আহমেদাবাদের কোয়ারানটিন কেন্দ্রে আত্মঘাতী বাংলার পরিযায়ী শ্রমিক

সোমবার রাত পর্যন্ত গুজরাতে করোনা আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১৯৩৯। সংক্রমণ ছড়িয়েছে আরাবল্লি-সহ রাজ্যের ২৫ জেলায়। এই আরাবল্লিই হচ্ছে হটস্পট।

Written by SNS Ahmadabad | April 22, 2020 7:12 pm

প্রতিকি ছবি (File Photo by Arun SANKAR / AFP)

অহমেদাবাদে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করলেন পশ্চিমবঙ্গের এক পরিযায়ী শ্রমিক। বছর চল্লিশের ওই শ্রমিক স্ত্রী ও দুই সন্তান-সহ স্থানীয় কলেজ ক্যাম্পাসের কোয়ারানটিন কেন্দ্রে ছিলেন। আহমেদাবাদের সোলা থানার পুলিশ প্রাথমিক তদন্তের পর দাবি করে, সন্তানদের নিয়ে স্ত্রীর সঙ্গে মনোমালিন্যের কারণেই বাংলার ওই শ্রমিক আত্মঘাতী হয়েছেন। রবিবার তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়।

আত্মঘাতী শ্রমিকের নাম কমলেশ এস প্রামাণিক। বাড়ি উত্তরবঙ্গের মালদায়। অহমেদাবাদের ঘাটলোদিয়া আরসি টেকনিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বয়েজ হস্টেল থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। পুলিশ জানায়, ওই কলেজটিকে অস্থায়ী কোয়ারানটিন কেন্দ্রে রূপ দিয়ে, সেখানে আটকে পড়া পরিযায়ী শ্রমিকদের রাখার ব্যবস্থা করা হয়। মালদার ওই শ্রমিক সেখানেই সপরিবার ছিলেন।

সোলা থানার পুলিশ জানিয়েছে, শনিবার, ১৮ এপ্রিল রাত ৯’টা নাগাদ আত্মহত্যা করেন ওই ব্যক্তি। বাচ্চারা হুটহাট খেলতে বেরিয়ে যেত। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে শনিবার প্রবল অশান্তি হয়। রাগের মাথায় ঘর থেকে বেরিয়ে, কলেজের আর একটি ফাঁকা রুমে ঢুকে, তিনি দরজা বন্ধ করে দেন। পরদিন সকালে স্বাস্থ্যকর্মীরা খাবার দিতে এলে, ডাকাডাকি করেও সাড়া পাননি। ওই ঘরের দরজা ভাঙলে, তাঁরা বাংলার ওই শ্রমিককে ফাঁস লাগানো অবস্থায় ঝুলতে দেখেন। এই ঘটনায় একটি দুর্ঘটনায় মৃত্যুর মামলা রুজু করেছে পুলিশ।

পিএল মল, জোন ১-এর ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ জানান, স্ত্রীর সঙ্গে অশান্তির কারণেই ওই ব্যক্তি আত্মহত্যা করেছেন। তবে, অন্য কোনও কারণ তাঁকে আত্মহত্যায় প্ররোচিত করেছে কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

পুলিশ আরও জানান, প্রথমে বাংলার এই শ্রমিক পরিবারকে ইস্কন মলে রাখা হয়েছিল। সেখানে আরও ১২৬ পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। দু-দিনের মাথায় ওই আশ্রয়কেন্দ্রে চার শ্রমিকের পজিটিভ ধরা পড়লে, বাকিদের সেখান থেকে সরিয়ে অন্যান্য আশ্রয় কেন্দ্রে পাঠানো হয়। মালদার এই শ্রমিক পরিবারকে রাখা হয় কলেজে।

প্রশাসনের এক শীর্ষ আধিকারিক জানান, জেলার ১২’টি আশ্রয় কেন্দ্রে ১২০০’র উপর শ্রমিক অনিচ্ছা সত্ত্বেও রয়েছেন। এক করোনা আক্রান্ত পরিযায়ী শ্রমিক কোয়ারানটিন কেন্দ্র থেকে পালিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করেছিলেন। তাঁর ধারণা, সরকার ঘরে ফেরার ব্যবস্থা না করলে, অনেক শ্রমিকই পালানোর চেষ্টা করবেন। তাতে কারোনাভাইরাস ছড়ানোর আশঙ্কা আরও বাড়বে।

সোমবার রাত পর্যন্ত গুজরাতে করোনা আক্রান্ত বেড়ে হয়েছে ১৯৩৯। সংক্রমণ ছড়িয়েছে আরাবল্লি-সহ রাজ্যের ২৫ জেলায়। এই আরাবল্লিই হচ্ছে হটস্পট। রাজ্যের মোট ৭১ মৃত্যুর মধ্যে শুধু এখানেই ৩৮ জন মারা গিয়েছে। আক্রান্ত ১২৪৮।