স্থূলতা নিয়ন্ত্রণে এমবিএস

Written by SNS May 20, 2024 3:14 pm

বিশ্বজুডে় ৬৫ কোটির বেশি মানুষ স্থূলতা বা ওবিসিটিতে ভুগছেন যা একটি বিশ্বব্যাপী  মহামারী এবং এর স্বাস্থ্য, সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব অত্যন্ত গুরুতর৷ স্থূলতা একটি জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা, যা জেনেটিক্স, আচরণ, পরিবেশ এবং সামাজিক-অর্থনৈতিক অবস্থা সহ বিভিন্ন কারণের সমন্বয়ে সৃষ্টি হয়৷ তবে এখন স্থূলতার পরিবর্তে ‘অ্যাডিপোসিটি বেসড ক্রনিক ডিজিজ’ শব্দটি ব্যবহার হচ্ছে, যা রোগের দীর্ঘমেয়াদি প্রকৃতি এবং শরীরের সমস্ত কোষের উপর এর প্রভাবকে বোঝায় যা সমস্ত অঙ্গকে ব্যাপক ক্ষতির দিকে পরিচালিত করে ও উচ্চ মৃতু্যহার এবং অসুস্থতার সাথে এর সম্পর্ক ব্যাখ্যা করে ৷ এর মানে এই যে, স্থূলতায় আক্রান্ত রোগীদের সারাজীবন ভীষণভাবে পরিচর্যা প্রয়োজন৷
স্থূলতার একমাত্র কারণ কিন্তু ‘বেশি খাওয়া এবং কম চলাফেরা’ নয়৷ এখন বেশিরভাগই ক্ষেত্রেই “স্থূলতা জিন” এর দ্বারা ব্যাখ্যা করা হয়৷ এর মানে হল যে বিভিন্ন ব্যক্তির ভিন্ন জেনেটিক গঠনের কারণে তাদের ক্যালোরি বিপাকের ক্ষমতা ভিন্ন৷
ডাঃ সরফরাজ বেগ পরিচালক ডাইজেস্টিভ সার্জারি ক্লিনিক বেল ভিউ হসপিটাল তথা সিএমআরআই হাসপাতাল, বলেন, স্থূলতার কারণ সম্পর্কে এই উপলব্ধির জন্য বহু-বিষয়ক ব্যবস্থাপনার স্থানে চলে এসেছে “শুধুমাত্র ডায়েট-লাইফস্টাইল পরিবর্তন” পদ্ধতি৷ এখন বড় ডেটাবেস থেকে জানা গেছে যে যেখানে হালকা থেকে মাঝারি স্থূলতা ওজন কমানোর ডায়েট, শারীরিক কার্যকলাপ এবং ওষুধের দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, গুরুতর স্থূলতা বা  স্থূলত্ব সম্পর্কিত রোগের সাথে মেটাবলিক এবং ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি এর প্রতি সবচেয়ে ভালো সাড়া দেয়৷ মেটাবলিক এবং ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি (এমবিএস) হল এমন এক অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যা স্থূলতা এবং এই সম্পর্কিত বিপাকীয় বিষয় যেমন টাইপ ২ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা জন্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের পরিবর্তন করে৷  এটি ৩৫ বা তার বেশি বিএমআইযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য সুপারিশ করা হয় যারা জীবনধারা পরিবর্তনের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ ওজন কমাতে অসফল হয়েছেন বা গুরুতর স্থূলত্ব-সম্পর্কিত স্বাস্থ্যগত অবস্থা রয়েছেন৷ সবচেয়ে সাধারণভাবে সম্পাদিত এমবিএস পদ্ধতিগুলি হল ভার্টিক্যাল স্লিভ গ্যাস্ট্রেক্টমি এবং রু-এন ওয়াই গ্যাস্ট্রিক বাইপাস, যা বিশ্বব্যাপী সম্পাদিত সমস্ত সার্জারির প্রায় ৯০%৷
বিপাকীয় এবং ব্যারিয়াট্রিক সার্জারি মোট ওজন হ্রাসে ৩০% এরও বেশি অবদান রেখে উল্লেখযোগ্য ফলাফল দেখিয়েছে এবং ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, ডিসলিপিডেমিয়া, ক্রনিক লিভার ডিজিজ, স্লিপ অ্যাপনিয়া, আর্থ্রাইটিস, রিফ্লাক্স ডিজিজ, বন্ধ্যাত্ব ইত্যাদি রোগের নিরাময়ে সাহায্য করেছে৷
যদিও অন্যান্য গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সার্জারির মতো এমবিএসের কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে, যেমন ছিদ্র হওয়া, রক্তক্ষরণ, ইনফেকশন, বাধা, অপুষ্টি, পুনরায় ওজন বৃদ্ধি এবং অম্বল৷ এসব কারণে বিশেষজ্ঞদের তত্ত্বাবধানে নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরী৷