ফের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে বিতর্ক। সম্প্রতি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত ‘আমার সোনার বাংলা’ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক জগতে নানা তর্ক-বিতর্ক, সমালোচনার ঝড় ওঠে। এর মধ্যেই এবার কর্ণাটকের বিজেপি সাংসদ বিশ্বেশ্বর হেগড়ে কাগেরি দাবি করেছেন, ‘জন গণ মন’ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নাকি রচনা করেছিলেন ব্রিটিশরাজকে স্বাগত জানাতে। তাঁর মতে, দেশের জাতীয় সঙ্গীত হওয়া উচিত ছিল ‘বন্দে মাতরম’। তাঁর এই মন্তব্যের পরই ফের সমালোচনার ঝড় উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। পাল্টা এর বিরুদ্ধে তোপ দেগেছে কর্ণাটকের শাসকদল কংগ্রেস। কংগ্রেসের মতে, এই ধারণা সম্পূর্ণ ভ্রান্ত।
কারওয়ারের হোন্নাভারায় এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে গিয়ে বিজেপি সাংসদ বিজেপি সাংসদ বিশ্বেশ্বর হেগড়ে মন্তব্য করেন, ‘জন গণ মন’ ব্রিটিশদের স্বাগত জানাতে লেখা হয়েছিল। তবে ‘বন্দে মাতরম’ গানটি জাতীয় সঙ্গীত করার জন্য দাবি উঠেছিল। আমাদের দেশের নেতারা দুটি গানকেই রেখে দেন। আজ আমরা বিষয়টি মেনে নিয়েছি।’
Advertisement
বিজেপি সাংসদের এই মন্তব্যের পরই তাঁকে নিশানা করে তোপ দাগেন কর্ণাটকের মন্ত্রী প্রিয়াঙ্ক খাড়গে। কংগ্রেস সভাপতির পুত্র লেখেন, ‘আরও একটা দিন, আরও একটি আরএসএস-এর হোয়াটসঅ্যাপ ইতিহাস। বিজেপি সাংসদ কাগেরির দাবি, ‘আমাদের দেশের জাতীয় সঙ্গীত নাকি ব্রিটিশ। সম্পূর্ণ ভুল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ১৯১১ সালে ‘ভারত ভাগ্য বিধাতা’ লিখেছিলেন। সেই গানের প্রথম স্তবক ‘জন গণ মন’ হয়। গানটি ১৯১১ সালে ভারতের জাতীয় কংগ্রেসের কলকাতা অধিবেশনে গাওয়া হয়। এটা ব্রিটিশ রাজকে সম্মান জানাতে গাওয়া হয়নি।’ আরএসএস-এর বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে খাড়গে বলেন, এই সংগঠন ‘সংবিধান, তেরঙ্গা ও জাতীয় সঙ্গীতকে অসম্মান করার নজির রয়েছে। এই ভাইরাসের প্রতিকার হওয়া প্রয়োজন।’
Advertisement
জন গণ মন ব্রিটিশদের স্বাগত জানাতে লেখা এমন দাবি নিয়ে বিতর্ক আগেও উঠেছে রাজনৈতিক মহলে। তবে ইতিহাসবিদরা স্পষ্টই ব্যাখ্যা করেছেন, এই দাবি অসত্য। ১৯১১-র ১১ ডিসেম্বর কবি রচনা করে ভারত ভাগ্য বিধাতা। পরের দিনই রাজা পঞ্চম জর্জকে ভারতের সম্রাট হিসেবে ঘোষণা করার জন্য করোনেশন পার্কে দিল্লি দরবারের আয়োজন করা হয়। এ জন্যই এমন ভুল ধারণার সৃষ্টি হয় যে গানটি সেইদিনের রাজ্যাভিষেক অনুষ্ঠানের জন্যই লেখা হয়েছিল।
এই বিতর্ক এমন সময়ে উঠেছে যখন কেন্দ্র সরকার বন্দে মাতরম সঙ্গীতের ১৫০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠান ৭ নভেম্বর উদযাপন করছে। শুক্রবার ১৫০টি জায়গায় এই গান গাওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লিতে ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।
Advertisement



