দিল্লির ভয়াবহ বিস্ফোরণে মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ১২। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। এই হামলার ঘটনায় গাড়ির বর্তমান মালিক তথা সম্ভাব্য চালক পুলওয়ামার চিকিৎসক উমর মহম্মদের ডিএনএ তাঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিয়ে দেখতে চাইছেন তদন্তকারীরা। আর সেই কারণেই পুলওয়ামায় উমরের মাকে ডেকে পাঠিয়েছেন তদন্তকারীরা। ঘটনাস্থল থেকে পাওয়া ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন দেহের অংশ শনাক্ত করতে উমরের মায়ের ডিএনএ সংগ্রহ করা হবে। নমুনার সঙ্গে মিলিয়ে নিশ্চিত করা হবে যে, বিস্ফোরণে ব্যবহৃত আই-২০ গাড়িটিতে উমরই ছিলেন কিনা।
এই হামলার ঘটনা আত্মঘাতী হামলা কিনা তা যেমন খতিয়ে দেখা হচ্ছে, তেনমই তদন্তের স্বার্থে বিস্ফোরণে জড়িত গাড়িটির কেনাবেচার সঙ্গে যুক্ত থাকার সন্দেহে ৩ জনকে আটক করা হয়েছে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। পাশাপাশি, উমরের কোয়েল গ্রামের বাড়িতে গিয়ে উমরের বাবা গুলাম নবি ভাটকেও আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ।
Advertisement
অন্যদিকে, ফরিদাবাদে ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধারের ঘটনায় শাহিন শাহিদ নামে লখনউয়ের এক মহিলা চিকিৎসককেও গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। পুলিশের দাবি, জইশ-ই-মহম্মদের মহিলা ব্রিগেড তৈরির দায়িত্বে ছিলেন ওই মহিলা চিকিৎসক।
Advertisement
প্রাথমিকভাবে তদন্তকারীদের অনুমান, বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন সন্দেহভাজন আত্মঘাতী হামলাকারী কাশ্মীরের এক চিকিৎসক, যাঁকে উমর মহম্মদ বলে শনাক্ত করেছেন গোয়েন্দারা। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পুলওয়ামার কোয়েল গ্রামের বাসিন্দা উমর। তদন্তের সঙ্গে যুক্ত পুলিশের এক আধিকারিক এক সংবাদ সংস্থাকে জানিয়েছেন, ‘বিস্ফোরণস্থল থেকে পাওয়া দেহের অংশের সঙ্গে উমরের মায়ের ডিএনএ-র মিল রয়েছে কিনা তা দেখার জন্য আমরা তাঁকে নিয়ে এসেছি। তাঁর নমুনা সংগ্রহ করে তা মিলিয়ে দেখা হবে।’ উমরের দুই ভাই তাঁদের মাকে পুলওয়ামার একটি হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছেন। তবে সূত্রের খবর, চিকিৎসক উমরের নাম এই বিস্ফোরণের ঘটনায় উঠে আসায় হতবাক গিয়েছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা।
গোয়েন্দা আধিকারিকদের একাংশের দাবি, উমর পাকিস্তানি জঙ্গিগোষ্ঠী জইশ-ই-মহম্মদের সঙ্গে যুক্ত। তাঁরা এও দাবি করেছেন যে, বেশ কয়েকজন সহযোগীকে উত্তরপ্রদেশ, কাশ্মীর, এবং ফরিদাবাদে গ্রেপ্তার করার পর উমর এই বিস্ফোরণ ঘটান। গোয়েন্দা সূত্রে আরও খবর, পাক জঙ্গি সংগঠনগুলি গত কয়েক মাস ধরে ভারতে সন্ত্রাসবাদী হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে এসেছে। গত একমাসে দেশজুড়ে বেশ কয়েকজন সন্দেহভাজন জঙ্গিকে গ্রেপ্তারও করা হয়।
এদিকে মঙ্গলবার থেকে হরিয়ানার ফরিদাবাদেও নিরাপত্তা বাড়ানো হয়েছে। সেখানে যে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক চিকিৎসকের ঘর থেকে ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক উদ্ধার করা হয়, সেই বিশ্ববিদ্যালয়ে আস্তানা গেড়েছে পুলিশবাহিনী। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মী এবং অধ্যাপকদের। ধৌজ থানা এলাকায় চলছে জোরদার তল্লাশি। প্রসঙ্গত, সোমবার সকালে সেখান থেকে বোমা তৈরির উপকরণ, অস্ত্রশস্ত্র উদ্ধারের পরই সন্ধেয় দিল্লির লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে।
এদিকে পুলিশের অনুমান, ফরিদাবাদে গ্রেপ্তার শাহিন শাহিদ জইশ-ই-মহম্মদের সঙ্গে যুক্ত। অপারেশন সিঁদুর-এ জইশ শিবিরে ভাঙন ধরিয়েছিল ভারতীয় সেনা। মৃত্যু হয়েছিল মাসুদ আজাহারের পরিবারের ১১ জন সদস্যের।
Advertisement



