কংগ্রেসের চাপে আকাশের জবাব চেয়ে নোটিশ মধ্যপ্রদেশ বিজেপির

বিধায়ক পুত্রকে নিয়ে বেশ চাপে রয়েছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

Written by SNS New Delhi | July 4, 2019 9:42 am

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (File Photo: IANS)

বিধায়ক পুত্রকে নিয়ে বেশ চাপে রয়েছেন বিজেপির সাধারণ সম্পাদক তথা পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়। আজ দলীয় সাংসদদের নিয়ে বৈঠকে কৈলাসের সামনেই বেশ কড়া ভাষাতেই হুঁশিয়ারি দিলেন প্রধানমন্ত্রী।

তবে প্রধানমন্ত্রী কারাের নাম না করে বলেন, ‘এই ধরণের ব্যক্তিদের দলে রাখার কোনও অর্থ নেই। ওই ব্যক্তি যাঁরই ছেলে হােন না কেন। এক জন বিধায়ক কম হলেও দলের কিছু যায় আসে না’।

কৈলাস বিজয়বর্গীয়র ছেলের কর্মকাণ্ডে অসন্তুষ্ট প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি। প্রধানমন্ত্রী নিজের অসন্তোষের কথা প্রকাশ্যেই জানিয়েছেন। কিন্তু মধ্যপ্রদেশ কংগ্রেসের অভিযােগ বিজেপি ঘটনাটি লঘু করে দেখছে।

প্রদেশ কংগ্রেসের মুখপাত্র নরেন্দ্র সালুজা অভিযােগ করেছেন, ‘বিজেপি আকাশ ও তাঁর বাবার বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার আগ্রহ দেখাচ্ছে না’।

তবে প্রধানমন্ত্রী বিজয়বর্গীয়র দ্বিায়ক পুত্র আকাশের কর্মকাণ্ডে তিরস্কার করার পর বিজেপি নেতৃত্ব সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র পুত্র আকাশকে নােটিশ পাঠান হবে।

পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়ার আগে দলের সামনে আকাশকে নিজের কর্মকাণ্ডের ব্যাখ্যা দিতে হবে।

বুধবার এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের সামনে বিজেপির এক নেতা জানিয়েছেন, ‘আকাশকে আগামীকাল নােটিশ পাঠান হবে। ইন্দোরের বিধায়ককে মধ্যপ্রদেশ পার্টি ইউনিট থেকে নােটিশ পাঠান হচ্ছে। আকাশ বিজয়বর্গীয়র বক্তব্য শােনার জন্য অপেক্ষা করছে দল। তারপরই দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে’।

বুধবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদি দলের সাংসদদের সঙ্গে বৈঠকের পর বিজেপি মুখপাত্র রাজীব প্রতাপ রুডি জানিয়েছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খুবই রুষ্ট। জনসমক্ষে এমন আচরণ করার অধিকার কারাের নেই বলে তিনি কড়া নির্দেশ দিয়েছেন। এরকম ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করবেন তিনি। শুধু কোনও ব্যক্তির উদ্দেশ্যে নয়, দলের সকলের জন্যই এই সতর্কবার্তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী’।

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মােদির সঙ্গে বিজেপি সাংসদদের একটি বৈঠক হয় বুধবার সকালে। সত্রের খবর, ওই বৈঠকে আকাশ বিজয়বর্গীয়কে নিয়ে শুরু হওয়া বিপুল বিতর্ক নিয়েও আলােচনা হয়েছে।

বর্ষীয়ান বিজেপি নেতা কৈলাস বিজয়বর্গীয়র বিধায়ক পুত্র আকাশ একটি ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে এক সকারি আধিকারিককে মারধর করেন। শুধু তাই নয়, এই ঘটনা প্রসঙ্গে তাঁর প্রতিক্রিয়াও বিতর্ক তৈরি করেছে।

৪৫ জন সাংসদকে নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিল্লির বাড়িতে হওয়া ওই বৈঠকে শৃঙ্খলাজনিত বিষয়টি নিয়ে আলােচনা হয়। মধ্যপ্রদেশ থেকে প্রথমবাবের বিধায়ক কৈলাস পুত্রের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে পারে বিজেপি নেতৃত্ব- সুত্র থেকে তেমনটাই জানা যাচ্ছে।

মঙ্গলবারই ক্ষুব্ধ প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যদি আমাদের এক বিধায়ককে হারাতে হয় হবে। এমন যাতে না হয় তার জন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে আমাদের’।

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘সে যেই হােক, যাঁরই ছেলে হােক, এই ধরনের ঔদ্ধত্য, খারাপ ব্যবহার সহ্য করা হবে না এবং এর বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করা হবে’।

ঘটনাটিকে ‘ইন্দোর অ্যাকসিডেন্ট’ বলে উল্লেখ করেন মােদি। আকাশের বলা ‘নিবেদন, আবেদন, দনাদন (প্রথমে নিবেদন ও আবেদন, ফল না মিললে মারধর)’ কথাটির উল্লেখ করে মােদি বলেন, ‘এটা কেমন ভাষা?’

ইন্দোরের বিধায়ক গত বুধবার আকাশ বিজয়বর্গীয় এক আঙ্কিাকিকে ক্রিকেট ব্যাট হাতে তাড়া করা ও মারধর করার অভিযােগে গ্রেফতার হন। পুরাে ঘটনাটিই ক্যামেরায় ধরা পড়ে। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘দেখুন আবেদন, নিবেদন আর তারপর দনাদন . . . এটাই আমাদের লাইন অফ অ্যাকশন’।

জামিন পাওয়ার পরে আকাশকে মালা পরিয়ে নায়কের মর্যাদা দিয়ে বাড়ি ফিরিয়ে নিয়ে যান তার ভক্তরা। সঙ্গে ছিলেন তার বাবা কৈলাসও। বিজেপি মুখপাত্র রাজীব প্রতাপ রুডি আজ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী খুবই ক্ষুণ্ণ হয়েছেন’।

৩৪ বছরের আকাশের এহেন মন্তব্য নিয়ে সাংসদদের সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকে কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী, তেমনটাই জানা যাচ্ছে।

সব মিলিয়ে সাতটি ভাগে এই বৈঠক হবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও তাতে উপস্থিত থাকনে। সেই বৈঠকে সাংসদদের সরকারের সমস্ত পরিকল্পনা, নিজের সংসদ এলাকায় নিয়মিত উপস্থিতি ইত্যাদি বিষয়ে জানানাে হবে।

প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ক্ষমতায় আসার পরে এমন বৈঠক করেছিলেন নরেন্দ্র মােদি।