• facebook
  • twitter
Friday, 5 December, 2025

সিন্ধু জল চুক্তি বাতিলের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা করে পাকিস্তানকে চিঠি পাঠাল ভারত

পহেলগামে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার পর কড়া পদক্ষেপ করল ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা করেছে ভারত।

পহেলগামে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার পর কড়া পদক্ষেপ করল ভারত। পাকিস্তানের সঙ্গে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি তাৎক্ষণিকভাবে স্থগিত করার ঘোষণা করেছে ভারত। পহেলগাম হামলার পরই ভারত ঘোষণা করেছিল পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু জল বণ্টন চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের কথা। ভারত এমন সিদ্ধান্ত নিলে তা ‘যুদ্ধ’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে বলে ভারতকে পাল্টা হুঁশিয়ারি দিয়েছিল পাকিস্তান।পাকিস্তান জানিয়েছিল, এক্ষেত্রে শিমলা চুক্তি-সহ একাধিক চুক্তি স্থগিত ও বাণিজ্যও বন্ধ করা হবে। এবার আনুষ্ঠানিক ভাবে পাকিস্তানকে সিন্ধু জল চুক্তি আপাতত স্থগিতের কথা জানিয়ে দিল ভারত।

ভারতের জল শক্তি মন্ত্রকের সচিব দেবশ্রী মুখোপাধ‍্যায় কূটনৈতিক পদক্ষেপের কথা জানিয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন পাকিস্তানের জল সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী সৈয়দ আলি মুর্তজাকে। চিঠিতে লেখা হয়েছে, ‘বিশ্বাসযোগ্যতার সঙ্গে একটি চুক্তিকে সম্মান করা একটি চুক্তির মৌলিক বিষয়। তবে, এর পরিবর্তে আমরা যা দেখেছি তা হল, ভারতের কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল জম্মু ও কাশ্মীরকে লক্ষ্য করে পাকিস্তানের  আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাসবাদ অব্যাহত। নিরাপত্তার এই অনিশ্চয়তা চুক্তির অধিকারের ক্ষেত্রে ভারতের অধিকারে সরাসরি বাধা সৃষ্টি করেছে। চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন ছাড়াও, পাকিস্তান চুক্তি পুনর্বিবেচনা করার অনুরোধে কোন উত্তর না দিয়ে এই চুক্তির লঙ্ঘন করেছে। তাই ভারত সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে ১৯৬০ সালের সিন্ধু জল চুক্তি অবিলম্বে স্থগিত করা হচ্ছে।’ বৃহস্পতিবার রাতে পাকিস্তানকে চিঠি পাঠিয়ে ভারত এই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ভাবে তার মতামত জানিয়ে দিয়েছে।

Advertisement

পহেলগামে জঙ্গি হামলার ঘটনায় ভারত সরকারের পাকিস্তানের বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে ভারতের জিরো টলারেন্সের বার্তা আরও জোরালো করেছে বলে মনে করছে কূটনৈতিক মহল। এই সিদ্ধান্ত দক্ষিণ এশিয়ার কূটনীতিতেও বড় ধাক্কা বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। ভারত বারবার বলে এসেছে— সন্ত্রাস ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান-এই দুই একসঙ্গে চলতে পারে না। এবার সেই বার্তাকে আরও একধাপ বাস্তব রূপ দিল ভারত।

Advertisement

বিশেষজ্ঞদের মতে, চুক্তি স্থগিত হওয়ায় পাকিস্তানের চাষাবাদ, পানীয় জল ও বিদ্যুৎ উৎপাদন—সব কিছুতেই এই চুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে পারে।সিন্ধু, ঝিলাম এবং চেনাব নদীর উপর পাকিস্তান অনেকটাই নির্ভরশীল। এখন এই চুক্তি বাতিলের ঘোষণায় পাকিস্তানে ব্যাপক জলসঙ্কটও দেখা দিতে পারে।

পহেলগামের ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলার পর শুক্রবার  সেনাপ্রধান জেনারেল উপেন্দ্র দ্বিবেদী কাশ্মীরে পৌঁছেছেন। সেনা সূত্রে জানা গেছে, তাঁর সঙ্গে রয়েছেন উত্তরাঞ্চলীয় কমান্ডের সেনা কমান্ডার লেফটেন্যান্ট জেনারেল এমভি সুচিন্দ্র কুমার। সফর চলাকালীন সেনা প্রধান কাশ্মীরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি, সন্ত্রাস দমন অভিযান এবং সাম্প্রতিক হামলার প্রেক্ষিতে গৃহীত পদক্ষেপ নিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করবেন। এ বিষয়ে এক সেনা কর্তা বলেন, ‘কাশ্মীরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি বজায় রাখতে সেনাপ্রধান নির্দেশ দিচ্ছেন। এই পদক্ষেপ বাহিনীর মনোবল বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে।’

Advertisement