• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধিতা করে ভারতের পাশে রাশিয়া

বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও সার্বভৌম দেশের স্বাধীন ভাবে বাণিজ্যসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন শুল্কনীতির কড়া সমালোচনা করে ভারতের পাশে দাঁড়াল রাশিয়া। বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনের তরফে জানানো হয়েছে, কোনও সার্বভৌম দেশের স্বাধীনভাবে বাণিজ্যসঙ্গী বেছে নেওয়ার অধিকার থাকা উচিত। অন্য কোনও রাষ্ট্র সেই সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে, তা ‘অবৈধ ও অন্যায্য’ বলেই বিবেচিত হবে।

ট্রাম্প প্রশাসন সম্প্রতি ঘোষণা করেছে, রাশিয়া থেকে তেল আমদানি চালিয়ে যাওয়ায় ভারতের উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক চাপানো হবে। এর ফলে ২৭ আগস্ট থেকে আমেরিকায় ভারতীয় পণ্য রপ্তানিতে মোট শুল্ক দাঁড়াবে ৫০ শতাংশে। এই সিদ্ধান্ত কার্যত ভারতের বিরুদ্ধে এক অর্থনৈতিক চাপ তৈরির কৌশল বলেই মনে করছে আন্তর্জাতিক মহল।

Advertisement

এই পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার ক্রেমলিনে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ বলেন, ‘বিভিন্ন দেশকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্পর্ক ছিন্ন করতে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই ধরনের বিবৃতিকে বৈধ মনে করি না। কোনও সার্বভৌম দেশের নিজস্ব জাতীয় স্বার্থ অনুযায়ী বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপন করার অধিকার থাকা উচিত।’

Advertisement

যদিও পেসকভ সরাসরি ভারতের নাম উল্লেখ করেননি, তবুও কূটনৈতিক মহলের মতে, ট্রাম্পের শুল্কনীতির বিরোধিতা করে রাশিয়া কার্যত নয়াদিল্লির পাশেই দাঁড়িয়েছে।

উল্লেখ্য, ২০২২ সালে ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পরে পশ্চিমি বিশ্ব রাশিয়ার উপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা চাপায়। সেই সময় আন্তর্জাতিক বাজারে রাশিয়ার তেলের দাম পড়ে যায় এবং ভারত সেই সুযোগ নিয়ে রাশিয়া থেকে খনিজ তেল আমদানির পরিমাণ কয়েক গুণ বাড়িয়ে দেয়। বর্তমানে ভারতের মোট তেল আমদানির প্রায় ৩৫ শতাংশই আসে রাশিয়া থেকে। এতে আপত্তি জানিয়ে আমেরিকা বারবার ভারতকে রাশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে আসছে।

তবে ভারতের অবস্থান বরাবরই স্পষ্ট। বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, ‘ভারত তার জাতীয় স্বার্থ এবং আন্তর্জাতিক বাজারদরের ভিত্তিতে বাণিজ্যনীতি নির্ধারণ করে। যেখান থেকে সাশ্রয় হয়, সেখান থেকেই তেল কেনা হবে।’ ভারতের মতে, ট্রাম্পের অতিরিক্ত শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত ‘অন্যায্য’ এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্যনীতির পরিপন্থী।

এমন অবস্থায় রাশিয়ার এই সমর্থনকে কূটনৈতিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারত ও রাশিয়ার দীর্ঘদিনের কৌশলগত সম্পর্কের এই মুহূর্তে আরও একবার দৃঢ় প্রতিফলন ঘটল আন্তর্জাতিক মঞ্চে। মার্কিন চাপের মুখে নিজেদের অবস্থান বজায় রাখার জন্য নয়াদিল্লিকে কূটনৈতিকভাবে যে মস্কো পূর্ণ সমর্থন দিচ্ছে, তা এদিন স্পষ্ট করে দিল ক্রেমলিন।

Advertisement