• facebook
  • twitter
Saturday, 19 April, 2025

শিখবিরোধী দাঙ্গায় আমৃত্যু কারাদণ্ড সজ্জন কুমারের

লোহার রড এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় তারা

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ইন্দিরা গান্ধীর মৃত্যুর পর শিখ-বিরোধী দাঙ্গায় প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ সজ্জন কুমারকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের শাস্তি দিয়েছে আদালত। তবে তাঁর মৃত্যুদণ্ডের আর্জি খারিজ হয়ে গিয়েছে। দিল্লির রাউজ অ্যাভিনিউ আদালত মঙ্গলবার ১৯৮৪ সালের শিখ-বিরোধী দাঙ্গার সময় সরস্বতী বিহার মামলার রায় ঘোষণা করেছে। রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক কাবেরী বাওয়েজা।

১২ ফেব্রুয়ারি প্রাক্তন কংগ্রেস নেতা ও চার বারের সাংসদ সজ্জন কুমারকে দোষী সাব্যস্ত করে আদালত। ১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর দিল্লির ক্যান্টনমেন্ট এলাকার সরস্বতী বিহারে শিখ ধর্মাবলম্বী বাবা ও ছেলেকে খুনের ঘটনায় সজ্জন সরাসরি জড়িত ছিলেন বলে জানিয়েছে দিল্লির বিশেষ আদালত।

১৯৮৪ সালের ১ নভেম্বর। পশ্চিম দিল্লির রাজ নগরে সর্দার যশোবন্ত সিং এবং সর্দার তরুণ দীপ সিংকে হত্যা করা হয়েছিল। ওই দিন সন্ধে সাড়ে চারটে নাগাদ একজল হামলাকারী রাজ নগর এলাকায় যশোবন্ত সিং-এর বাড়িতে গিয়ে চড়াও হয়। লোহার রড এবং লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালায় তারা। অভিযোগকারীর দাবি, ওই জনতার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সজ্জন কুমার। সজ্জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি উন্মত্ত জনতাকে আক্রমণের জন্য উস্কানি দিয়েছিলেন। তারপরেই ১ নভেম্বর ওই শিখ পরিবারের ৫ জন সদস্যকে হত্যা করা হয় এবং ওই এলাকার একটি গুরুদ্বার জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। নিহতদের বাড়িতে ভাঙচুর ও লুটপাট, অগ্নিসংযোগের মতো ঘটনা ঘটায় উত্তেজিত জনতা। এছাড়াও, দিল্লির সুলতানপুরীতে এক ব্যক্তিকে খুনের ঘটনায় জড়িত ছিলেন তিনি।

সজ্জন কুমার সেই সময় আউটার দিল্লির লোকসভা থেকে কংগ্রেস সাংসদ ছিলেন। এর প্রায় চার দশক পর মঙ্গলবার দিল্লির বিশেষ আদালতে যশোবন্ত সিংহ এবং তাঁর ছেলে তরুণ দীপ সিংহকে হত্যার মামলায় রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক কাবেরী বাওয়েজা।

অভিযোগকারী অর্থাত যশোবন্তের স্ত্রী এবং রাষ্ট্রের তরফে সজ্জনের মৃত্যুদণ্ডের আর্জি জানানো হলেও আদালতে তা খারিজ হয়ে যায়।
বর্তমানে তিহাড় জেলে বন্দি প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ। যে কোনও মামলায় দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার আগে সুপ্রিম কোর্টের বিধান মেনে আসামির মানসিক অবস্থার রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়। সেইমতো তিহাড় জেলের কাছেও সজ্জনের রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছিল আদালত। সজ্জনের বয়স এখন ৭৯ বছর। বার্ধক্য ছাড়াও জেলে থাকাকালীন তাঁর আচরণ সন্তোষজনক বলে মনে করেছে আদালত। তাই তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়নি।

উল্লেখ্য, খুনের ঘটনায় সর্বোচ্চ সাজা হল মৃত্যুদণ্ড। সজ্জন কুমারের অপরাধের যে মাত্রা তাতে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড নয়, মৃত্যুদণ্ডের সামিল বলে মনে করছে শিখ সংগঠনের প্রতিনিধিরা। দিল্লি শিখ গুরুদ্বার ম্যানেজমেন্ট কমিটির সাধারণ সম্পাদক জগদীপ সিং কাহলন বলেন, ‘সজ্জন কুমারের মতো একজন অপরাধী মৃত্যুদণ্ড না পাওয়ায় আমরা হতাশ। আদালতের রায়কে সম্মান জানিয়ে বলছি এই মামলায় মৃত্যুদণ্ড হলে শান্তি পেতাম।’