• facebook
  • twitter
Thursday, 14 August, 2025

যুদ্ধবিরতি: ভারত কি ট্রাম্পের কাছে মাথা নোয়ালো? সর্বদল বৈঠকের দাবি কংগ্রেসের

'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি আগে থেকেই তুলছিল কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির। এবার সেই দাবি আরও জোরালো হল।

প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র

পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধবিরতিতে ট্রাম্পের প্রকৃত ভূমিকা কী ছিল? ভারত কি মার্কিন মধ্যস্থতা মেনে নিয়েছে? বিষয়টি দেশের সামনে স্পষ্ট করতে সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি জানাল কংগ্রেস। কংগ্রেসের সর্ব ভারতীয় সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ‘এটা স্পর্শকাতর বিষয়। এখনই কিছু বলা ঠিক হবে না। তবে সর্বদলীয় বৈঠকে আমরা সরকারকে এ নিয়ে প্রশ্ন করব।’

‘অপারেশন সিঁদুর’ নিয়ে সংসদের বিশেষ অধিবেশন ডাকার দাবি আগে থেকেই তুলছিল কংগ্রেস-সহ বিরোধী শিবির। এবার সেই দাবি আরও জোরালো হল। জোরালো হচ্ছে সর্বদল বৈঠকের দাবিও। কংগ্রেস সভাপতি তথা রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেছেন, ‘আমরা সিজফায়ার নিয়ে সর্বদল বৈঠকের দাবি জানাচ্ছি। ভারত কি মার্কিন মধ্যস্থতার দাবি মেনে নিল? ওই বৈঠক থেকেই সরকারকে প্রশ্ন করব।’ এ বিষয়ে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বলছেন, ‘আমেরিকার সঙ্গে সংঘর্ষবিরতি নিয়ে ঠিক কী আলোচনা হয়েছে ভারতের, জানতে চাইব সরকারের কাছে। কারণ এই ধরনের স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে বিরোধীদের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত সরকারের। এর আগে সরকারের সব পদক্ষেপে সঙ্গে থেকেছে বিরোধী শিবির।’

প্রসঙ্গত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প গত শনিবারও দাবি করেন, ‘আমিই ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধ থামিয়েছি। উভয় দেশের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের প্রয়োজন।’ ট্রাম্প বলেছিলেন, ‘গোটা রাত বৈঠক হয়েছে। দীর্ঘ আলোচনার পর দুই দেশই এই মুহূর্ত থেকে যুদ্ধবিরতিতে সম্পূর্ণরূপে রাজি হয়েছে। সঠিক সময়ে বাস্তবজ্ঞান কাজে লাগানোর জন্য দুই পক্ষকে শুভেচ্ছা। পরমাণু শক্তিধর দুই দেশকে চাপ দিয়ে সংঘর্ষবিরতি করেছি। যুদ্ধ না থামালে বাণিজ্যেও না, হুঁশিয়ারি দিয়েছিলাম। তাতেই কাজ হয়েছে।’

এদিকে পাকিস্তানের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে তৃতীয় পক্ষের হস্তক্ষেপের বরাবরই বিরোধিতা করে এসেছে ভারত সরকার। বিশেষ করে কাশ্মীর ইস্যুতে ভারত বরাবরই বলে আসছে, এ ব্যাপারে কোনওভাবেই তৃতীয়পক্ষের হস্তক্ষেপ মেনে নেওয়া হবে না। কিন্তু সম্প্রতি পাকিস্তানের সঙ্গে ভারতের যুদ্ধের আবহে ট্রাম্প দাবি করেন, তাঁর মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি মেনে নিয়েছে ভারত ও পাকিস্তান। সারা রাত বৈঠকের পর দু’পক্ষ সম্মত হওয়াতে পরমাণু শক্তিধর দুই দেশের মধ্যে পরমাণু যুদ্ধ থামানো গিয়েছে।

কিন্তু ট্রাম্পের এই দাবি নিয়ে মোদী সরকারের নীরবতা কংগ্রেস সহ বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলির মাথাব্যথার বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাহলে কি কেন্দ্রের মোদী সরকার ট্রাম্পের কাছে মাথা নোয়ালো? বিষয়টি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠকের দাবি জানিয়েছে বিরোধীরা। কারণ একদিকে ভারত সরকার যেমন আমেরিকার মধ্যস্থতার দাবি মানেনি, তেমনি খণ্ডনও করেনি। আবার অন্যদিকে সংঘর্ষ বিরতি ঘোষণার সময় বিদেশ সচিব বিক্রম মিসরির কথায় আমেরিকার উল্লেখ ছিল না। এমনকি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীও যুদ্ধবিরতির পর সোমবার দেশবাসীর উদ্দেশ্যে ভাষণ দেওয়ার সময় ট্রাম্পের দাবি খণ্ডন করেননি। এরপরই বিরোধী শিবিরে বিষয়টি নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে। তারা প্রশ্ন তুলছে, তাহলে কি ট্রাম্পের মধ্যস্থতা মেনে নিল কেন্দ্রের মোদী সরকার।