২০০৬ সালে মুম্বইয়ে লোকাল ট্রেনে ধারাবাহিক বিস্ফোরণের ঘটনায় ১২ জনকেই মুক্তি দিয়েছিল বম্বে হাইকোর্ট। সেই রায়ের বিরোধিতা করে এবার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করল মহারাষ্ট্র সরকার। সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে মহারাষ্ট্রের সন্ত্রাসদমন শাখা (এটিএস)। মামলাটি দ্রুত শোনার জন্য সুপ্রিম কোর্টে আর্জি জানান কেন্দ্রের সলিসিটর জেনারেল তুষার মেটা। প্রধান বিচারপতি বিআর গবাই, বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রন এবং বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চে বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানি হবে। প্রসঙ্গত, সোমবার হাইকোর্ট ১২ জন অভিযুক্তকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করতেই অসন্তুষ্ট হয়েছিলেন মুম্বইয়ের আমজনতা থেকে রাজনৈতিক মহল।
২০০৬ সালের ১১ জুলাই সন্ধ্যায় ১১ মিনিটের ব্যবধানে মুম্বইয়ের একাধিক লোকাল ট্রেনে বিস্ফোরণ ঘটে। ঘটনায় ১৮৯ জনের মৃত্যু হয়, আহত হন প্রায় ৮০০ জন। বিস্ফোরণগুলি হয়েছিল শহরের অন্যতম ব্যস্ত সময়ে, অফিস ফেরত যাত্রীবোঝাই ট্রেনে। মোট ৬টি স্টেশনে চার্চগেট থেকে আসা ট্রেনগুলিতে বিস্ফোরণ হয়। ওই ঘটনায় দেশজুড়ে তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। তদন্তে নেমে মুম্বই পুলিশ বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে। ২০১৫ সালে বিশেষ আদালত মোট ১২ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে। ফয়জল শেখ, আসিফ খান, কমল আনসারি, ইথশাম সিদ্দিকি ও নভেদ খানকে মৃত্যুদণ্ড এবং বাকি সাত জনকে আজীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত। পরে তাঁরা রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে আবেদন জানান।
সোমবার ওই ১২ জনকে বেকসুর খালাস ঘোষণা করে বম্বে হাইকোর্ট। বিচারপতি অনিল কিলোর এবং বিচারপতি শ্যাম চন্দকের পর্যবেক্ষণ ছিল, যথোপযুক্ত প্রমাণের অভাব রয়েছে। তাই অভিযুক্তদের বেকসুর খালাস করা হল। আদালত এ-ও জানায়, অভিযুক্তেরা যদি অন্য কোনও মামলায় যুক্ত না-থাকেন, তবে তাঁদের জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হবে। আদালতের এই রায়ের তীব্র নিন্দা করেন শিব সেনা সাংসদ মিলিন্দ দেওরা। উল্লেখ্য, বম্বে হাই কোর্টের রায়ে মুখ পুড়েছে মহারাষ্ট্র এটিএসের। তারাই গোটা ঘটনার তদন্ত করছিল। এবার হাইকোর্টের এই রায়ের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হল সুপ্রিম কোর্টে।