বড় ছেলে তেজপ্রতাপকে আরজেডি থেকে বহিষ্কার করলেন লালুপ্রসাদ যাদব। দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে তাঁকে। রবিবার দুপুরে এক্স হ্যান্ডলে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দলীয় শৃঙ্খলা এবং পারিবারিক অনুশাসন না মানায় তেজপ্রতাপকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন লালু। বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মনে করছেন, ‘তেজপ্রতাপের কার্যকলাপে দল এবং পরিবার, দুই ক্ষেত্রেই ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে।’
এক্স হ্যান্ডলে লালু লিখেছেন, ‘ব্যক্তিগত জীবনে নৈতিক মূল্যবোধকে অবহেলা করা সামাজিক ন্যায়বিচারের জন্য আমাদের সম্মিলিত সংগ্রামকে দুর্বল করে দেয়। বড় ছেলের কার্যকলাপ, জনসাধারণের আচরণ এবং দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণ আমাদের পারিবারিক মূল্যবোধ এবং ঐতিহ্যের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। অতএব, উপরোক্ত পরিস্থিতির কারণে, আমি তাঁকে দল এবং পরিবার থেকে দূরে রাখছি। এখন থেকে দল এবং পরিবারে তাঁর কোনও ভূমিকা থাকবে না। তাঁকে দল থেকে ৬ বছরের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।’
বড় ছেলের উদ্দেশে লালুর বার্তা, ‘তিনি নিজেই তার ব্যক্তিগত জীবনের ভালো-মন্দ দেখতে সক্ষম। যাঁর সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক আছে, তাঁর উচিত নিজস্ব বিবেচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়া। পরিবারের বাধ্য সদস্যরা এই সিদ্ধান্ত মেনে নিয়েছেন।’
লালুর বড় ছেলেকে নিয়ে এর আগেও আলোড়ন তৈরি হয়েছে। দলের অনুশাসন কোনওদিনই মানেন না তিনি। তেজ প্রতাপ যাদব এবং তাঁর স্ত্রী ঐশ্বর্য রাইয়ের মধ্যে বিবাহবিচ্ছেদের মামলা পাটনার আদালতে চলছে। এরই মধ্যে শনিবার তেজপ্রতাপের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি পোস্টে দাবি করা হয়েছিল, তিনি ১২ বছর ধরে এক যুবতীর সঙ্গে সম্পর্কে রয়েছেন। প্রোফাইলে ‘ইন এ রিলেশনশিপ’ স্টেটাস দেওয়া হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সেই পোস্ট মুছে ফেলা হয়। এরপর তেজপ্রতাপ দাবি করেন, তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘হ্যাক’ করা হয়েছিল।
একটা সময় ভাই তেজস্বীর সঙ্গে আরজেডির ‘দখল’ নিয়ে দ্বন্দ্বও ছিল তেজপ্রতাপের। পরে অবশ্য লালুর দলের দায়িত্ব ছোট ছেলে তেজস্বীর হাতে তুলে দেন। দীর্ঘদিন ধরেই আরজেডির মূল সংগঠন থেকে দূরে রয়েছেন তেজপ্রতাপ। কখনও তাঁকে নাটকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে, কখনও সিনেমায় হাত পাকানোর চেষ্টা করেছেন, তবে সমান্তরালভাবে রাজনীতিটাও চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন।
দাদা তেজপ্রতাপকে দল থেকে বহিষ্কারের ঘটনায় তেজস্বী যাদব বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে, আমি এই সব পছন্দ করি না এবং সহ্যও করি না। আমি আমার কাজ করছি। বড় ভাইয়ের ব্যক্তিগত জীবন আলাদা। ওর নিজের সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার আছে। লালুজি টুইট করে তাঁর অনুভূতি স্পষ্ট করেছেন। আমি এই সব পছন্দ করি না। আমি মিডিয়া থেকেই এই সিদ্ধান্তে কথা জানতে পেরেছি।’
প্রসঙ্গত, লালুপ্রসাদ যাদবের বড় ছেলে তেজপ্রতাপ নীতিশ কুমারের সরকারে দু’বছর স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে, বিহারের পরিবেশ মন্ত্রী হিসেবে, তিনি রাজ্যে দূষণ কমানোর উদ্যোগ হিসেবে ঘোড়াদৌড়ের প্রচার করেছিলেন।