কৃষি নিয়ে আমরা যা করেছি, কেউ করেনি, চ্যালেঞ্জ মমতার

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (File Photo: IANS)

কৃষক বিদ্রোহ নিয়ে যখন চাপ বাড়ছে বিজেপি সরকারের ওপর, ঠিক তখনই কৃষি ইস্যুতে মােদি সরকারকে তােপ দাগলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে জানালেন, কৃষি নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকার যা করেছে, তা আর কেউ করতে পারেনি। কৃষকদের জন্য প্রকল্পের টাকা নিয়ে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পারস্পারিক আক্রমণ অব্যাহত। বিধানসভা নির্বাচনের আগে কৃষক ইস্যু নিয়ে তরজায় নামলেন মােদি-মমতা দুজনেই। 

সােমবার বারাণসীতে দাঁড়িয়ে নরেন্দ্র মােদি নাম না করে পশ্চিমবঙ্গকে বিধে বলেছিলেন একটি রাজ্য প্রধানমন্ত্রী কিষণ সম্মান নিধি (পিএম-কিষাণ) চালু করেনি। কারণ কৃষকরা হাতে টাকা পেলে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রশংসা বারবে। মঙ্গলবার নবান্নে এরই পাল্টা জবাব দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, রাজ্যের নিজস্ব প্রকল্প রয়েছে কৃষকদের জন্য। তাহলে আমরা কেন্দ্রের প্রকল্প নেব কেন? কেন্দ্র প্রকল্পের একশাে শতাংশ টাকা দেবে না। আবার নিজের নাম দিয়ে চালাবে, এটা হবে না। 

মমতা এদিন তথ্য দিয়ে বলেন, পিএম কিষাণ প্রকল্পে তিন কিস্তিতে মােট ছয় হাজার টাকা দেয় কেন্দ্রীয় সরকার। সেক্ষেত্রে দুই একর জমি থাকলে তবেই এই টাকা পাবে। আর রাজ্য সরকার দুই কিস্তিতে পাঁচ হাজার টাকা দেয়। মাত্র এক কাঠা জমি থাকলেই রাজ্যের কৃষকরা এই টাকা পায়। এছাড়া আঠেরাে থেকে ষাট বছর বয়সী কোনও কৃষকের মৃত্যু হলেও রাজ্য সরকার তাদের পরিবার পিছু দুই লক্ষ করে টাকা দেয়। এছাড়া একুশের নির্বাচনের আগে কৃষকদের জমির খাজনার ওপরে সুদ মুকুব করার কথাও ঘােষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার নির্দেশে খাজনা দেওয়ার সময়সীমাও ছয় মাস বাড়িয়ে জুন পর্যন্ত করা হল।


মুখ্যমন্ত্রী জানান, লকডাউনের জন্য অনেক সরকারি অফিসে খাজনা দিতে আসতে পারেননি অনেকে। আগে বকেয়া খাজনা জমা দিলে ৬.২৫ শতাংশ সুদ দিতে হত। কিন্তু অতিমারী পরিস্থিতিতে আগামী মার্চ মাস পর্যন্ত বকেয়া খাজনা জমা দিলে কোনও সুদ দিতে হবে না। মঙ্গলবারের মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সরকারের কৃষকদের ভাবমূর্তিকেই প্রতিষ্ঠা করতে চাইলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। 

এদিকে কেন্দ্রীয় সরকার দীর্ঘদিন অভিযােগ করে আসছে, পিএম-কিষাণ প্রকল্পের জন্য রাজ্য সরকার কৃষকদের নামের তালিকা পাঠায়নি। ফলে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৭০ লক্ষ কৃষক এই প্রকল্পের সুবিধে থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তবে রাজ্য সরকারের তরফে সেই অভিযােগ উড়িয়ে দাবি করা হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের প্রদেয় অর্থ তাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে না দিয়ে, রাজ্য সরকারের হাতে দিক। রাজ্য সরকার সেই টাকা বণ্টন করবে। যদিও কেন্দ্র সেই শর্তে রাজি হয়নি।