কোনও মহিলা পূর্বপরিচিত হলেই তাঁকে ধর্ষণে লাইসেন্স মেলে না। সম্প্রতি এক ধর্ষণের মামলা খারিজের আবেদনের শুনানিতে এই দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট। অভিযুক্ত যুবক দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতিতা তরুণীকে চেনেন। ঘটনার ২ মাস পরে যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। এই দাবি করে অভিযুক্তের আইনজীবী আদালতে দাবি করেন, তাঁর মক্কেল ধর্ষণ করেননি, যা হয়েছে মহিলার সম্মতিতেই হয়েছে। নিজের বক্তব্যের সপক্ষে তিনি কিছু ছবিও আদালতে জমা দেন। মহিলা পরিচিত মানেই ধর্ষণের লাইসেন্স মেলে না এই পর্যবেক্ষণে অভিযুক্তের আবেদন খারিজ করে দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট।
মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের বিচারপতি গুরপাল সিংহ আলুওয়ালিয়ার পর্যবেক্ষণ, নির্যাতিতা নিজের অভিযোগপত্রেও জানিয়েছেন যে, তিনি অভিযুক্তকে গত তিন বছর ধরে চেনেন। অভিযুক্তের আইনজীবী যে ছবিগুলি দিয়েছেন, তা-ও সেই দিকটিই তুলে ধরে। তবে কোনও পুরুষ কোনও মহিলাকে চেনেন মানেই তিনি মহিলাকে ধর্ষণ করার ছাড়পত্র পেয়ে যেতে পারেন না।
আদালত সূত্রে খবর, মাস দুয়েক আগে বাড়ির পিছনের খেতে নিয়ে গিয়ে পরিচিত যুবতীকে ধর্ষণের অভিযোগ ওঠে যুবকের বিরুদ্ধে। নির্যাতিতা অভিযোগ জানিয়েছেন, ঘটনার দিন তাঁর পথ আটকায় অভিযুক্ত। তাঁর সঙ্গে কথা বলতে চান। নির্যাতিতা যুবককে পাত্তা না দিলে তাঁকে জোর করে পাশের খেতে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় বলে অভিযোগ। তিনি আরও জানিয়েছেন, এই ঘটনা সামনে আসলে তাঁকে খুনের হুমকিও দেন অভিযুক্ত। পাশাপাশি জাত তুলেও খারাপ কথা বলা হয় বলে অভিযোগ।
কিন্তু নিজেকে নির্দোষ দাবি করে অভিযুক্ত আদালতে জানান, তিনি নির্যাতিতাকে আগে থেকে চিনতেন। যুবতীর সম্মতিতেই যা হওয়ার হয়েছে। সওয়াল শুনে হাইকোর্ট পর্যবেক্ষণে অভিযুক্তর আবেদন খারিজ করে দেয়।
অন্যদিকে কেন ২ মাস পরে অভিযোগ করা হল, তা নিয়েও আদালতে প্রশ্ন করেন অভিযুক্তের আইনজীবী। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট জানিয়েছে, অভিযোগ জানাতে দেরি করার জন্য এফআইআর খারিজ করা যায় না। এই প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের আগের একটি পর্যবেক্ষণের কথাও উল্লেখ করে হাইকোর্ট। সেখানে শীর্ষ আদালত জানিয়েছিল, ‘কখন এফআইআর রুজু করতে হবে, সে বিষয়ে নির্দিষ্ট কোনও সময়ের কথা আইনে উল্লেখ করা নেই। ফলে এফআইআরে দেরি হলে তা বেআইনি নয়।’