নাগরিকত্ব আইনের প্রতিবাদের বিক্ষোভ আছড়ে পড়ল দিল্লিতেও

উত্তরপূর্ব ভারতের পর খােদ রাজধানী শহরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মেতে ওঠার পাশাপাশি তারা দুটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়।

Written by SNS New Delhi | December 16, 2019 2:21 pm

রাজধানী শহরে বিক্ষোভকারীরা বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। (Photo: IANS)

নাগরিকত্ব সংশােধনী আইনের বিরােধিতায় উত্তরপূর্ব ভারত সহ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে, হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন- এককথায় জ্বলছে তামাম ভারত। দেশের রাজধানী শহরেও টানা কয়েকদিন ধরে প্রতিবাদ চললেও আজ পরিস্থিতি জটিল চেহারা নিয়েছে। খােদ প্রধানমন্ত্রীর শহরে এহেন প্রতিবাদ বিক্ষোভ স্বভাবতই নাগরিকত্ব আইনকে প্রশ্নের মুখে দাড় করিয়ে দিল।

উত্তরপূর্ব ভারতের পর খােদ রাজধানী শহরে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে মেতে ওঠার পাশাপাশি তারা দুটি বাসে আগুন লাগিয়ে দেয়। স্থানীয়দের পুলিশ মিছিল করে যন্তরমন্তরে দিকে যেতে বাধা দিলে সংঘর্ষ শুরু হয়। দক্ষিণ দিল্লি নিউ ফ্রেনডস কলােনি একটা যুদ্ধ ক্ষেত্রে পরিণত হয়। পুলিশকে নিশানা করে ইট-পাথর ছুঁড়তে থাকে। পুলিশও তাদের ওপর লাঠিচার্জ করে। পাশাপাশি বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের সেল ফাটানাে হয়। বিক্ষোভকারীদের পুলিশ তাড়া করে। ক্ষুব্ধ মানুষজন দুটি বাসে আগুন লাগিয়ে দিলে সরাই জুলেইনা ও মথুরা রােডে উত্তেজনা ছড়ায়। দমকলের চারটি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

দমকল আধিকারিকরা জানিয়েছে, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা দমকলের গাড়ি আটকে দেয়। দমকলের গাড়ি লক্ষ্য করে ইট-পাথর ছোঁড়ার ফলে ইঞ্জিন ক্ষতিগ্রস্থ হয়। ঘটনায় দু’জন দমকল কর্মী জখম হয়েছেন। ট্রাফিক পুলিশের তরফে টুইট করে লেখা হয়, ‘ওখলা আন্ডারপাস থেকে সরিতা বিহার পর্যন্ত গাড়ি চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাস্তা বন্ধ থাকার কারণে বদরপুর ও আশ্রম চক থেকে আসা যানবাহকে অন্য রাস্তা দিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়’।

জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির তরফে বিবৃতি দিয়ে জানানাে হয়েছে, ‘পড়ুয়ারা সংঘর্ষের মধ্যে ছিল না। শান্তিপূর্ণ উপায়ে প্রতিবাদ দেখাব। হিংসা নয়, অহিংস পথে আমরা শান্তিপূর্ণ মিছিল করব’। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা সকাল থেকে দক্ষিণ দিল্লিতে নাগরিকত্ব আইনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে। সিনিয়র পুলিশ আধিকারিকরা স্বীকার করে নিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা সংঘর্ষ থেকে দূরত্ব বজায় রেখেছিল। স্থানীয় ক্ষুব্ধ জনতা পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়।

সংঘর্ষের জেরে দিল্লি মেট্রোর ম্যাজেন্টা লাইনে ট্রেন চলাচল ব্যাহত হয়েছে। সুখদেব বিহার স্টেশন, জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া, ওখলা বিহার ও জসোলা বিহার সাহিন বাগ মেট্রো স্টেশনের প্রবেশ ও বাহির হওয়ার গেট বন্ধ রাখা হয়েছিল। আশ্রম স্টেশনের তিন নম্বর গেট বন্ধ রাখা হয়েছিল।

পড়ুয়াদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে জামিয়া উপাচার্য নাজমা আখতার বলেন, পড়ুয়াদের ওপর লাঠিচার্জ করার সময়ও আমরা শান্তি বজায় রেখেছি। কয়েকজন মহিলা প্রতিবাদকারীদের জঘন্যভাবে পেটানাে হয়েছে। প্রতিবাদরত ছাত্রছাত্রীদের বেশিরভাগ ক্যাম্পাসের মধ্যে রয়েছেন। তারা সাংবিধানিক পথে নিজেদের প্রতিবাদ দেখাবেন। আমি ছাত্রদের শান্তি বজায় রাখার আবেদন করব। তারা ক্যাম্পাসের বাইরে চলে গেলে কোনওভাবে তাদের রক্ষা করা সম্ভব নয়।