অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমের প্রাদুর্ভাবের পর প্রথমবার মুজফফারপুরে গেলেন নীতীশ কুমার; মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে ১২৬

এনসেফেলাইটিসের প্রাদুর্ভাবের পর মুখ্যমন্ত্রীর এটাই এই জেলায় প্রথম সফর। অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমের সংক্রমণ অব্যাহত বিহারের অন্তত ১২টি জেলায়।

Written by SNS New Delhi | June 18, 2019 2:33 pm

অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসা চলছে মুজফফারপুরের হাসপাতালে (Photo: IANS)

বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার মঙ্গলবার মুজফফারপুরের শ্রী কৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল গেলেন রাজ্যে ১২৬ শিশুর অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে মৃত্যুর পরিস্থিতির ব্যাপারে বিশদে জানতে।

এনসেফেলাইটিসের প্রাদুর্ভাবের পর মুখ্যমন্ত্রীর এটাই এই জেলায় প্রথম সফর। অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমের সংক্রমণ অব্যাহত বিহারের অন্তত ১২টি জেলায়।

১২৬টি মৃত্যুর মধ্যে ১০৮টি মৃত্যুর খবর এসেছে মুজফফরপুর ও তার সংনলগ্ন এলাকা থেকে।

শ্রী কৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল থেকে ৮৯টি শিশুর মৃত্যু ও কেজরিওয়াল হাসপাতাল থেকে ১৯টি শিশুর মৃত্যুর খর পাওয়া গেছে।

নীতীশ কুমার মুজফফারপুরে শিশুদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন ও ক্ষতিপুরন স্বরূপ মৃতের পরিবারকে ৪ লক্ষ টাকা  দেওয়ার কথাও জানিয়েছেন।

তিনি স্বাস্থ্য দফতরের সকল আধিকারিকদের, জেলা প্রশাসন ও ডাক্তারদের নির্দেশ দিয়েছেন এই রোগের মোকাবিলায় তাঁরা যেন সব রকম পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। মুখ্যমন্ত্রী অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন।

শিশু মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে রাষ্ট্রীয় মানবধিকার আয়োগ (এনএইচআরসি) সোমবার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রালয় এবং বিহার সরকারকে নোটিশ পাঠায়।

রাষ্ট্রীয় মানবধিকার আয়োগের এক আধিকারিক জানায় যে ‘বিগত কিছু দিন ধরেই মিশডিয়ার রিপোর্টে বিহারের মুজাফফরপুরে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে শিশু মৃত্যুর সংখ্যার ওপর নজর রাখছিল এনএইচআরসি’।

এনএইচআরসি-র তরফ থেকে জানানো হয়েছে, কমিশন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রালয়ের সচিব ও বিহারের মুখ্য সচিবকে নোটিশ পাঠিয়েছেন ও তাঁদেরকে বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন ও জানতে চেয়েছেন জাপানি এনসেফেলাইটিস ভাইরাস / অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমের এই পরিস্থিতির মোকাবিলা করার জন্য তারা কি ব্যবস্থা গ্রহণ করছেন।

এনএইচআরসি-র মুখপাত্র জানান ‘কমিশন এটাও জানতে চেয়েছে যে হাসপাতালে ভর্তি শিশুদের কি চিকিৎসা চলছে আর রাজ্য সরকার শোকাহত পরিবারদের জন্য ত্রাণের কি ব্যবস্থা করেছেন’।

আগামি চার সপ্তাহের মধ্যেই তাঁদের হাঁতে রিপোর্ট জমা পড়বে, এমনটাই জানান এনএইচআরসি-র মুখপাত্র।

ইতিমধ্যে, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী হর্ষ বর্ধন ও বিহারের স্বাস্থ্যমন্ত্রী মঙ্গল পান্ডের বিরুদ্ধে কাজে গাফিলতির দরুন শিশু মৃত্যুর অভিযোগে মুজফফরপুরের আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

দায়ের করা পিটিশনে বলা হয়েছে হর্ষ বর্ধন ও মঙ্গল পান্ডে তাঁদের দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ। তাঁরা এই রোগের প্রকোপ’কে নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেননি ও প্রভাবিত এলাকায় মানুষকে সচেতন করেননি যে এত বছর ধরে অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে তাদের বাচ্চারা মারা যাচ্ছে।

ইতিমধ্যে, আধিকারিকরা বলছেন আক্রান্তদের মধ্যে ১০ বছরের কম বয়সী শিশুরাই আক্রান্ত হয়েছে হাইপোগ্লিসেমিয়ায়, যেখানে শরীরের ব্লাড সুগার অনেক নেমে যায় আর ইলেকট্রোলাইটে অসাম্য দেখা দেয়।

পয়লা জুন থেকে ১৯৭ শিশু শ্রী কৃষ্ণ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল আর ৯১টি শিশুকে কেজরিওয়াল হাসপাতালে ভর্তি হয় অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোমে আক্রান্ত আশঙ্কা করে, যদিও বেশিরভাগই হাইপোগ্লিসেমিয়ায় আক্রন্ত বলে জানা যায়।

অ্যাকিউট এনসেফেলাইটিস সিনড্রোম এক ধরনের এনকেফালাইটিস যা মশা দ্বারা প্রেরিত। এর লক্ষণগুলি হল জর, মাথা ব্যাথা।