আবারও ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী রইল ওড়িশা। বৃহস্পতিবার সকালে সম্বলপুরের কাছাকাছি লাইনচ্যুত হল শালিমার-সম্বলপুর এক্সপ্রেসের একটি জেনারেল কামরা। বড়সড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারত, তবে গতি কম থাকায় অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছেন যাত্রীরা। এই ঘটনার জেরে সম্বলপুর শাখায় সাময়িকভাবে রেল পরিষেবা বিঘ্নিত হয়েছে।
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, ট্রেনটি সকাল ৯টা ১৮ মিনিটে সম্বলপুর সিটি স্টেশন ছাড়ে। তার চার মিনিট পরই, অর্থাৎ ৯টা ২২ মিনিট নাগাদ লাইনচ্যুত হওয়ার খবর আসে। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় কোনও যাত্রী হতাহত হননি। সকলেই সুরক্ষিত আছেন। দুর্ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই চালক দ্রুতগতিতে ট্রেন থামিয়ে দেন। ফলে গুরুতর বিপদের হাত থেকে বেঁচে যান যাত্রীরা।
লাইনের ধারে আচমকা ট্রেন থেমে যাওয়ায় প্রথমে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে যাত্রীদের মধ্যে। তবে দ্রুততার সঙ্গে তাঁদের সুরক্ষিতভাবে ট্রেন থেকে নামিয়ে আনা হয়। কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে রেল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাস্থলে ইতিমধ্যেই পৌঁছেছেন রেল ও স্থানীয় প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকরা। পাশাপাশি, দুর্ঘটনার প্রকৃত কারণ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রেল আধিকারিকরা জানিয়েছেন, ট্রেনের গতি কম থাকায় বড়সড় বিপর্যয় এড়ানো সম্ভব হয়েছে।
এক যাত্রীর দাবি, হঠাৎই একটা ঝাঁকুনির পর ট্রেনটি থেমে যায়। অনেকেই ভেবেছিলেন যে, সিগন্যাল না পাওয়ার কারণে বোধহয় ট্রেন থেমেছে। কিন্তু পরে জানা যায়, ট্রেনের একটি অসংরক্ষিত কামরার চাকা লাইনচ্যুত হয়েছে। এই ঘটনার জেরে ওই শাখায় ট্রেন চলাচল সাময়িক ভাবে ব্যাহত হয়। লাইনচ্যুত কামরা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে অন্য কামরায় তোলা হয়। তার পর ট্রেনটি সম্বলপুরের উদ্দেশে রওনা দেয়।
সম্বলপুর-শালিমার মহিমা গোসাঁই এক্সপ্রেস হাওড়ার শালিমার থেকে ওডিশার সম্বলপুর পর্যন্ত যাতায়াত করে। সাঁতরাগাছি, খড়গপুর, বালেশ্বর, ভদ্রক, জাজপুর কেওনঝার, ঢেঙ্কানলের মতো স্টেশনে স্টপেজ রয়েছে এই সুপারফাস্ট ট্রেনের। ফলে বাংলার বহু মানুষ এই ট্রেনের যাত্রী। ঢেঙ্কানলে পড়তেও যান এই রাজ্যের বহু পড়ুয়া। সব মিলিয়ে বাংলা ও ওড়িশার যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ট্রেন এটি। বৃহস্পতিবার বড় বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলেন এই ট্রেনের যাত্রীরা।
উল্লেখ্য, গত কয়েক বছরে একাধিক বড়সড় ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে ওড়িশায়। চলতি বছর মার্চ মাসেই কটক থেকে কেন্দাপাড়া যাওয়ার পথে কামাখ্যা এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হয়ে একজনের মৃত্যু হয়। তার আগে ২০২৩ সালের জুন মাসে বালেশ্বরের কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান শতাধিক যাত্রী।
এদিনের দুর্ঘটনা ফের প্রশ্ন তুলে দিল রেল পরিকাঠামোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে। যাত্রীদের প্রাণ নিয়ে এমন ঝুঁকি আর কতদিন চলবে – উদ্বিগ্ন সাধারণ মানুষ। রেল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে তৎপরতা শুরু হয়েছে এবং শীঘ্রই রেল পরিষেবা চালু করা হবে।