দীর্ঘ ১৩ বছরের রাজনৈতিক ও পারিবারিক দূরত্ব ভেঙে অবশেষে ‘মাতোশ্রী’-তে প্রবেশ করলেন মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনার (এমএনএস) প্রধান রাজ ঠাকরে। রবিবার, শিব সেনা (উদ্ধব গোষ্ঠী) নেতা উদ্ধব ঠাকরের জন্মদিন উপলক্ষে রাজ ঠাকরের এই আগমন রাজনৈতিক মহলে জোর চর্চার জন্ম দিয়েছে।
২০০৫ সালে শিব সেনা ছেড়ে বেরিয়ে গিয়ে ২০০৬ সালে নিজস্ব দল গঠন করেছিলেন বালাসাহেব ঠাকরের ভাইপো রাজ ঠাকরে। সেই থেকে দুই তুতো ভাইয়ের সম্পর্ক ছিল তিক্ততার। বালাসাহেব ঠাকরের প্রয়াণের পর রাজ ঠাকরে শেষবারের মতো ‘মাতোশ্রী’তে প্রবেশ করেছিলেন। তারপর দীর্ঘদিন দুই পরিবারের মধ্যে দূরত্ব বজায় থেকেছে। কিন্তু এবার জন্মদিনের নিমন্ত্রণ গ্রহণ করে রাজের ‘মাতোশ্রী’তে যাওয়া ঠাকরে পরিবারের সম্পর্কের এক নতুন অধ্যায়ের সূচক বলেই মনে করছেন অনেকে।
উদ্ধব ও রাজের এই পারিবারিক পুনর্মিলন শুধু আবেগই নয়, এর পেছনে রয়েছে বাস্তব রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জও। সম্প্রতি মহারাষ্ট্র বিধানসভা নির্বাচনে দুই দলই হতাশাজনক ফল করেছে। মুম্বই কর্পোরেশন নির্বাচনে অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে একত্রে লড়ার চিন্তাভাবনা করছে দুই পক্ষই। এই প্রেক্ষাপটে একত্রে দেখা যাওয়া শুধু সৌজন্য সাক্ষাৎ নয়, বরং ভবিষ্যতের জোট রাজনীতির ইঙ্গিত বলেই রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্র সরকারের ত্রিভাষা নীতির বিরুদ্ধে একমঞ্চে আন্দোলনে নেমেছিলেন উদ্ধব ও রাজ। তারই ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন ইস্যুতে একে অপরকে সমর্থন করতে দেখা যাচ্ছে দুই নেতাকে। এই বন্ধন যদি দীর্ঘস্থায়ী হয়, তবে মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক সমীকরণে তা বড়সড় পরিবর্তন আনতে পারে। একসময় একে অপরকে এড়িয়ে চলা দুই তুতো ভাইয়ের এমন ঘনিষ্ঠতা ঠাকরে পরিবারের ঐতিহাসিক ঐক্যের প্রতীক হয়ে উঠতে পারে। আর রাজনীতির ময়দানে তা নতুন জোট রাজনীতির পথ প্রশস্ত করতে পারে বলেই মনে করছেন মহারাষ্ট্রের রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা।