দিল্লি থেকে পথকুকুরদের সরিয়ে দেওয়ার প্রাথমিক নির্দেশ নিয়ে বিতর্ক শুরু হওয়ায় সেই রায় পরিবর্তন করে সুপ্রিম কোর্ট। নতুন রায় প্রদানকারী বেঞ্চের নেতৃত্বাধীন বিচারপতি বিক্রম নাথ জানিয়েছেন, তিনি এখন কেবল পশুপ্রেমী মানুষদের নয়, কুকুরদেরও আশীর্বাদ পাচ্ছেন। গত ১১ আগস্ট দিল্লির রাস্তা থেকে সমস্ত পথকুকুর সরিয়ে একটি আলাদা আশ্রয়কেন্দ্রে রাখার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সমাজের বিভিন্ন মহল থেকে এই রায়ের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ ওঠে। পশুপ্রেমীরা রাস্তায় নামেন, সোশাল মিডিয়ায় তৈরি হয় তীব্র জনমত। এই প্রেক্ষাপটে প্রধান বিচারপতি বিআর গবই মামলাটির বেঞ্চ পরিবর্তন করে তা বিচারপতি বিক্রম নাথের নেতৃত্বাধীন তিন সদস্যের বেঞ্চে পাঠান।
২২ আগস্ট সংশোধিত রায়ে জানানো হয়, পথকুকুরদের শুধুমাত্র টিকাকরণ ও বন্ধ্যাত্বকরণের জন্য রাস্তা থেকে সরানো যাবে। প্রক্রিয়া শেষে তাদের আগের নির্দিষ্ট জায়গায় ফিরিয়ে দিতে হবে। তবে যেসব কুকুর র্যাবিসে আক্রান্ত বা অতিমাত্রায় আক্রমণাত্মক আচরণ করে, তাদের ফেরানো হবে না। পাশাপাশি রাস্তায় কুকুরদের খাওয়ানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে। সম্প্রতি কেরলের তিরুঅনন্তপুরমে ‘মানুষ ও পশুর সহাবস্থান’ বিষয়ক একটি কনফারেন্সে অংশ নিয়ে বিচারপতি নাথ বলেন, ‘আমার অদ্ভুত কাজের জন্য অনেক দিন ধরেই আইন মহলে পরিচিত আমি। কিন্তু পথকুকুরেরা আমাকে শুধু এই দেশে নয়, সারা বিশ্বের নাগরিক সমাজে পরিচিত করে তুলেছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ।’
Advertisement
তিনি আরও বলেন, ‘শুধু পশুপ্রেমীরা নয়, অনেকে বলছেন কুকুরেরাও আমাকে আশীর্বাদ করছে।’ এই মামলায় সহায়তার জন্য দেশের প্রধান বিচারপতির প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানান তিনি। উল্লেখ্য, বিচারপতি বিক্রম নাথ বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের অন্যতম অভিজ্ঞ বিচারপতি। বিচারপতি গবইয়ের পরে ২০২৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে তিনি দেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিতে পারেন। সংশোধিত রায়ের মাধ্যমে আদালত একদিকে জনস্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার প্রশ্নে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, অপরদিকে পশুদের অধিকারের ক্ষেত্রেও মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রেখেছে – এমন মতামত বিশিষ্ট মহলের।
Advertisement
Advertisement



