জম্মু-কাশ্মীরে তিন জন সাধারণ মানুষের হত্যাকে কেন্দ্র করে সোমবার সকাল থেকে উত্তাল হয়ে ওঠে জম্মু-কাশ্মীর বিধানসভা। বিধানসভায় একসঙ্গে উঠে দাঁড়িয়ে কাঠুয়া হত্যাকাণ্ড নিয়ে সরকার বিরোধী স্লোগান দিতে থাকেন বিজেপি বিধায়করা। বিল্লাওয়ারের বিধায়ক সতীশ শর্মা বলেন, এই হত্যাকাণ্ড ফের রাজ্যে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এই খুন নিয়ে রাজনীতি করা চলবে না। যারা এই কাজ করেছে তাদের নিকেশ করতে হবে বলে দাবি জানাতে থাকেন তিনি। তাঁর সঙ্গে যোগ দেন অন্য বিজেপি বিধায়করাও। কংগ্রেস বিধায়ক ইরফান হাফিজ বলেন, একটি শিশুকে খুন করা অমানবিক কাজ। এই ইস্যুতে প্রায় আধঘণ্টা ধরে মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লার ন্যাশনাল কনফারেন্স, মেহবুবা মুফতির পিডিপি, কংগ্রেস এবং বিজেপি সদস্যরা হৈ হট্টগোল করেন।
এদিকে নিখোঁজ তিনজন স্থানীয় মানুষের দেহ উদ্ধারের পর সোমবার সরকারি সূত্র জানা যায় নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে দুই কিশোরও। তাদের নাম মহম্মদ দিন ও রহমান আলি। রাজবাগ এলাকা থেকে তারা নিখোঁজ হয়ে যায়। পুলিশ নিখোঁজের ডায়েরি করেছে। তাদের খোঁজে উপত্যকায় তল্লাশি শুরু হয়েছে।
জম্মু-কাশ্মীর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জম্মু অঞ্চলে ফের সন্ত্রাসবাদের নতুন ঢেউ। এই সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা ও কৌশল নির্ণয় করতে রবিবার কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহন রবিবার নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মকর্তাদের সঙ্গে উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। এই বৈঠকে অংশ নেয় নিরাপত্তা বাহিনী. আধাসামরিক বাহিনী, এবং গোয়েন্দা সংস্থার শীর্ষ কর্তারা। কাঠুয়া জেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ে এই বৈঠকে আলোচনা হয়। প্রসঙ্গত, স্বরাষ্ট্র বিভাগের দায়িত্ব নেওয়ার পর এটি ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব গোবিন্দ মোহনের প্রথম কাশ্মীর সফর।
প্রসঙ্গত, জম্মু ও কাশ্মীরের কাঠুয়ায় তিন জনের মৃতদেহ উদ্ধার ঘিরে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে। কিছুদিন ধরেই নিখোঁজ ছিলেন এই তিন জন। সম্প্রতি স্থানীয় একটি নদী থেকে তাদের দেহ উদ্ধার করা হয়। মৃতদের মধ্যে একজন নাবালকও রয়েছে। একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের দাবি অনুযায়ী, তাঁরা যেখান থেকে নিখোঁজ হন, সেটি জঙ্গি অধ্যুষিত এলাকা। গোটা ঘটনার তদন্তে নামে পুলিশ।
কাঠুয়া জেলা কয়েক বছর আগে সন্ত্রাসবাদ মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু ফের এখানে জঙ্গি কার্যকলাপের ঘাঁটি হয়ে ওঠায় জনগণ এবং সরকারের মধ্যে উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ৫ মার্চ ৩২ বছরের যোগেশ সিং, ৪০ বছর বয়সের দর্শন সিং এবং ১৫ বছরের বরুণ সিং একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়ে লোহাই মলহার থেকে নিখোঁজ হয়ে যান। গত ৮ মার্চ ইশু নালা থেকে তাঁদের দেহ উদ্ধার করে নিরাপত্তা বাহিনী। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং বলেন, এই তিনজনকে জঙ্গিরা হত্যা করেছে। এর পিছনে এলাকার শান্তি নষ্ট করার গভীর চক্রান্ত রয়েছে।
লেফটেন্যান্ট গভর্নর মনোজ সিনহা এই তিন জনের হত্যাকাণ্ডের একটি পূর্ণাঙ্গ এবং স্বচ্ছ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।