মিলখার জীবনকথা

মিলখা সিং (Photo: IANS)

১৯২৯ সালে অবিভক্ত ভারতের পাঞ্জাব প্রদেশের গােবিন্দপুর গ্রামে একটি শিখ রাজপুত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন মিলখা সিং। পনেরােজন ভাইবােনের মধ্যে আট জন দেশভাগের আগেই মারা গিয়েছিলেন। দেশভাগের সময়ও চোখের সামনে বাবা-মাকে খুন হতে দেখেন ছােট্ট মিলখা।

দেশভাগের পর দিল্লিনিবাসী তার এক দিদির কাছে আশ্রয় পেয়েছিলেন মিলখা। সেখান থেকেই শুরু হয়েছিল মিলখার নতুন জীবন যুদ্ধ। টিকিট ছাড়া ট্রেনে ওঠার জন্য জেলেও যেতে হয়েছিল মিলখাকে। তাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য গয়না বিক্রি করতে হয়েছিল মিলখার দিদিকে।

১৯৪৯ সালে ভারতীয় সেনায় যােগ দিতে গিয়েছিলেন মিলখা কিন্তু পারেননি। ১৯৫০ সালে ফের চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হন। একটা রাবার কারখানায় কাজ করতে শুরু করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১৯৫২ সালে সুযােগ পান ভারতীয় সেনায়। মাইনে ছিল ৩৯ টাকা ৮ আনা। সেখানেই থাকাকালীন ভারতীয় সেনার অধ্যক্ষের নজরে এসেছিলেন। সেকেন্দ্রাবাদে থাকাকালীন সময়ে পরিচিত হয়েছিলেন অ্যাথলিটিক্সের সঙ্গে।


মিলখা প্রথম অলিম্পিকের আসরে নামেন ১৯৫৬ সালে মেলবাের্নে। কিন্তু প্রথম পর্বেই ছিটকে গিয়েছিলেন। এশিয়ান গেমস ও পরে কমনওয়েলথে সােনা জিতে ১৯৫৮ সালে পরিচিতি লাভ করেছিলেন সােনা জয় করে। ১৯৬০ সালে রােম অলিম্পিকে চতুর্থ স্থান অর্জন করেছিলেন। অল্পের জন্য পদক হাতছাড়া হয়েছিল। 

বলে রাখা ভালাে, তৎকালীন আরও এক খ্যাতনামা দৌড়বিদ পাকিস্তানের আব্দুল খালিদের বিরুদ্ধে অনবদ্য পারফরমেন্সের জন্য পাক জেনারেল আয়ুব খান তাঁকে ‘ফ্লাইং শিখ’ তকমা দিয়েছিলেন। 

বলে রাখা ভালাে, মিলখা তার সমস্ত পদক, ট্রফি দান করে দিয়েছে। পাতিয়ালার এক যাদুঘরে রাখা আছে সেই সব পুরস্কার। ২০০১ সালে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন মিলখা। এবং ১৯৫৯ সালে পদ্মশ্রী সম্মানেও সম্মানিত হয়েছিলেন মিলখা সিং। 

২০১৭ সালে মাদাম তুসাে মিউজিয়ামে মিলখার মােমের মূর্তি বসে। ২০১৮ সালে ‘খেলরত্ন’ সম্মানে সম্মানিত হয়েছিলেন। রােম অলিম্পিকে যে জুতাে পরে খেলেছিলেন তা ফারহান আখতারকে দিয়েছিলেন মিলখা। ‘ভাগ মিলখা ভাগ’ ছবির শ্যুটিং-এর সময় এই উপহার দিয়েছিলেন।