• facebook
  • twitter
Monday, 15 December, 2025

হাসিনাকে ঘিরে ঢাকার অভিযোগ খারিজ করে কড়া বার্তা দিল্লির

সব মিলিয়ে শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের এই টানাপোড়েন নতুন করে কূটনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় তুলেছে।

ছবি: এএনআই

ভারতের মাটি ব্যবহার করে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে উস্কানিমূলক কার্যকলাপ চলছে— এই অভিযোগকে নস্যাৎ করে কড়া জবাব দিল দিল্লি। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের জারি করা বিবৃতির পাল্টা দিয়ে রবিবার স্পষ্ট অবস্থান জানাল ভারত সরকার। দিল্লির বক্তব্য, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষ ভারতের কাছে বন্ধুবৎসল এবং তাঁদের স্বার্থের পরিপন্থী কোনও কাজের জন্য ভারতীয় ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। কার্যত ঢাকার অভিযোগ সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করেছে দিল্লি।

প্রসঙ্গত, রবিবার ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় বর্মাকে তলব করে বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। পরে অন্তর্বর্তী সরকারের তরফে একটি বিবৃতি প্রকাশ করা হয়, যা সমাজমাধ্যমে ভাগ করে নেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ওই বিবৃতিতে দাবি করা হয়, ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিয়মিত উস্কানিমূলক মন্তব্য করছেন এবং তাঁর দলের কর্মী-সমর্থকদের সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ডে জড়াতে নির্দেশ দিচ্ছেন।

Advertisement

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতেই পাল্টা বিবৃতি দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। জানানো হয়েছে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার যে সব অভিযোগ তুলেছে, সেগুলি ভিত্তিহীন এবং ভারত সরকার তা স্পষ্টভাবে খারিজ করছে। দিল্লির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ভারত বরাবরই বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন চায় এবং এই অবস্থান আগেও একাধিকবার স্পষ্ট করা হয়েছে।

Advertisement

ভারতের বক্তব্যে আরও বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের বন্ধুবৎসল জনতার স্বার্থবিরোধী কোনও কাজের জন্য কখনওই ভারতীয় ভূখণ্ডকে ব্যবহার করতে দেওয়া হয় না। আমরা আশা করি, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার দেশের অভ্যন্তরীণ আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখবে এবং শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের জন্য প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ করবে।’

অন্যদিকে, ঢাকার বিবৃতিতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে সাজাপ্রাপ্ত শেখ হাসিনা ও বাংলাদেশের প্রাক্তন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালকে দ্রুত প্রত্যর্পণের দাবি পুনর্ব্যক্ত করা হয়েছে। বাংলাদেশের অভিযোগ, এই দুই ব্যক্তি ভারতে অবস্থান করে বাংলাদেশের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বিঘ্নিত করার চেষ্টা করছেন এবং আসন্ন নির্বাচন বানচালের উদ্দেশ্যে পরিকল্পিতভাবে উস্কানি দিচ্ছেন।

ঢাকা আরও দাবি করেছে, শরিফ ওসমান হাদীর উপর হামলার ঘটনায় যুক্ত অভিযুক্তরা যাতে বাংলাদেশ ছেড়ে ভারতে পালাতে না পারে, সে বিষয়ে ভারতের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। যদি কেউ ভারতে পালাতে সক্ষম হয়, সে ক্ষেত্রে অবিলম্বে তাঁদের গ্রেপ্তার করে বাংলাদেশের হাতে তুলে দেওয়ার আহ্বানও জানানো হয়েছে।

সব মিলিয়ে শেখ হাসিনাকে কেন্দ্র করে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের এই টানাপোড়েন নতুন করে কূটনৈতিক মহলে আলোচনার ঝড় তুলেছে। আগামী দিনে এই বিষয়ে দুই দেশের অবস্থান কোন দিকে গড়ায়, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সেদিকেই নজর।

Advertisement