• facebook
  • twitter
Wednesday, 13 August, 2025

ইরানকে হুঁশিয়ারি দিলেও এখনই যুদ্ধে না জড়ানোর চাপ ট্রাম্পের উপর

বিশেষজ্ঞদের মত, ইরানে এখনও মার্কিন সেনা পাঠাননি ট্রাম্প। পশ্চিম এশিয়ায় পূর্বতন পারস্য দেশের সন্নিকটে দুটি বড় মার্কিন সেনা ঘাঁটি রয়েছে।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

ইরানের ক্ষমতা থেকে আয়াতোল্লা আলি খোমেনেইকে সরাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে ইজরায়েল ও সেই সঙ্গে আমেরিকাও। ইরানে আগেই আঘাত হেনেছে ইজরায়েল। কিন্তু এবার কি সেখানে মার্কিন বিমানবাহিনীও বোমাবর্ষণ শুরু করেছে? মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টকে কেন্দ্র করে সেই প্রশ্ন উঠে গিয়েছে। এর পাশাপাশি ট্রাম্পের রিপাবলিকান পার্টির নেতা টেড ক্রুজের মন্তব্যের ফলেও ট্রাম্পের নিজের দেশের উপর আন্তর্জাতিক চাপ বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে এখনও পর্যন্ত এ নিয়ে কোনও উচ্চবাচ্চ করেনি ট্রাম্প প্রশাসন।

ট্রাম্প তাঁর পোস্টে লিখেছেন, ‘ইরানের তথাকথিত সুপ্রিম লিডার’ কোথায় লুকিয়ে আছেন, তা আমরা জানি। তাঁকে খুব সহজেই নিশানা করতে পারি। তবে এখনই তাঁকে বার করে মারতে চাইছি না। আমাদের ক্ষেপণাস্ত্র সাধারণ মানুষ বা মার্কিন সৈন্যদের উপরে গিয়ে পড়ুক তা চাই না।’ গত ১৭ জুন তাঁর এই পোস্ট দেওয়ার পর আন্তর্জাতিক মহলে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তাহলে কি শিয়া ধর্মগুরু তথা ‘সর্বোচ্চ নেতা’ আয়াতোল্লা আলি খামেনেইকে খুঁজে বার করতে মার্কিন সেনা ইতিমধ্যেই ইরানে ঢুকে পড়েছে? নাহলে তিনি মার্কিন সৈন্যদের উপর ক্ষেপণাস্ত্র পড়ার কথা বলবেন কেন? যদিও এইসব প্রশ্নের জবাব মেলেনি ট্রাম্পের তরফে। বরং ট্রাম্প পাল্টা পোস্ট করেছেন, ‘আমাদের ধৈর্য ক্রমশ ভেঙে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে মনোযোগের জন্য আপনাদের ধন্যবাদ।’ এই সঙ্গে ইরানকে শর্তহীন আত্মসমর্পণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।

অন্যদিকে এক সাক্ষাৎকারে মার্কিন কংগ্রেসের উচ্চ কক্ষ সিনেটের সদস্য টেড ক্রুজ দাবি করেছেন, ইরানে বোমাবর্ষণ করছে মার্কিন বায়ুসেনা। অবশ্য পর মুহূর্তেই তিনি সুর বদলেছেন। সুর বদলে বলেছেন, ‘আসলে আমি বলতে চাই, ইজরায়েলই হামলা চালিয়েছে ইরানের উপর, তবে সেটা আমাদেরই সাহায্যে।

একথা সুবিদিত, ইজরায়েলের কট্টর সমর্থক ট্রাম্প প্রশাসন। ইরান পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে সক্ষম হোক, নেতানিয়াহুর মতো ট্রাম্পও তা চান না। ইজরায়েল এই ইস্যুতে ইরানের উপর হামলা চালালে পাল্টা প্রত্যাঘাত করে ইরান। ঠিক সে সময় কানাডার জি-৭ বৈঠক থেকে দ্রুত ওয়াশিংটনে ফিরে আসেন ট্রাম্প। তারপর নিরাপত্তা বিষয়ে দীর্ঘ ক্যাবিনেট বৈঠক করেন তিনি। এর পাশাপাশি ইরানকে হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। তবে এসব হুমকিতে তেমন আমল দেয়নি খোমেনেই।

তবে বিশেষজ্ঞদের মত, ইরানে এখনও মার্কিন সেনা পাঠাননি ট্রাম্প। পশ্চিম এশিয়ায় পূর্বতন পারস্য দেশের সন্নিকটে দুটি বড় মার্কিন সেনা ঘাঁটি রয়েছে। এদের মধ্যে একটি কাতারে এবং অন্যটি কুয়েতে। এছাড়াও ইরাকেও মোতায়েন রয়েছে বিপুল সংখ্যক মার্কিন সেনা। সব মিলিয়ে চল্লিশ হাজারের বিশাল বাহিনী ইরানকে ঘিরে রয়েছে। সেখানে শুরু হয়ে গিয়েছে যুদ্ধের প্রস্তুতি। অন্যদিকে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, ট্রাম্প সরাসরি যুদ্ধে জড়িয়ে পড়তে এখনই পারবেন না। তার কারণ, তাঁর বিরোধী পক্ষ ডেমোক্র্যাটরা ছাড়াও তাঁর নিজের দল রিপাবলিকান পার্টির মধ্যেই এই নিয়ে যথেষ্ট মতপার্থক্য রয়েছে। সেই রিপাবলিকানদের মত, আমেরিকা প্রয়োজনে ইজরায়েলকে অস্ত্রশস্ত্র সরবরাহ করুক। কিন্তু সরকারি যুদ্ধে আমেরিকা জড়িয়ে পড়লে তখন সক্রিয় হয়ে উঠবে চিন এবং রাশিয়াও। সেক্ষেত্রে আরও বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকবে। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হবে মার্কিন অর্থনীতি।