপাকে পড়তে পারে রাজনৈতিক দলগুলি। কেননা, সে ক্ষেত্রে ঠগ বাছতে গাঁ উজার হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে। বিশেষ করে নির্বাচনী প্রচারে প্রায় প্রতিটি দলই নিজেদের সাধু প্রমাণ করে প্রতিদ্বন্দ্বী দলের প্রার্থীদের দুর্নীতিগ্রস্ত প্রমাণ করার চেষ্টা করে থাকে। সাধারণ ভােটার থাকে অন্ধকারে। ফলে অনেক সময়ই প্রার্থীকে ভাল করে না জেনেই তারা ভােট দিতে থাকেন। দেশে যেভাবে রাজনীতির অপরাধকরণ বাড়ছে, তা ঠেকাতেই এই নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের।

শীর্ষ আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী, ক্রিমিনাল কেস চলছে এমন কাউকে নির্বাচনে প্রার্থী হিসাবে দাঁড় করালে মনােনয়নের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ওই প্রার্থীর বিরুদ্ধে থাকা অপরাধমূলক কাজের অভিযােগ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পার্টির অফিশিয়াল ওয়েবসাইটে আপলােড করতে হবে। একই তথ্য ওই একই সময়সীমার মধ্যে সােশ্যাল মিডিয়া ও সংবাদপত্রে প্রকাশিত করতে হবে। এছাড়া কেন অপরাধমূলক কাজে জড়িত থাকার অভিযােগ সত্ত্বেও ওই ব্যক্তিকে ভােটের টিকিট দেওয়া হয়েছে, তার ব্যাখ্যাও আপলােড করতে হবে ওই রাজনৈতিক দলকে।

এই একই তথ্য মনােনয়নের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে নির্বাচন কমিশনকেও লিখিতভাবে জানাবে রাজনৈতিক দলগুলি। কোন প্রার্থীর জেতার সম্ভাবনা কতটা, শুধুমাত্র সেটাই ভােটে লড়ার ক্ষেত্রে বিবেচিত হতে পারে না বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আইনজীবী অশ্বিনীকুমার উপাধ্যায়ের আবেদনের ভিত্তিতে।

রাজনীতিতে দুর্বিত্তায়ন বন্ধ করার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন আইনজীবী অশ্বিনীকুমার উপাধ্যায় ও আরও কয়েকজন।

২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে পাঁচ বিচারপতির এক বেঞ্চ কেন্দ্রীয় সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, যাদের বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধের অভিযােগ আছে, তারা যাতে ভােটে দাঁড়াতে না পারেন সেজন্য আইন করা হােক। বিজেপি নেতা তথা আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকার ও নির্বাচন কমিশনের বিরুদ্ধে অভিযােগ করে বলেছিলেন, অপরাধীদের রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে তারা পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেয়নি। এর পরেই এই তাৎপর্যপূর্ণ রায় দেয় সুপ্রিম কোর্ট।